ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানের অর্থনীতি খাদের কিনারে, বিপাকে নাগরিকরা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩
  • 82

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না পাকিস্তানের। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রেমিট্যান্স ও রুপির বিনিময় মূল্য কমার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশটির কোটি কোটি সাধারণ মানুষ।

ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম তিনশ রুপির ঘরে পৌঁছেছে। বিনিময় হারের অবমূল্যায়নের ফলে দেশটিতে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়বে। এমনিতেই কয়েক দিন পরপর আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার।

জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে দেশের মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি কোর মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। আর এমনটা হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে নীতি সুদহারও বাড়ানো হবে। সরকারের এই পদক্ষেপের সবশেষ ভুক্তভোগীও হবে সাধারণ মানুষ।

গত মে মাসে দ্য ডন জানিয়েছিল, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমে ৪ দশমিক ৩১ বিলিয়নে ঠেকেছে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৫ দশমিক ৬২৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে হিসাব করলে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯৩৭ বিলিয়ন ডলার। দেউলিয়ার পথে থাকা দেশটির র‌্যামিট্যান্স ও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট ঋণ ও দেনার পরিমাণ ২৯ শতাংশ বেড়ে ৭৭ ট্রিলিয়ন রুপি ছাড়িয়েছে। চরম সংকটের মধ্যে সরকার ব্যয় মেটাতে ব্যাপক হারে ঋণ নেওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ১৭ আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণ এবং দেনার পরিমাণ ৭৭ দশমিক ১০৪ ট্রিলিয়ন রুপি। এর আগের অর্থবছরেও যার পরিমাণ ছিল ৫৯ দশমিক ৭৭২ ট্রিলিয়ন রুপি। এর মানে হলো মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশটির ঋণ ও দেনার পরিমাণ ১৭ দশমিক ৩৩২ ট্রিলিয়ন রুপি বেড়েছে।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। শাহবাজ শরিফের জোট সরকরের স্থলে ক্ষমতা নিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তবে সরকার বদল হলেও পাকিস্তানের খেটে-খাওয়া মানুষের ভাগ্য বদলে তারা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে, তা বলা যাবে না।

পাকিস্তানের অর্থনীতির বিপর্যয়কর পরিস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পাকিস্তানি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ও কোনো মন্তব্য করেনি। যদিও এর আগে শাহবাজ শরিফের জোট সরকারের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার এসব বিষয়ে অন্তত নিজের শক্ত অবস্থান প্রকাশের চেষ্টা করতেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ আগস্ট,২০২৩/এসএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

পাকিস্তানের অর্থনীতি খাদের কিনারে, বিপাকে নাগরিকরা

পোস্ট হয়েছে : ০৬:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সংকট যেন পিছু ছাড়ছে না পাকিস্তানের। রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংকটে বিপর্যস্ত পাকিস্তানে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, রেমিট্যান্স ও রুপির বিনিময় মূল্য কমার সঙ্গে সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে মুদ্রাস্ফীতি। এতে বিপাকে পড়েছেন দেশটির কোটি কোটি সাধারণ মানুষ।

ডলারের বিপরীতে পাকিস্তানি মুদ্রার দাম তিনশ রুপির ঘরে পৌঁছেছে। বিনিময় হারের অবমূল্যায়নের ফলে দেশটিতে জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়বে। এমনিতেই কয়েক দিন পরপর আইএমএফের শর্ত অনুযায়ী জ্বালানি তেল ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে পাকিস্তান সরকার।

জিও নিউজের খবরে বলা হয়েছে, জ্বালানির দাম বাড়ার কারণে দেশের মুদ্রাস্ফীতির পাশাপাশি কোর মুদ্রাস্ফীতি আরও বাড়বে। আর এমনটা হলে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) শর্ত মেনে নীতি সুদহারও বাড়ানো হবে। সরকারের এই পদক্ষেপের সবশেষ ভুক্তভোগীও হবে সাধারণ মানুষ।

গত মে মাসে দ্য ডন জানিয়েছিল, পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় ব্যাংকের রিজার্ভ কমে ৪ দশমিক ৩১ বিলিয়নে ঠেকেছে। তবে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ৫ দশমিক ৬২৫ বিলিয়ন ডলার নিয়ে হিসাব করলে দেশটির রিজার্ভের পরিমাণ দাঁড়ায় ৯ দশমিক ৯৩৭ বিলিয়ন ডলার। দেউলিয়ার পথে থাকা দেশটির র‌্যামিট্যান্স ও বিদেশি প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

এ ছাড়া সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে পাকিস্তানের মোট ঋণ ও দেনার পরিমাণ ২৯ শতাংশ বেড়ে ৭৭ ট্রিলিয়ন রুপি ছাড়িয়েছে। চরম সংকটের মধ্যে সরকার ব্যয় মেটাতে ব্যাপক হারে ঋণ নেওয়ায় এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানের ১৭ আগস্টের তথ্য অনুযায়ী, সদ্য সমাপ্ত ২০২২-২৩ অর্থবছরে দেশি ও বিদেশি উৎস থেকে নেওয়া ঋণ এবং দেনার পরিমাণ ৭৭ দশমিক ১০৪ ট্রিলিয়ন রুপি। এর আগের অর্থবছরেও যার পরিমাণ ছিল ৫৯ দশমিক ৭৭২ ট্রিলিয়ন রুপি। এর মানে হলো মাত্র এক বছরের ব্যবধানে দেশটির ঋণ ও দেনার পরিমাণ ১৭ দশমিক ৩৩২ ট্রিলিয়ন রুপি বেড়েছে।

মাত্র দুই সপ্তাহ আগে পাকিস্তানে সরকার পরিবর্তন হয়েছে। শাহবাজ শরিফের জোট সরকরের স্থলে ক্ষমতা নিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। তবে সরকার বদল হলেও পাকিস্তানের খেটে-খাওয়া মানুষের ভাগ্য বদলে তারা দৃশ্যমান পদক্ষেপ নিয়েছে, তা বলা যাবে না।

পাকিস্তানের অর্থনীতির বিপর্যয়কর পরিস্থিতি নিয়ে জিজ্ঞেস করা হলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি পাকিস্তানি কেন্দ্রীয় ব্যাংক। দেশটির তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ও কোনো মন্তব্য করেনি। যদিও এর আগে শাহবাজ শরিফের জোট সরকারের অর্থমন্ত্রী ইসহাক দার এসব বিষয়ে অন্তত নিজের শক্ত অবস্থান প্রকাশের চেষ্টা করতেন।

বিজনেস আওয়ার/২৫ আগস্ট,২০২৩/এসএস

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: