ধুলায় আচ্ছন্ন নগরীর বাতাস, শ্বাস প্রশ্বাসে ধুলার পরশ!

ঢাকা নগরীর মানুষের আক্রমণের সবচেয়ে বড় অস্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে ধুলা। ধুলার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে নগর জীবন। নগরের কোথাও মিলছে না ধুলা বিহীন নিঃশ্বাস নেওয়ার গ্যারান্টি ও ওয়ারেন্টি। ঢাকা নগরীর দিনের আলো ধুলায় নামিয়ে দিচ্ছে অন্ধকারের ঘনঘটা। বলতেই হয় ঢাকা নগরের মানুষের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলেছে ধুলাময়তার সংস্পর্শ।

ধুলার হাত থেকে নিজেদেরকে আত্মরক্ষা করার জন্য মানুষ বেছে নিয়েছে মাক্স, টিস্যু পেপার, রুমাল অথবা হাত। কিন্তু পরিত্রান কোথায়? নেই কোনো সদুত্তর আছে শুধু ধুলার যন্ত্রনা! গত শুক্রবারে গিয়েছিলাম রামপুরার আফতাবনগরের গেটে মনে হয়েছে, এখানে সমস্ত ঢাকার ধুলা তৈরীর কারখানা।

চিকিৎসকরা পরামর্শ দিচ্ছেন ধুলার হাত থেকে রক্ষা পেতে হবে না হলে এলার্জি, কাশি, ব্রংকাইটিস সহ অন্যান্য শ্বাসপ্রশ্বাসজনিত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া প্রায় অসম্ভব।

পরিসংখ্যানে আবার দেখা যাচ্ছে সবাইকে আমরা হারিয়েছি বায়ু দূষণে চ্যাম্পিয়নের তালিকায় নাম, যেখানে আমাদের ক্রিকেট ক্রমাগত নিচের দিকে নেমে যাচ্ছে সেখানে আমরা বিশ্বে বায়ুদূষণে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার হিনো গৌরব অর্জন করে মানুষের এক ধরনের হাসি মশকরার খোরাক যোগাচ্ছি!

ঢাকা দুই সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে পানি ছিটানোর কথা থাকলেও কোন খানে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না পানি ছিটানোর দর্শন। অন্যদিকে মেট্রোরেল সহ বিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্পের কারণে সৃষ্ট ধুলার হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য সব প্রকল্পের আওতায় নিজ দায়িত্বে পানি ছিটিয়ে ধুলা নিরাময় করার কথা থাকলেও কেউ মানছে না।

বাংলাদেশের মানুষ যখন বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত পেঁয়াজের ঝাঁজ সীমান্ত পেরিয়েছে, লবনের গুজব ছড়িয়েছে, সবজির বাজারে আগুন জ্বলছে, নিত্যপণ্যের পাগলা ঘোড়া খেপেছে, এরপরে ধুলা ঘাতক আমাদেরকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। ধুলা নিয়ন্ত্রণের জন্য কর্তৃপক্ষের কথা শুনলেও বাস্তবে এখনো দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ ঢাকা শহরের মানুষ লক্ষ্য করেছে বলে মনে হয় না।

দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বলব এই নগর সকলের। দায়িত্ব অবহেলা করলে সকলে আক্রান্ত হবে। কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে ধুলা নামক মানব ঘাতকের হাত থেকে মানুষকে পরিত্রান দিয়ে চ্যাম্পিয়ন এর হাত থেকে জাতিকে রক্ষা করুন।

লেখক: সবুর মিয়া, বেসরকারি চাকরিজীবী।

বিজনেস আওয়ার/২৭ নভেম্বর, ২০১৯/এ