রাজাকারের তালিকা প্রকাশ ১৫ ডিসেম্বর

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : বিজয়ের চার যুগ পর আগামী ১৫ ডিসেম্বর মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী রাজাকারদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করতে যাচ্ছে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়। ১৫ ডিসেম্বর সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে প্রাথমিকভাবে ৮ হাজার রাজাকারের নাম প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক।

মন্ত্রী বলেন, মুক্তিযুদ্ধের সময় থানা ও রাষ্ট্রীয় কোষাগার থেকে বেতন ভাতা উত্তোলনকারী রাজাকারদের তালিকা সংরক্ষণ এবং তাদের তালিকা মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের জন্য গত ২১ মে সব জেলা প্রশাসককে চিঠি দেওয়া হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও বিভিন্ন জেলা থেকে প্রাপ্ত নাম যাচাই-বাছাই করে ৮ হাজার রাজাকারের নাম চূড়ান্ত করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ১১ হাজার রাজাকারের নাম পাওয়া গেছে। এগুলো মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। গণহত্যাসহ মুক্তিযুদ্ধবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে এসব রাজাকারের বিরুদ্ধে ১৯৭২ সালে গঠিত বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা ছিল। সে সময় তারা বিভিন্ন থানা থেকে মাসোহারা পেত।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বিশেষ ট্রাইব্যুনালে মামলা ছিল এমন রাজাকারের সংখ্যা প্রায় ৫৫ হাজার। এগুলোর অনুসন্ধান চলছে। কারণ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মন্ত্রণালয়ের এ সংক্রান্ত নথিপত্র ধ্বংস করা হয়েছে।

জেলা প্রশাসকদের প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, মেহেরপুর জেলায় ১৬৯ জন, চাঁদপুরে ৯ জন, শরীয়তপুরে ৪৪ জন, বাগেরহাটে এক জন ও নড়াইলে ৫০ জন রাজাকারের নাম পাওয়া গেছে। তবে যশোরের শার্শা উপজেলা, গাইবান্ধা, শেরপুর, মাগুরা ও খাগড়াছড়ি জেলায় কোনো রাজাকার নেই।

ওয়ার ক্রাইমস ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির ট্রুথ কমিশন ফর জেনোসাইড ইন বাংলাদেশ গ্রন্থ থেকে জানা যায়, মাগুরা জেলায় রাজাকারের সংখ্যা ২১ জন, ঢাকা জেলায় চার জন, গাজীপুর জেলায় সাত, টাঙ্গাইল জেলায় ১৪ জন, ময়মনসিংহ জেলার সদর উপজেলায় ১৮ জন, নান্দাইল উপজেলায় ১১ জন, ফুলপুর ও হালুয়াঘাট উপজেলায় ৪৩ জন, গফরগাঁও উপজেলায় ১৫ জন, মুক্তাগাছা উপজেলায় ২০, ফুলবাড়িয়া উপজেলায় ৪০ জন, ত্রিশালে ৪৩ জন, ভালুকায় ১৯ জন, শেরপুর সদরে ৩১ জন, নালিতাবাড়ী উপজেলায় ৪৯ জন, জামালপুর সদরে ১১ জন, নেত্রকোনা সদরে ১৩ জন, আটপাড়ায় সাত জন, বারহাট্টায় ১১ জন, কলমাকান্দায় আট জন, পূর্বধলায় সাত জন, কেন্দুয়ায় ১০ জন, মোহনগঞ্জ উপজেলায় ২৪ জন, দুর্গাপুরে ১৬ জন, মদনে সাত জন, কিশোরগঞ্জ জেলায় ৩১ জন, গাজীপুর জেলায় সাত জন, ফরিদপুর জেলায় ১৭ জন, মাদারীপুর জেলায় ১৪ জন, শরীয়তপুর জেলায় এক জন, গোপালগঞ্জ জেলায় সাত জন, রাজশাহী জেলায় ১৪ জন, পাবনা জেলায় তিন জন, সিরাজগঞ্জ জেলায় আট জন, বগুড়া জেলায় ১৪ জন, নওগাঁ জেলায় চার জন, নাটোর জেলায় ছয় জন, কুড়িগ্রাম জেলায় এক জন, দিনাজপুর জেলায় ২৮ জন, ঠাকুরগাঁও জেলায় চার জন, লালমনিরহাট জেলায় সাত জন, মাগুরা জেলায় ১৮ জন, ঝিনাইদহ জেলায় তিন জন, মেহেরপুর জেলায় তিন জন, যশোর জেলায় চার জন, বাগেরহাট জেলায় ৯ জন, বরিশাল জেলায় এক জন, পটুয়াখালী জেলায় তিন জন, পিরোজপুর জেলায় ১৮ জন, বরগুনা জেলায় ১১ জন, ঝালকাঠি জেলায় চার জন, মৌলভীবাজার জেলায় তিন জন, সিলেট জেলায় পাঁচ জন, সুনামগঞ্জ জেলায় ১৩ জন, নোয়াখালী জেলায় তিন জন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় এক জন।

বিজনেস আওয়ার/০৩ ডিসেম্বর, ২০১৯/এ