ঢাকা , শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারী ২০২৫, ১৮ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে হত্যা-গুমের সংস্কৃতি শুরু

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩
  • 99

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর হত্যা-গুমের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, একই সাথে বিনাবিচারে আটক হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং সিএমএসএফের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ২১ বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে এই সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি।

গতকাল রবিবার ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) মতিঝিলে নিজস্ব অফিসে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ।

দোয়া মাহফিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার নিহত পরিবারবর্গের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি নিহতদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। আলোচনার শুরুতে দেশ ও মানুষের লক্ষে বঙ্গবন্ধু হৃদয় স্পর্শ কর্ম ও তার ত্যাগ তুলে ধরেন সভার আহবায়ক ও সিএমএসএফের সদস্য এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যা-গুমের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, এক গবেষণায় এমন তথ্য ওঠে এসেছে জানিয়ে মো. নজিবুর রহমান বলেন, ওই গবেষণায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের কতটা অধ:পতন হয়েছে, তারই আট কারন তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথমে সামরিক হস্তক্ষেপ ও তাদের অশুভ তৎপরতা শুরু হয়। এতে করে তাদের ভিতরে অন্তকন্দল তৈরি হয়। এরপর (দ্বিতীয়) বাংলাদেশের চারটি মূল্য ভিত্তির ওপরে আঘাত হানে। এগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায়। পরে (তৃতীত) রাজনীতিতে হত্যা, গুম এবং বিনাবিচারে আটক শুরু হয়।

চতুর্থে রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন আসে। এক্ষেত্রে প্রথমে লেজুরভিত্তিক, পরে আত্মকেন্দ্রিক রাজনীতি চালু হয়। পঞ্চমে আইনের শাসনে পথ রুগ্ন হয়ে পড়ে, আইনের প্রতিষ্ঠাতার ওপরে ক্ষরা নেমে আসে। ষষ্ঠে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার শুরু হয়ে পড়ে। সপ্তমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়ে পড়ে। অষ্টমে রাজনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এসব অনিয়মে দেশ পথ হারিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসেন। পরে তারই নেতৃত্বে এসব সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। তারই নিদেশনায় উন্নয়নের পথ ফিরে পাই। নিরলসভাবে কাজ করে আমরা একের পর এক অর্জন করছি। দেশ অনেক এগিয়েছি। আরো এগিয়ে যাবে। জানি সামনের চলার পথ মসৃন নয়। আমাদের অনেক কিছু করার আছে। যে গতিতে এগিয়ে এসেছি, আশা করছি ২০৪১ সালে স্মাট বাংলাদেশ গড়তে পারবো।

অনুষ্ঠানে সিএমএসএফ, ব্যবস্থাপনা কমিটির, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি),ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন ।

উল্লেখ্য ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। এছাড়া তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন। নিহত হন বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু পুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধু সুলতানা কামাল, পুত্রবধু রোজী কামাল, ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি, শেখ ফজলুল হক মণির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, কর্নেল জামিলউদ্দীন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।

বিজনেস আওয়ার/১৪ আগস্ট, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশে হত্যা-গুমের সংস্কৃতি শুরু

পোস্ট হয়েছে : ০২:০৯ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : জাতির জনক ও সর্বকালের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর হত্যা-গুমের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, একই সাথে বিনাবিচারে আটক হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং সিএমএসএফের চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান। আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যার ২১ বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মাধ্যমে এই সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি।

গতকাল রবিবার ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের (সিএমএসএফ) মতিঝিলে নিজস্ব অফিসে স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি বঙ্গবন্ধুর ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি হিসেবে ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান আহমদ।

দোয়া মাহফিলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার নিহত পরিবারবর্গের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পাশাপাশি নিহতদের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়। আলোচনার শুরুতে দেশ ও মানুষের লক্ষে বঙ্গবন্ধু হৃদয় স্পর্শ কর্ম ও তার ত্যাগ তুলে ধরেন সভার আহবায়ক ও সিএমএসএফের সদস্য এ কে এম নুরুল ফজল বুলবুল।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর হত্যা-গুমের সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে, এক গবেষণায় এমন তথ্য ওঠে এসেছে জানিয়ে মো. নজিবুর রহমান বলেন, ওই গবেষণায় বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশের কতটা অধ:পতন হয়েছে, তারই আট কারন তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর প্রথমে সামরিক হস্তক্ষেপ ও তাদের অশুভ তৎপরতা শুরু হয়। এতে করে তাদের ভিতরে অন্তকন্দল তৈরি হয়। এরপর (দ্বিতীয়) বাংলাদেশের চারটি মূল্য ভিত্তির ওপরে আঘাত হানে। এগুলো হলো জাতীয়তাবাদ, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতায়। পরে (তৃতীত) রাজনীতিতে হত্যা, গুম এবং বিনাবিচারে আটক শুরু হয়।

চতুর্থে রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন আসে। এক্ষেত্রে প্রথমে লেজুরভিত্তিক, পরে আত্মকেন্দ্রিক রাজনীতি চালু হয়। পঞ্চমে আইনের শাসনে পথ রুগ্ন হয়ে পড়ে, আইনের প্রতিষ্ঠাতার ওপরে ক্ষরা নেমে আসে। ষষ্ঠে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার শুরু হয়ে পড়ে। সপ্তমে বিচারহীনতার সংস্কৃতি তৈরি হয়ে পড়ে। অষ্টমে রাজনৈতিক ও সামাজিক অগ্রগতির বাধাগ্রস্থ হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর এসব অনিয়মে দেশ পথ হারিয়ে ফেলেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার ২১ বছর পর তারই সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনা দেশের প্রধানমন্ত্রী হয়ে আসেন। পরে তারই নেতৃত্বে এসব সংস্কৃতি থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি। তারই নিদেশনায় উন্নয়নের পথ ফিরে পাই। নিরলসভাবে কাজ করে আমরা একের পর এক অর্জন করছি। দেশ অনেক এগিয়েছি। আরো এগিয়ে যাবে। জানি সামনের চলার পথ মসৃন নয়। আমাদের অনেক কিছু করার আছে। যে গতিতে এগিয়ে এসেছি, আশা করছি ২০৪১ সালে স্মাট বাংলাদেশ গড়তে পারবো।

অনুষ্ঠানে সিএমএসএফ, ব্যবস্থাপনা কমিটির, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি),ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই), চট্রগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ (সিএসই), সেন্ট্রাল ডিপোজিটরি বাংলাদেশ লিমিটেডের (সিডিবিএল) বিশিষ্ট ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন ।

উল্লেখ্য ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধানমণ্ডির ৩২ নম্বরের নিজ বাসায় সেনাবাহিনীর কতিপয় বিপথগামী সেনাসদস্যের হাতে সপরিবারে নিহত হন। সেদিন তিনি ছাড়াও নিহত হন তার স্ত্রী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা মুজিব। এছাড়া তাদের পরিবারের সদস্য ও আত্মীয়স্বজনসহ নিহত হন আরো ১৬ জন। নিহত হন বঙ্গবন্ধুর ছেলে শেখ কামাল, শেখ জামাল, শিশু পুত্র শেখ রাসেল, পুত্রবধু সুলতানা কামাল, পুত্রবধু রোজী কামাল, ভাই শেখ আবু নাসের, ভগ্নিপতি আব্দুর রব সেরনিয়াবাত, ভাগনে শেখ ফজলুল হক মণি, শেখ ফজলুল হক মণির অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী বেগম আরজু মণি, কর্নেল জামিলউদ্দীন। দেশের বাইরে থাকায় বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর বড় মেয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার ছোট মেয়ে শেখ রেহানা।

বিজনেস আওয়ার/১৪ আগস্ট, ২০২৩/এমএজেড

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: