বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করতে প্রধানমন্ত্রীর কাছে দেশি-বিদেশি কিছু ব্যক্তিবর্গের খোলা চিঠি সংবিধান ও আইনের পরিপন্থি বলে অভিহিত করেছেন কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দ।
বুধবার (৩০ আগস্ট) রাতে এক বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল এই মন্তব্য করেন।
কেন্দ্রী ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস থেকে সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের আইনের আশ্রয় গ্রহণের সাংবিধানিক অধিকার রয়েছে উল্লেখ করে তারা বলেন, সেই সাংবিধানিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করে চলমান বৈচারিক কার্যক্রম বন্ধের প্রস্তাব কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের স্বেচ্ছাচারিতাপূর্ণ দাবি আদালত অবমাননার শামিল।
নেতৃবৃন্দ বলেন, কেন্দ্রীয় ১৪ দল বিশ্বাস করে, আইনের শাসন ও মানবাধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল কোনো ব্যক্তি বা সংগঠন ক্ষতিগ্রস্ত বা নির্যাতিত কোনো ব্যক্তির ন্যায়বিচার প্রাপ্তির পথ রুদ্ধ করার দাবি উত্থাপন করতে পারে না। আর কোনো বিদেশি ব্যক্তিবর্গের পক্ষ থেকে বিচারাধীন কোনো মামলার বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার দাবি কেবল বিচার বিভাগের ওপর হস্তক্ষেপই নয়, একই সাথে একটি স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্বের উপরও আঘাত বটে।
বিবৃতিতে কেন্দ্রীয় ১৪ দল নেতৃবৃন্দ বলেন, ড. ইউনূস-এর দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা আইনি প্রতিকার চেয়ে আদালতে মামলা করেছেন এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে বিচার চলমান রয়েছে। আইনের শাসনের নীতি অনুযায়ী আইনের চোখে সকলেই সমান; সেক্ষেত্রে কারও রাজনৈতিক বা সামাজিক পরিচয় বিবেচ্য বিষয় নয়। কেউ কোনো অপরাধ করলে তাকে আইনের মুখোমুখি হতেই হবে। ফৌজদারি আইন দেশের সবার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
নোবেল পুরস্কার পেলেই কেউ আইন-আদালতের ঊর্ধ্বে চলে যায় না মন্তব্য করে তারা বলেন, পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নোবেল পুরস্কার অর্জনকারী অনেকের বিরুদ্ধে সেসব দেশের আইন অনুযায়ী মামলা হয়েছে এবং বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হয়েছে। দেশের সংবিধান ও আইন অনুযায়ী ড. ইউনূস আত্মপক্ষ সমর্থনের অধিকার ভোগ করছেন, আইনজীবী নিয়োগ করে জামিন নিয়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করছেন। এই মামলার সঙ্গে রাজনীতির কোনো যোগসূত্র নেই।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, আইন, বিচার ব্যবস্থা ও আদালতের স্বাভাবিক কার্যক্রমে প্রভাব বিস্তার করে সুবোধসম্পন্ন কোনো ব্যক্তির কাছ থেকে এমন ধরনের বিবৃতি প্রদান কোনোভাবেই কাম্য নয়। এ ধরনের অযাচিত হস্তক্ষেপ এবং বেআইনি উদ্যোগ স্বেচ্ছাচারী মানসিকতার বর্হিপ্রকাশ ছাড়া কিছু নয়।
‘ইতোপূর্বে আমরা বিস্ময়ের সঙ্গে দেখেছি ১৯৭১ সালে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় মনবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনকারী ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্যও দেশি-বিদেশি অপশক্তি বাংলাদেশের উপর চাপ প্রয়োগ করেছিল। ড. ইউনূস-এর বিরুদ্ধে চলমান বিচার প্রক্রিয়া গোষ্ঠীতন্ত্র ও ভূ-রাজনৈতিক স্বার্থে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বন্ধ করতে বিবৃতি প্রদান বাংলাদেশের গণতন্ত্রকামী, প্রগতিশীল, সচেতন নাগরিক সামজকে গভীরভাবে হতাশ করেছে।’
বর্তমান সরকার জনগণের ন্যায়বিচার লাভের অধিকার প্রতিষ্ঠার প্রতিষ্ঠায় অঙ্গীকারবদ্ধ জানিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, সংবিধান, আইন ও বিচারব্যবস্থাকে বাধাগ্রস্ত বা প্রভাব বিস্তার করে এমন ধরনের বিবৃতি কিংবা তৎপরতা থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানান তারা।
বিজনেস আওয়ার/৩১ আগস্ট, ২০২৩/পিএস