ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অস্বাভাবিকভাবে সুদহার বাড়ার সুযোগ নেই: আবদুর রউফ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 58

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে সুদহার বেড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, এখনকার পদ্ধতি অনুসারে সামান্য পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন গভর্নর। এসময় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এই আশ্বাস দেন।

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি সহজিকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, ব্যাংকগুলো যেন নারীদেরকেও জামানতকারী হিসেবে গ্রহণ করে সেজন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হচ্ছে। নারীদের ঋণ প্রাপ্তি সহজিকরণে ব্যাংকগুলোকে সম্প্রতি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে আমরা ইতিমধ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যবসা, বাণিজ্য এবং শিল্প খাতে নারীরা যেন আরও এগিয়ে আসতে পারে সে লক্ষ্যে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ প্রাপ্তি ধাপে ধাপে আরও সহজ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতিমধ্যে যার সুফল ভোগ করছেন অসংখ্য নারী উদ্যোক্তা।

সৌজন্য সাক্ষাতে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছেন নারী উদ্যোক্তারাও। কিন্তু ব্যবসা পরিচালনা এবং সম্প্রসারণের জন্য নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি এখনও ততটা সহজ হয়নি। নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোরও উৎসাহ কম দেখা যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এছাড়া ঋণ পাওয়ার জন্য একজন নারী উদ্যোক্তাকে তার বাবা, ভাই কিংবা স্বামীকে জামানতকারী হিসেবে দেখাতে হয়।

কোনো নারীকে জামানতকারী হিসেবে দেখালে ব্যাংকগুলো সেটি গ্রহণ করতে চায় না উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে কামনা করেন। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করার আহ্বান জানান মাহবুবুল আলম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ব্যবসায়ীবান্ধব গভর্নর উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে করোনা মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে আর্থিক ও নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পলিসি সহায়তার কারণে করোনা মহামারির ধকল সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে এবং সেই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত ধকল সন্তোষজনকভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে।

এসময় সুদের হার না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বিদেশি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সুদের হার বৃদ্ধি না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সুদের হার বৃদ্ধি করা হলে ব্যবসা খরচ বেড়ে যাবে এবং স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে বিবেচনায় নিয়ে সকল খাতের জন্য ঋণ পুনর্তফসিলীকরণের সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। নির্ধারিত দামে যেন ব্যবসায়ীরা ডলার কিনতে পারেন এজন্য গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, শমী কায়সার, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, মুনির হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফারাহ মো. নাছের প্রমুখ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অস্বাভাবিকভাবে সুদহার বাড়ার সুযোগ নেই: আবদুর রউফ

পোস্ট হয়েছে : ০৭:১৪ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে সুদহার বেড়ে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই, এখনকার পদ্ধতি অনুসারে সামান্য পরিমাণ ধাপে ধাপে বাড়তে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আবদুর রউফ তালুকদার।

সোমবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন দি ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার্স অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সভাপতি মাহবুবুল আলমের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ কথা বলেন গভর্নর। এসময় এফবিসিসিআই সভাপতি মাহবুবুল আলমের প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর এই আশ্বাস দেন।

নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি সহজিকরণে বাংলাদেশ ব্যাংক নানাবিধ উদ্যোগ নিয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর আবদুর রউফ বলেন, ব্যাংকগুলো যেন নারীদেরকেও জামানতকারী হিসেবে গ্রহণ করে সেজন্য ব্যাংকগুলোকে বলা হচ্ছে। নারীদের ঋণ প্রাপ্তি সহজিকরণে ব্যাংকগুলোকে সম্প্রতি প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে নারীর অংশগ্রহণ বাড়াতে আমরা ইতিমধ্যে নানাবিধ পদক্ষেপ নিয়েছি। ব্যবসা, বাণিজ্য এবং শিল্প খাতে নারীরা যেন আরও এগিয়ে আসতে পারে সে লক্ষ্যে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ঋণ প্রাপ্তি ধাপে ধাপে আরও সহজ করার চেষ্টা করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ইতিমধ্যে যার সুফল ভোগ করছেন অসংখ্য নারী উদ্যোক্তা।

সৌজন্য সাক্ষাতে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। এক্ষেত্রে পুরুষদের পাশাপাশি বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখে চলেছেন নারী উদ্যোক্তারাও। কিন্তু ব্যবসা পরিচালনা এবং সম্প্রসারণের জন্য নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ প্রাপ্তি এখনও ততটা সহজ হয়নি। নারী উদ্যোক্তাদের ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলোরও উৎসাহ কম দেখা যায় বিভিন্ন ক্ষেত্রে। এছাড়া ঋণ পাওয়ার জন্য একজন নারী উদ্যোক্তাকে তার বাবা, ভাই কিংবা স্বামীকে জামানতকারী হিসেবে দেখাতে হয়।

কোনো নারীকে জামানতকারী হিসেবে দেখালে ব্যাংকগুলো সেটি গ্রহণ করতে চায় না উল্লেখ করে তিনি এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হস্তক্ষেপে কামনা করেন। একই সঙ্গে ক্ষুদ্র ও মাঝারি নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যাংক ঋণ সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকায় উন্নীত করার আহ্বান জানান মাহবুবুল আলম।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরকে ব্যবসায়ীবান্ধব গভর্নর উল্লেখ করে এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, দেশের অর্থনীতিতে করোনা মহামারির দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মোকাবিলায় বাংলাদেশ ব্যাংক নিয়মিতভাবে আর্থিক ও নীতি সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের এই পলিসি সহায়তার কারণে করোনা মহামারির ধকল সফলভাবে মোকাবিলা করা সম্ভব হয়েছে এবং সেই সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধজনিত ধকল সন্তোষজনকভাবে মোকাবিলা করা হচ্ছে।

এসময় সুদের হার না বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে মাহবুবুল আলম বলেন, ‘বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতিতে বিদেশি বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতা সক্ষমতা ধরে রাখতে সুদের হার বৃদ্ধি না করার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। সুদের হার বৃদ্ধি করা হলে ব্যবসা খরচ বেড়ে যাবে এবং স্থানীয় শিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হবে।’

করোনা মহামারি, ইউক্রেন-রাশিয়া সংকটের দীর্ঘমেয়াদি নেতিবাচক প্রভাব এবং বৈশ্বিক অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতাকে বিবেচনায় নিয়ে সকল খাতের জন্য ঋণ পুনর্তফসিলীকরণের সুবিধা প্রদানের আহ্বান জানান এফবিসিসিআই সভাপতি। নির্ধারিত দামে যেন ব্যবসায়ীরা ডলার কিনতে পারেন এজন্য গভর্নরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন তিনি।

এ সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সহ-সভাপতি খায়রুল হুদা চপল, শমী কায়সার, মোহাম্মদ আনোয়ার সাদাত সরকার, ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, মুনির হোসেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর কাজী ছাইদুর রহমান, আবু ফারাহ মো. নাছের প্রমুখ, বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: