বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মায়ের বুকের দুধ পান শুধু শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়, একইসঙ্গে মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। যে কোন ধরণের ইনফেকশন, ডাইরিয়া এবং বমি ভাব বন্ধ করার ক্ষেত্রে মায়ের দুধ ভালো রক্ষাকবচের কাজ করে। পরবর্তী জীবনে স্থূলতাসহ অন্যান্য রোগ প্রতিরোধ করতে সহায়তা করে। আর মায়ের জন্য স্তন এবং ওভারির ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়।
মঙ্গলবার (০৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সেন্টারে মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহ উপলক্ষে ‘কর্মরত পিতামাতাদের সমর্থন করার জন্য কর্মক্ষেত্রে স্তন্যপান সুরক্ষা, প্রচার এবং সমর্থনে সক্ষম পরিবেশ তৈরি করা’ বিষয়ক এক সেমিনারে এ কথা বলা হয়েছে।
কর্মক্ষেত্রে মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি ও সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে এবং মায়ের দুধ খাওয়ানোর চর্চা বাড়াতে কর্মজীবী মায়েদের সহায়তা করার জন্য সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে জাতীয় পুষ্টি সেবা (এনএনএস), এমওএইচএফডব্লিউ ইউনিসেফ-বাংলাদেশ যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।
সেমিনারে বলা হয়, মায়ের দুধ পান করানো; শিশুদের বৃদ্ধি ও বিকাশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর একটি, যা শুধু শিশুর স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নয়, একইসঙ্গে মায়ের স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী। নবজাতক ও ছোট শিশুদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা এবং মৃত্যুহার কমানোর ক্ষেত্রে মায়ের দুধ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। শিশুদের জীবনের প্রথম ছয় মাসে তাদের সব পুষ্টির চাহিদা মেটাতে মায়ের দুধ হচ্ছে সর্বোত্তম উৎস।
এতে বলা হয়, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে মায়ের দুধ খাওয়ানো হলে তা নবজাতকের মৃত্যু ২২ শতাংশ পর্যন্ত ঠেকাতে পারে। সব শিশুকে ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের দুধ খাওয়ানোর আওতায় আনা গেলে, মধ্যম ও নিম্ন-আয়ের পরিবারগুলোতে পাঁচ বছরের কম বয়সী যত শিশুর মৃত্যু হয়, তা ১৩-১৫ শতাংশ পর্যন্ত ঠেকাতে পারে।
তবে সরকারের প্রচেষ্টা সত্ত্বেও বাংলাদেশে জন্মের শুরু থেকে মায়ের দুধ খাওয়ানোর চর্চা এবং প্রথম ছয় মাস পর্যন্ত এককভাবে শুধু মাত্র মায়ের দুধ খাওয়ানোর হার এখনও সন্তোষজনক নয়। সারা দেশে, মায়েদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি এখনও এই চর্চার বাইরে। কর্মজীবী মায়েদের ক্ষেত্রে এটি বেশি প্রযোজ্য। বাংলাদেশে শিশুদের মায়ের দুধ খাওয়ানোর চর্চা বাড়াতে কর্মজীবী বাবা-মায়েদের সহায়তা করার জন্য কর্মক্ষেত্রে পরিবেশ তৈরি করা গুরুত্বপূর্ণ।
২০২৩ সালে বিশ্ব মাতৃদুগ্ধ সপ্তাহের প্রতিপাদ্য হচ্ছে কর্মজীবী মা-বাবার সহায়ক পরিবেশ গড়ি, মাতৃদুগ্ধ পান নিশ্চিত করি।
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মো. খুরশিদ আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. সামিউল আলম, ইউনিসেফের পুষ্টি বিভাগের প্রধান দীপিকা মেহরিশ শর্মা, বিকেএমইএ পরিচালক ইমরান কাদের তুর্য প্রমুখ।
বিজনেস আওয়ার/০৮ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ