ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে যা বললেন মমতাজ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩
  • 86

বিনোদন ডেস্ক: টাকা নিয়েও অনুষ্ঠান করতে না আসায় বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের নারী সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

১৫ বছর আগের এই মামলায় এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন মমতাজ।

মমতাজ জানালেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই গ্রেফতারি পরোয়ানাকে সেই ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও মত দেন তিনি।

বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন এই সংগীত তারকা। তিনি লেখেন, আমার প্রিয় এলাকাবাসী ও সারাদেশে আমার গানের ভক্ত আশেকান এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষী যারা রয়েছেন। তারা কয়দিন যাবত একটা নিউজ এর পরিপ্রেক্ষিতে খুব মন খারাপ করে আছেন এবং এটার সত্যতা কতটুকু জানতে চাচ্ছেন। আমি বিদেশ ছিলাম, ১৪ আগস্ট দেশে ফিরেই ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবস নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় কাটাই বলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়ে উঠেনি।’

মামলার সত্যতা স্বীকার করে এই গায়িকা লেখেন, ‘হ্যাঁ, এই কথা সত্য যে বেশ অনেক বছর আগে ভারতের বহরমপুর কোর্টে আমার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি একটা মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করেন। যার মূল উদ্দেশ্যে ছিল আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়া আর ওই ব্যক্তি ছাড়া আমি যেন কারো মাধ্যমে ভারতে কোনো কনসার্ট করতে না পারি। কোনো ডকুমেন্ট ছাড়া ১৪ লাখ টাকা নেওয়ার একটি মিথ্যা মামলা উনি সাজিয়েছেন। যার কোনো প্রমাণ এই ১৪-১৫ বছরে কোর্টে দাখিল করতে পারেনি।’

মমতাজের ভাষ্য, ‘এই বছর আমি ২ বার কোর্টে হাজির হই কিন্তু দুঃখের বিষয় মামলার বাদী ২ বারই অসুস্থ বলে কোর্টে অনুপস্থিত থাকেন। তার মূল উদ্দেশ্য হলো আমাকে হয়রানি করা। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দ্রুত এই মামলাটি যাতে শেষ হয় বিজ্ঞ আদালতকে অনুরোধ করি। কিন্তু আদালত শেষ যে তারিখটি দিয়েছিল ওই সময় আমার আগে থেকেই কানাডাতে একটা প্রোগ্রাম নেওয়া ছিল। যে কারণে আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে আমি আদালতকে এই বিষয়ে অবহিত করি এবং পরবর্তীতে একটা সময় চাইলে বিজ্ঞ আদালত সেটা গ্রহণ করে আমাকে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ পুনরায় ডেট দেন।’

সুষ্ঠু সমাধানের প্রত্যাশা রেখে এই পপ তারকা লেখেন, ‘আশা করি আমি ৮ তারিখে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত একটা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পরবর্তী কী করণীয় তা জানতে পারব। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আপনারা সবাই আমার ওপর আল্লাহর ওয়াস্তে এই আস্থা বিশ্বাস রাখবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন কারো ক্ষতি না করি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।’

জানা গেছে, প্রায় চৌদ্দ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজারের সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয় এই সংগীতশিল্পীর। সেই মতো ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা।

তবে অভিযোগ, টাকা নেয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি গায়িকা। যথারীতি অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুর হয়। চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয় অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে। পরে টাকা ফেরত দিতেও অস্বীকার করেন মমতাজ। এরপর চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তি। কিন্তু থানা অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এরপর বাধ্য হয়ে বহরমপুর আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/১৬ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে যা বললেন মমতাজ

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ অগাস্ট ২০২৩

বিনোদন ডেস্ক: টাকা নিয়েও অনুষ্ঠান করতে না আসায় বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণাসহ একাধিক মামলায় বাংলাদেশের ক্ষমতাসীন দল আ.লীগের নারী সংসদ সদস্য ও জনপ্রিয় গায়িকা মমতাজ বেগমের বিরুদ্ধে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বহরমপুর আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

১৫ বছর আগের এই মামলায় এ নিয়ে চতুর্থবার গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হলো। এবার বিষয়টি নিয়ে মুখ খুললেন মমতাজ।

মমতাজ জানালেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে তার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। এই গ্রেফতারি পরোয়ানাকে সেই ষড়যন্ত্রের অংশ বলেও মত দেন তিনি।

বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি স্ট্যাটাস দেন এই সংগীত তারকা। তিনি লেখেন, আমার প্রিয় এলাকাবাসী ও সারাদেশে আমার গানের ভক্ত আশেকান এবং আমার শুভাকাঙ্ক্ষী যারা রয়েছেন। তারা কয়দিন যাবত একটা নিউজ এর পরিপ্রেক্ষিতে খুব মন খারাপ করে আছেন এবং এটার সত্যতা কতটুকু জানতে চাচ্ছেন। আমি বিদেশ ছিলাম, ১৪ আগস্ট দেশে ফিরেই ১৫ আগস্টের জাতীয় শোক দিবস নিয়ে খুব ব্যস্ত সময় কাটাই বলে বিষয়টি নিয়ে কথা বলার সুযোগ হয়ে উঠেনি।’

মামলার সত্যতা স্বীকার করে এই গায়িকা লেখেন, ‘হ্যাঁ, এই কথা সত্য যে বেশ অনেক বছর আগে ভারতের বহরমপুর কোর্টে আমার বিরুদ্ধে এক ব্যক্তি একটা মিথ্যা বানোয়াট মামলা দায়ের করেন। যার মূল উদ্দেশ্যে ছিল আমাকে ভয় দেখিয়ে কিছু টাকা হাতিয়ে নেওয়া আর ওই ব্যক্তি ছাড়া আমি যেন কারো মাধ্যমে ভারতে কোনো কনসার্ট করতে না পারি। কোনো ডকুমেন্ট ছাড়া ১৪ লাখ টাকা নেওয়ার একটি মিথ্যা মামলা উনি সাজিয়েছেন। যার কোনো প্রমাণ এই ১৪-১৫ বছরে কোর্টে দাখিল করতে পারেনি।’

মমতাজের ভাষ্য, ‘এই বছর আমি ২ বার কোর্টে হাজির হই কিন্তু দুঃখের বিষয় মামলার বাদী ২ বারই অসুস্থ বলে কোর্টে অনুপস্থিত থাকেন। তার মূল উদ্দেশ্য হলো আমাকে হয়রানি করা। আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে দ্রুত এই মামলাটি যাতে শেষ হয় বিজ্ঞ আদালতকে অনুরোধ করি। কিন্তু আদালত শেষ যে তারিখটি দিয়েছিল ওই সময় আমার আগে থেকেই কানাডাতে একটা প্রোগ্রাম নেওয়া ছিল। যে কারণে আমি উপস্থিত থাকতে পারিনি। তবে আমি আদালতকে এই বিষয়ে অবহিত করি এবং পরবর্তীতে একটা সময় চাইলে বিজ্ঞ আদালত সেটা গ্রহণ করে আমাকে সেপ্টেম্বরের ৮ তারিখ পুনরায় ডেট দেন।’

সুষ্ঠু সমাধানের প্রত্যাশা রেখে এই পপ তারকা লেখেন, ‘আশা করি আমি ৮ তারিখে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত একটা সিদ্ধান্ত নেবেন এবং পরবর্তী কী করণীয় তা জানতে পারব। জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে আমার বিরুদ্ধে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। আপনারা সবাই আমার ওপর আল্লাহর ওয়াস্তে এই আস্থা বিশ্বাস রাখবেন এবং আমার জন্য দোয়া করবেন আমি যেন কারো ক্ষতি না করি। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।’

জানা গেছে, প্রায় চৌদ্দ বছর আগে পশ্চিমবঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত অংশ নিতেন মমতাজ। ২০০৪ সাল থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন অনুষ্ঠানে গান গাওয়ার জন্য সেখানকার শক্তিশঙ্কর বাগচী নামে এক ইভেন্ট অর্গানাইজারের সঙ্গে লিখিত চুক্তি হয় এই সংগীতশিল্পীর। সেই মতো ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে বহরমপুরের একটি অনুষ্ঠানে প্রধান শিল্পী হিসেবে মমতাজকে প্রায় ১৪ লাখ রুপির বিনিময়ে বায়না করেছিলেন উদ্যোক্তারা।

তবে অভিযোগ, টাকা নেয়ার পরও অনুষ্ঠানে হাজির হননি গায়িকা। যথারীতি অনুষ্ঠানস্থলে ভাঙচুর হয়। চরম হেনস্তার মুখে পড়তে হয় অনুষ্ঠানের আয়োজক শক্তিশঙ্কর বাগচীকে। পরে টাকা ফেরত দিতেও অস্বীকার করেন মমতাজ। এরপর চুক্তিভঙ্গের অভিযোগ নিয়ে স্থানীয় থানার দ্বারস্থ হন শক্তি। কিন্তু থানা অভিযোগ গ্রহণ করতে অস্বীকার করে। এরপর বাধ্য হয়ে বহরমপুর আদালতের দ্বারস্থ হন তিনি।

বিজনেস আওয়ার/১৬ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: