ঢাকা , শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভারতে মুসলিম সহপাঠীকে শিক্ষার্থীদের চড়, বন্ধ হলো সেই স্কুলটি

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৩
  • 69

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলে মুসলিম সহপাঠীকে শিক্ষার্থীদের চড় মারতে এক শিক্ষিকার নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মাঝে স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য স্কুলটি আপাতত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উত্তরপ্রদেশের স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়ার এই খবর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বন্ধ রাখার জন্য স্কুলটির পরিচালককে নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্কুলটিতে অধ্যয়নরত শিশুদের রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা পার্শ্ববর্তী স্কুলে ভর্তি করাবেন; যাতে তাদের পড়াশোনার কোনও ক্ষতি না হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে হোমওয়ার্ক না করায় এক মুসলিম শিশুকে তার সহপাঠীদের দিয়ে থাপ্পড় মারা হয়। স্কুলের অধ্যক্ষ তৃপ্তি ত্যাগী সাত বছর বয়সী শিশুটিকে থাপ্পড় মারার জন্য তার সহপাঠীদের নির্দেশ দেন।

শিশুটি কান্নাকাটি করলেও তার সহপাঠীরা একের পর এক থাপ্পড় মারে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে ওই ছাত্রকে জোরে আঘাত করার জন্য শিশুদের নির্দেশ দিতে শোনা যায় শিক্ষিকাকে।

নেহা পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকা তৃপ্তি ত্যাগী অবশ্য তার এমন কাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এটি নিছকই সামান্য একটি ঘটনা। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে মারধরের এই ঘটনায় অধ্যক্ষ তৃপ্তি ত্যাগির সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

তবে তৃপ্তি ত্যাগি বলেছেন, তিনি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন নির্দেশ দেননি। শিশুটি হোমওয়ার্ক না করায় তাকে থাপ্পড় মারতে কিছু শিক্ষার্থীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, শিশুটির বাবা-মা তার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিয়েছিল। আর আমি প্রতিবন্ধী। তাই তাকে চড় মারার জন্য কিছু ছাত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, যাতে সে তার বাড়ির কাজ করা শুরু করে।

শিশুটি ও তার বাবা-মাকে প্রদেশের শিশু কল্যাণ কমিটি কাউন্সেলিং করেছে। শিশুটির বাবা বলেছেন, আমার ছেলের বয়স ৭ বছর। এই ঘটনাটি ২৪ আগস্ট ঘটেছিল। ওই শিক্ষিকা ছাত্রদের আমার ছেলেকে বারবার মারতে বাধ্য করেছেন। আমার ছেলেকে এক বা দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। সে ভয় পেয়েছে।

শিশুটিকে থাপ্পড় মারার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনীতিকরাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

শিশুটির বাবা বলেছেন, তিনি স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবেন না। তবে তার সন্তানকে আর ওই স্কুলে পাঠাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন…

সূত্র: এনডিটিভি।

বিজনেস আওয়ার/২৭ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ভারতে মুসলিম সহপাঠীকে শিক্ষার্থীদের চড়, বন্ধ হলো সেই স্কুলটি

পোস্ট হয়েছে : ০৫:২৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৭ অগাস্ট ২০২৩

আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ভারতের উত্তরপ্রদেশের একটি স্কুলে মুসলিম সহপাঠীকে শিক্ষার্থীদের চড় মারতে এক শিক্ষিকার নির্দেশ দেওয়ার ঘটনা ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার মাঝে স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ঘটনার তদন্তের জন্য স্কুলটি আপাতত বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।

রোববার ভারতের সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির এক প্রতিবেদনে উত্তরপ্রদেশের স্কুলটি বন্ধ করে দেওয়ার এই খবর দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, বন্ধ রাখার জন্য স্কুলটির পরিচালককে নোটিশ পাঠিয়েছে রাজ্যের শিক্ষা বিভাগ।

কর্তৃপক্ষ বলেছে, স্কুলটিতে অধ্যয়নরত শিশুদের রাজ্যের শিক্ষা দপ্তরের কর্মকর্তারা পার্শ্ববর্তী স্কুলে ভর্তি করাবেন; যাতে তাদের পড়াশোনার কোনও ক্ষতি না হয়।

গত বৃহস্পতিবার (২৪ আগস্ট) মুজাফফরনগরের খুব্বাপুর গ্রামের নেহা পাবলিক স্কুলে হোমওয়ার্ক না করায় এক মুসলিম শিশুকে তার সহপাঠীদের দিয়ে থাপ্পড় মারা হয়। স্কুলের অধ্যক্ষ তৃপ্তি ত্যাগী সাত বছর বয়সী শিশুটিকে থাপ্পড় মারার জন্য তার সহপাঠীদের নির্দেশ দেন।

শিশুটি কান্নাকাটি করলেও তার সহপাঠীরা একের পর এক থাপ্পড় মারে। এই ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে গেলে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়। ভিডিওতে ওই ছাত্রকে জোরে আঘাত করার জন্য শিশুদের নির্দেশ দিতে শোনা যায় শিক্ষিকাকে।

নেহা পাবলিক স্কুলের শিক্ষিকা তৃপ্তি ত্যাগী অবশ্য তার এমন কাণ্ডের পক্ষে সাফাই গেয়ে বলেছেন, এটি নিছকই সামান্য একটি ঘটনা। তবে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে।

স্কুলে মুসলিম শিক্ষার্থীকে অন্য শিক্ষার্থীদের দিয়ে মারধরের এই ঘটনায় অধ্যক্ষ তৃপ্তি ত্যাগির সাম্প্রদায়িক মনোভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।

তবে তৃপ্তি ত্যাগি বলেছেন, তিনি সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে এমন নির্দেশ দেননি। শিশুটি হোমওয়ার্ক না করায় তাকে থাপ্পড় মারতে কিছু শিক্ষার্থীকে নির্দেশ দিয়েছিলেন বলে দাবি করেছেন তিনি।

আত্মপক্ষ সমর্থন করে তিনি বলেন, শিশুটির বাবা-মা তার ব্যাপারে কঠোর হওয়ার জন্য আমাকে চাপ দিয়েছিল। আর আমি প্রতিবন্ধী। তাই তাকে চড় মারার জন্য কিছু ছাত্রকে নির্দেশ দিয়েছিলাম, যাতে সে তার বাড়ির কাজ করা শুরু করে।

শিশুটি ও তার বাবা-মাকে প্রদেশের শিশু কল্যাণ কমিটি কাউন্সেলিং করেছে। শিশুটির বাবা বলেছেন, আমার ছেলের বয়স ৭ বছর। এই ঘটনাটি ২৪ আগস্ট ঘটেছিল। ওই শিক্ষিকা ছাত্রদের আমার ছেলেকে বারবার মারতে বাধ্য করেছেন। আমার ছেলেকে এক বা দুই ঘণ্টা ধরে নির্যাতন করা হয়েছে। সে ভয় পেয়েছে।

শিশুটিকে থাপ্পড় মারার ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে। দেশটির রাজনীতিকরাও এই ঘটনার নিন্দা জানিয়েছেন।

শিশুটির বাবা বলেছেন, তিনি স্কুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনবেন না। তবে তার সন্তানকে আর ওই স্কুলে পাঠাবেন না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

ভিডিওটি দেখতে এখানে ক্লিক করুন…

সূত্র: এনডিটিভি।

বিজনেস আওয়ার/২৭ আগস্ট, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: