ঢাকা , বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মন্দায় বন্ধ হয়ে গেল ১১৭ ব্রোকারেজ আউটলেট

  • ডেস্ক :
  • আপডেট সময় ০২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • 16

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারের অন্যতম প্রধান অংশীজন ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ক্রমেই ব্যবসা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। লেনদেনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় খরচ সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানই কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ সংস্কার কাজের কথা জানিয়ে প্রধান কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ শাখার কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১৭টি ব্রোকারেজ অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে বহু শাখা অফিস, পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ও তালাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডার হিসেবে ৩০৭টি ব্রোকারেজ হাউজ ব্যবসা শুরু করেছিল। এর মধ্যে গ্রাহক হিসাবে ঘাটতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ৫টির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সচল থাকা বাকি ৩০২টি ব্রোকারেজ হাউসের মূল অফিস ও শাখা অফিসের সংখ্যা প্রায় ১৫০০টি।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, এই অফিসগুলোর অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত। বাজারে লেনদেন কম হওয়া, সনদ নবায়ন না হওয়া এবং অফিস সংস্কারের কারণ দেখিয়ে ব্রোকারেজ হাউসগুলো তাদের প্রধান কার্যালয়সহ ১১৭টি শাখা অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বিকল্প লেনদেন অফিস না থাকায় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবধারীরা বর্তমানে শেয়ার লেনদেনও করতে পারছেন না।

ব্রোকারেজ হাউসগুলোর এই পরিস্থিতি তুলে ধরে একটি প্রথম শ্রেণির ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান জানান, এই গতিতে বাজার চললে শুধু শাখা অফিস নয়, সব অফিসেই তালা ঝুলিয়ে দিতে হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শাখা অফিস রেখে খরচ বাড়ানো ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। যে বাজারে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে একটি টাকাও বাড়েনি (আইপিও আসেনি), সেই বাজারে বিনিয়োগকারীই বা কেন থাকবে? আর বিনিয়োগকারী নেই বলেই তো আমরা ব্যবসা চালিয়ে নিতে না পেরে শাখা অফিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।

অন্যদিকে, বন্ধ থাকা ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের প্রধান কার্যালয় কর্তৃপক্ষ এটিকে সংস্কার কাজ হিসেবে দেখছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রধান কার্যালয়ে রিনোভেশন চলছে এবং একই ভবনের ৮ তলা থেকে ১১ তলায় অফিস সরিয়ে নেওয়ার ডেকোরেট কাজ শেষ হলেই লেনদেন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।

এছাড়াও, চলতি বছরে শার্প সিকিউরিটিজের একটি শাখা অফিস বন্ধ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এর জন্য দুটি কারণকে দায়ী করেছেন: প্রথমত, তারা বিও হিসাবধারীদের সেবা অনলাইনে দেওয়ার প্রতি জোর দিচ্ছেন এবং দ্বিতীয়ত, বাজারে যে লেনদেন হচ্ছে তাতে খরচ কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, ভবিষ্যতে ক্লায়েন্ট চাহিদা বাড়লে তারা আবার শাখা চালু রাখার বিষয়ে চিন্তা করবেন।

বিজনেস আওয়ার/ ২৪ নভেম্বর / এ এইচ

ট্যাগস
জনপ্রিয় সংবাদ

মন্দায় বন্ধ হয়ে গেল ১১৭ ব্রোকারেজ আউটলেট

আপডেট সময় ০২:৪২ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: দেশের শেয়ারবাজারের অন্যতম প্রধান অংশীজন ব্রোকারেজ হাউসগুলোর ক্রমেই ব্যবসা সংকুচিত হয়ে পড়ছে। লেনদেনের পরিমাণ অস্বাভাবিকভাবে কমে যাওয়ায় খরচ সামাল দিতে হিমশিম খেয়ে অনেক প্রতিষ্ঠানই কার্যক্রম গুটিয়ে নিতে বাধ্য হচ্ছে। কেউ কেউ সংস্কার কাজের কথা জানিয়ে প্রধান কার্যালয়সহ গুরুত্বপূর্ণ শাখার কার্যক্রমও সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২০ নভেম্বর পর্যন্ত মোট ১১৭টি ব্রোকারেজ অফিস বন্ধ হয়ে গেছে। এর মধ্যে রয়েছে বহু শাখা অফিস, পাশাপাশি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ও তালাবদ্ধ হয়ে পড়েছে।

বর্তমানে স্টক এক্সচেঞ্জের ট্রেক হোল্ডার হিসেবে ৩০৭টি ব্রোকারেজ হাউজ ব্যবসা শুরু করেছিল। এর মধ্যে গ্রাহক হিসাবে ঘাটতিসহ বিভিন্ন অনিয়মের দায়ে ৫টির কার্যক্রম স্থগিত রয়েছে। সচল থাকা বাকি ৩০২টি ব্রোকারেজ হাউসের মূল অফিস ও শাখা অফিসের সংখ্যা প্রায় ১৫০০টি।

ডিএসই সূত্রে জানা যায়, এই অফিসগুলোর অধিকাংশই রাজধানী ঢাকা ও বাণিজ্যিক নগরী চট্টগ্রাম অঞ্চলে অবস্থিত। বাজারে লেনদেন কম হওয়া, সনদ নবায়ন না হওয়া এবং অফিস সংস্কারের কারণ দেখিয়ে ব্রোকারেজ হাউসগুলো তাদের প্রধান কার্যালয়সহ ১১৭টি শাখা অফিস বন্ধ করে দিয়েছে। এর ফলে বিকল্প লেনদেন অফিস না থাকায় কয়েকটি ব্রোকারেজ হাউসের হিসাবধারীরা বর্তমানে শেয়ার লেনদেনও করতে পারছেন না।

ব্রোকারেজ হাউসগুলোর এই পরিস্থিতি তুলে ধরে একটি প্রথম শ্রেণির ব্রোকারেজ হাউজের প্রধান জানান, এই গতিতে বাজার চললে শুধু শাখা অফিস নয়, সব অফিসেই তালা ঝুলিয়ে দিতে হবে। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, শাখা অফিস রেখে খরচ বাড়ানো ছাড়া কিছুই হচ্ছে না। যে বাজারে গত দেড় বছরের বেশি সময় ধরে একটি টাকাও বাড়েনি (আইপিও আসেনি), সেই বাজারে বিনিয়োগকারীই বা কেন থাকবে? আর বিনিয়োগকারী নেই বলেই তো আমরা ব্যবসা চালিয়ে নিতে না পেরে শাখা অফিস বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি।

অন্যদিকে, বন্ধ থাকা ইউনাইটেড সিকিউরিটিজের প্রধান কার্যালয় কর্তৃপক্ষ এটিকে সংস্কার কাজ হিসেবে দেখছে। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রধান কার্যালয়ে রিনোভেশন চলছে এবং একই ভবনের ৮ তলা থেকে ১১ তলায় অফিস সরিয়ে নেওয়ার ডেকোরেট কাজ শেষ হলেই লেনদেন কার্যক্রম পুনরায় চালু হবে।

এছাড়াও, চলতি বছরে শার্প সিকিউরিটিজের একটি শাখা অফিস বন্ধ হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির কর্মকর্তারা এর জন্য দুটি কারণকে দায়ী করেছেন: প্রথমত, তারা বিও হিসাবধারীদের সেবা অনলাইনে দেওয়ার প্রতি জোর দিচ্ছেন এবং দ্বিতীয়ত, বাজারে যে লেনদেন হচ্ছে তাতে খরচ কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে। তারা জানান, ভবিষ্যতে ক্লায়েন্ট চাহিদা বাড়লে তারা আবার শাখা চালু রাখার বিষয়ে চিন্তা করবেন।

বিজনেস আওয়ার/ ২৪ নভেম্বর / এ এইচ