বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করতে ভেকটর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) প্রতিষ্ঠায় ব্যবস্থা নিতে বলেছেন হাইকোর্ট। যা বাস্তবায়ন করবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়।
রোববার (১৩ আগস্ট) বিচারপতি জেবিএম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ৩ মার্চ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব থেকে সুরক্ষায় প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন আইনজীবী তানভীর আহমেদ। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০১৯ সালের ১২ মার্চ হাইকোর্ট রুল দেন।
আইনজীবী তানভীর আহমেদ জানান, আদালতের আহ্বানে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের শিক্ষক কবিরুল বাশার সুপারিশসহ বিশেষজ্ঞ মতামত দিয়েছেন। আজ মামলাটি নিষ্পত্তি করে সুপারিশগুলো বাস্তবায়নের জন্য সিভিল এভিয়েশন এবং সিটি করপোরশনকে নির্দেশ দিয়েছেন। দীর্ঘমেয়াদিভাবে ভেকটর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) এর মতো একটি সেন্টার করতে সরকারকে বলেছেন।
এর মধ্যে বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে খবর-প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে সেসব খবর-প্রতিবেদন যুক্ত করে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সম্পূরক আবেদন করেন আইনজীবী তানভীর। এ আবেদনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপের নির্দেশনা চাওয়া হয়। পরে গত বছরের ২০ ফেব্রুয়ারি আদালত হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে মশার উপদ্রব নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নিতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ও বেবিচককে নির্দেশ দেন। বেবিচকের চেয়ারম্যানকে ১০ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়। এ নির্দেশনার পর সিটি করপোরেশন ও বেবিচক একাধিকবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে।
গত ৬ মার্চ সেসব প্রতিবেদন আদালতে তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা। সে ধারাবাহিকতায় গত ১৩ মার্চ আদালত কবিরুল বাশারসহ তিনজনের মতামত জানতে তাদের আদালতে ডেকেছিলেন।
সে অনুসারে কবিরুল বাশার আদালতে বিমানবন্দর এলাকার চারপাশে চার কিলোমিটার এলাকা মশামুক্ত রাখা নিয়ে ‘আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য প্রবিধান’র বিভিন্ন বিধি ও ৮টি সুপারিশ প্রতিবেদনে তুলে ধরেন।
কবিরুল বাশারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও মশা ও মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি জাতীয় প্রতিষ্ঠান তৈরি করা অত্যন্ত প্রয়োজন।
প্রতিবেশী দেশ ভারতে ১৯৭৫ সালে ভেকটর কন্ট্রোল রিসার্চ সেন্টার (ভিসিআরসি) প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি অত্যন্ত আধুনিক ও যুগোপযোগী। বাংলাদেশে এমন একটি প্রতিষ্ঠান তৈরি হলে বাহক বাহিত রোগ ও বাহক মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কীটনাশক, যন্ত্রপাতি এবং এর রোগতত্ত্ব নিয়ে গবেষণা করা যাবে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, শুধুমাত্র প্রতিষ্ঠান তৈরি করলেই হবে না, এই প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দিতে হবে কীটতত্ত্ববিদদের হাতে। প্রতিষ্ঠানটির নেতৃত্ব অভিজ্ঞদের হাতে না দিলে তা অকার্যকর প্রতিষ্ঠানে রূপ নিবে।
এই প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতেই আজ রিট খারিজ করে রিসার্চ সেন্টার করার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।
বিজনেস আওয়ার/১৩ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ