বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক : তালিকাভুক্তির নিয়ম না মেনে চলা এবং বর্তমান কার্যক্রম খতিয়ে দেখতে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত ৪২টি কোম্পানি পরিদর্শনের জন্য বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) কাছে অনুমতি চেয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই)। তবে বিএসইসি প্রাথমিকভাবে ১৪টি কোম্পানির কার্যক্রম পরিদর্শনের অনুমতি দিয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে কয়েকটি কোম্পানি শেয়ারবাজারের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের কাছে থেকে অর্থ উত্তোলন করলেও তাদের লভ্যাংশ থেকে বঞ্চিত করেছে। এছাড়া কোনো কোনো কোম্পানি আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ না করে এবং বার্ষিক সাধারণ সভা না করে শেয়ারহোল্ডারদের অন্ধকারে রেখেছে।
ডিএসই চলতি বছরের শুরুর দিকে বিএসইসিতে চিঠি দিয়ে ৪২টি নন-পারফর্মিং তালিকাভুক্ত কোম্পানি পরিদর্শনের অনুমতি চেয়েছিল। তবে জুলাই মাসে বিএসইসি ১৪টি কোম্পানিকে পরিদর্শন করতে ডিএসইকে অনুমতি দিয়েছে। বাকি ২৮টি কোম্পানিকে পর্যায়ক্রমে ডিএসইকে পরিদর্শনের অনুমতি দেয়া হবে বলে জানা গেছে।
ডিএসই কোম্পানিগুলো পরিদর্শন শেষে প্রতিবেদন বিএসইসিতে জমা দেবে। এরপর ডিএসইর পরিদর্শন প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।
এই ১৪টি কোম্পানি পরিদর্শনের জন্য ডিএসই বেশ কয়েকটি দল গঠন করেছে। এরই ধারাবাহিকতায় গত সপ্তাহে একটি দলকে নর্দার্ণ জুট ম্যানুফ্যাকচারিং পরিদর্শনের জন্য পাঠানো হয়েছিল। নর্দার্ণ জুটের কারখানার প্রাঙ্গণ বন্ধ থাকার কারণে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেনি ডিএসইর তদন্ত দলটি। এছাড়াও নর্দার্ণ জুটের প্রধান কার্যালয় তদন্ত করতে গিয়েছিল ডিএসই। কিন্তু কোম্পানিটির প্রধান কার্যালয় ওএমসি লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি ব্যবহার করছে বলে ডিএসই জানিয়েছে।
ডিএসইর পরিদর্শন তালিকার ৪২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বেশির ভাগই টেক্সটাইল খাতের। স্টক এক্সচেঞ্জে টেক্সটাইল সেক্টরে মোট ৫৮টি কোম্পানি তালিকাভুক্ত। যার মধ্যে ১৫টি ডিএসইর পরিদর্শনের অধীনে রয়েছে। অন্যগুলো মধ্যে সাতটি এনবিএফআই, চারটি বিবিধ খাতের, তিনটি খাদ্য ও আনুষঙ্গিক খাতের, তিনটি ওষুধ ও রসায়ন খাতের, দুটি ব্যাংক, দুটি প্রকৌশল খাতের এবং দুটি পাট খাতের। এছাড়া একটি করে রয়েছে চামড়া খাত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, কাগজ ও মুদ্রণ এবং সেবা ও রিয়েল এস্টেট খাতের।
ডিএসইর এক কর্মকর্তা বলেছেন, কিছু তালিকাভুক্ত কোম্পানির মালিকরা তাদের কার্যক্রম এবং ব্যবসার প্রকৃত অবস্থা গোপন করেছেন। এরফলে কোম্পানিগুলো সম্পর্কে গুজবের জন্ম দিয়েছে। যা শেষ পর্যন্ত শেয়ারের দামের হেরফেরের দিকে পরিচালিত করে।
ডিএসইর ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, কয়েকটি কোম্পানি উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছিল এবং বছরের পর বছর ধরে কোনও লভ্যাংশ দেয়নি, তাদের স্টকের দাম ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ কারণেই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে, ডিএসই কোম্পানিগুলোর প্রকৃত অবস্থা জানতে যাচাই-বাছাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/পিএস