বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (সিলেট): সিলেটের এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় ছাত্রলীগের ছয় কর্মীর নাম উঠে এসেছে। শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ছাত্রাবাস থেকে স্বামীসহ ওই গৃহবধূকে উদ্ধার করে। অভিযুক্তদের ধরতে পুলিশ গতকালরাতভর অভিযান চালালেও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি।
গণধর্ষণে অভিযুক্তরা হলেন- এমসি কলেজের ইংরেজি বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী শাহ মাহবুবুর রহমান রনি, তার সহপাঠী মাহফুজুর রহমান মাছুম, একই কলেজের শিক্ষার্থী এম সাইফুর রহমান, অর্জুন লস্কর এবং বহিরাগত রবিউল ইসলাম ও তারেক আহমদ। এরা সবাই ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত।
তবে সাইফুর রহমান নামে অভিযুক্ত এক ছাত্রলীগকর্মীর কক্ষ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্রসহ বেশ কিছু দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ধর্ষিতা তরুণীকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ানস্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যায় একটি প্রাইভেটকার যোগে স্বামীকে সঙ্গে নিয়ে এমসি কলেজে বেড়াতে আসেন ওই তরুণী। সন্ধ্যা হয়ে এলে ক্যাম্পাস থেকে ছাত্রলীগের ছয় কর্মী মিলে স্বামীসহ তরুণীকে তুলে নেন পার্শ্ববর্তী কলেজ ছাত্রাবাসে। পরে তারা স্বামীকে বেঁধে মারধর করে ওই তরুণীকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে স্বামীসহ ওই তরুণীকে উদ্ধার করেন।
পরে ধর্ষিতাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওসিসিতে প্রেরণ করা হয়। ধর্ষণের ঘটনায় সময়ক্ষেপণ হওয়ায় ধর্ষকরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এ ঘটনায় শনিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে তরুণীর স্বামী বাদী হয়ে ছয়জনকে অভিযুক্ত করে শাহপরাণ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জানা যায়, এমসি কলেজ ছাত্রলীগের নেতা ও কলেজটিতে ইংরেজিতে মাস্টার্সে অধ্যয়রত শাহ মাহবুবুর রহমান রণি, একই বিভাগে অধ্যয়নরত ছাত্রলীগ নেতা মাহফুজুর রহমান মাছুম, এমসি কলেজ ছাত্রলীগ নেতা এম সাইফুর রহমান, কলেজ ছাত্রলীগ নেতা অর্জুন এবং বহিরাগত ছাত্রলীগ নেতা রবিউল ও তারেক রয়েছেন অভিযুক্তের তালিকায়।
এদের মধ্যে সাইফুর রহমানের বাড়ি বালাগঞ্জে, রবিউলের বাড়ি দিরাইয়ে, মাহফুজুর রহমান মাছুমের বাড়ি সিলেট সদর উপজেলায়, অর্জুনের বাড়ি জকিগঞ্জে, রণি হবিগঞ্জের এবং তারেক জগন্নাথপুরের বাসিন্দা।
শাহপরাণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাইয়ুম চৌধুরী বলেন, খবর পেয়েই আমরা এমসি কলেজের ছাত্রাবাসে গিয়ে তাদের উদ্ধার করি। পরে ধর্ষণের শিকার ওই গৃহবধূকে ওসমানী হাসপাতালের ওসিসি সেন্টারে ভর্তি করা হয়। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ছাত্রাবাসের একটি কক্ষ থেকে বেশ কিছু অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ