ঢাকা , রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বীজ আত্মসাত, দত্তনগর কৃষি খামারের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 135

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: জালিয়াতির মাধ্যমে বীজ আত্মসাতের প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বীজ উৎপাদন খামার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর কৃষি খামারে উৎপাদিত ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৭৫ টাকার ধান ও গমবীজ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আট কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুদক।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুনীতি দমন কমিশনের যশোর অফিসের উপপরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন, যার মামলা নং ৭, ৮ ও ৯।

মামলার আসামিরা হলেন, মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারের সাবেক ও বর্তমান মুন্সিগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল, যশোরের সাবেক ও বর্তমান গাজিপুর বিএডসির আমিন উল্লা, মহেশপুরের গোকুলনগর কৃষি খামারের সাবেক ও বর্তমান দিনাজপুর
বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক তপন কুমার সাহা, মহেশপুরের পাথিলা খামারের সাবেক উপ-পরিচালক ও বর্তমান কিশোরগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান তালুকদার, যশোর বিএডিসির সাবেক ও বর্তমান ফরিদপুরের তাম্বুলখানা খামারের সহকারী পরিচালক আলী হোসেন, মহেশপুরের করিঞ্চা খামারের সাবেক ও বর্তমান ফরিদপুরের তাম্বুলখানার গুদাম রক্ষক রেজাউল কবির, গোকুলনগরের সাবেক গুদামরক্ষক লিয়াকত আলী ও মহেশপুরের পাথিলা খামারের ভারপ্রাপ্ত গুদাম রক্ষক কামরুল আহসান।

মামলার এজাহারে প্রথম মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ ৬২ হাজার ৯৮৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলায় ১ কোটি ৫২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৪১ টাকা ও তৃতীয় মামলায় ৬৭ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, আসামি ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল ঝিনাইদহে ২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী একটি খামারে ৪০ হেক্টর (৯৮.৮ একর) জমিতে ৮০ টন এসএল এইট-এইচ জাতের হাইব্রিড ধানবীজ উৎপাদনের
লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। ওই বীজ উৎপাদনের জন্য বীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিক, জিএ-৩ চাষাবাদ ও অন্যান্য খরচ বাবদ মোট ১ কোটি ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। আসামিরা যোগসাজশে ঝিনাইদহের দত্তনগর খামারে উৎপাদিত ২২.০৩৫ টন বোরো এসএল এইট-এইচ জাতের বীজ ধান ও ৯৩৬৮ কেজি কেজি বারি ৩০ জাতের ধানবীজ আত্মসাৎ করেন।

দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা একই খামারে উৎপাদিত ৭৫.০৭৫ টন বোরো এসএল এইট-এইচ জাতের বীজ ধান, ৪.০৬৯ টন ব্রি-২৮ জাতের ধানবীজ ও ২৬২৫ কেজি বারি ৩০ জাতের ধানবীজ আত্মসাৎ করেন। এই আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আসামিরা গাড়ির লগ বই ও সৃজিত চালান ঘষামাজা করে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাক ডেট বসিয়ে দেন, যা তদন্তে ধরা পড়ে।

এ বিষয়টি দুদক ছাড়াও বিএডিসির গঠিত তদন্ত কমিটির নজরে আসে এবং তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। জালিয়াতির মাধ্যমে বীজ আত্মসাতের প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর দুর্নীতি দমন কমিশন তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিত্বে এই মামলা করলো।

বিজনেস আওয়ার/২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

বীজ আত্মসাত, দত্তনগর কৃষি খামারের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পোস্ট হয়েছে : ০৭:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩

মহেশপুর (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি: জালিয়াতির মাধ্যমে বীজ আত্মসাতের প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারের ৮ কর্মকর্তা-কর্মচারির বিরুদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

এশিয়ার অন্যতম বৃহৎ বীজ উৎপাদন খামার ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার দত্তনগর কৃষি খামারে উৎপাদিত ২ কোটি ৬৮ লাখ ৩১ হাজার ৭৭৫ টাকার ধান ও গমবীজ আত্মসাতের অভিযোগে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশনের (বিএডিসি) আট কর্মকর্তা কর্মচারীর বিরদ্ধে পৃথক তিনটি মামলা করেছে দুদক।

বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুনীতি দমন কমিশনের যশোর অফিসের উপপরিচালক আল আমিন বাদী হয়ে মামলাগুলো দায়ের করেন, যার মামলা নং ৭, ৮ ও ৯।

মামলার আসামিরা হলেন, মহেশপুরের দত্তনগর কৃষি খামারের সাবেক ও বর্তমান মুন্সিগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল, যশোরের সাবেক ও বর্তমান গাজিপুর বিএডসির আমিন উল্লা, মহেশপুরের গোকুলনগর কৃষি খামারের সাবেক ও বর্তমান দিনাজপুর
বিএডিসির যুগ্ম পরিচালক তপন কুমার সাহা, মহেশপুরের পাথিলা খামারের সাবেক উপ-পরিচালক ও বর্তমান কিশোরগঞ্জ বিএডিসির উপ-পরিচালক আক্তারুজ্জামান তালুকদার, যশোর বিএডিসির সাবেক ও বর্তমান ফরিদপুরের তাম্বুলখানা খামারের সহকারী পরিচালক আলী হোসেন, মহেশপুরের করিঞ্চা খামারের সাবেক ও বর্তমান ফরিদপুরের তাম্বুলখানার গুদাম রক্ষক রেজাউল কবির, গোকুলনগরের সাবেক গুদামরক্ষক লিয়াকত আলী ও মহেশপুরের পাথিলা খামারের ভারপ্রাপ্ত গুদাম রক্ষক কামরুল আহসান।

মামলার এজাহারে প্রথম মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে ৪৭ লাখ ৬২ হাজার ৯৮৪ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। আসামিদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় মামলায় ১ কোটি ৫২ লাখ ৭৩ হাজার ৪৪১ টাকা ও তৃতীয় মামলায় ৬৭ লাখ ৯৫ হাজার ৩৫০ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে।

এজাহারে বলা হয়, আসামি ইন্দ্রজিত চন্দ্র শীল ঝিনাইদহে ২০১৮-১৯ উৎপাদন বর্ষে উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী একটি খামারে ৪০ হেক্টর (৯৮.৮ একর) জমিতে ৮০ টন এসএল এইট-এইচ জাতের হাইব্রিড ধানবীজ উৎপাদনের
লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা হয়। ওই বীজ উৎপাদনের জন্য বীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিক, জিএ-৩ চাষাবাদ ও অন্যান্য খরচ বাবদ মোট ১ কোটি ৬ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয় সরকার। আসামিরা যোগসাজশে ঝিনাইদহের দত্তনগর খামারে উৎপাদিত ২২.০৩৫ টন বোরো এসএল এইট-এইচ জাতের বীজ ধান ও ৯৩৬৮ কেজি কেজি বারি ৩০ জাতের ধানবীজ আত্মসাৎ করেন।

দ্বিতীয় মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা একই খামারে উৎপাদিত ৭৫.০৭৫ টন বোরো এসএল এইট-এইচ জাতের বীজ ধান, ৪.০৬৯ টন ব্রি-২৮ জাতের ধানবীজ ও ২৬২৫ কেজি বারি ৩০ জাতের ধানবীজ আত্মসাৎ করেন। এই আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে আসামিরা গাড়ির লগ বই ও সৃজিত চালান ঘষামাজা করে জালিয়াতির মাধ্যমে ব্যাক ডেট বসিয়ে দেন, যা তদন্তে ধরা পড়ে।

এ বিষয়টি দুদক ছাড়াও বিএডিসির গঠিত তদন্ত কমিটির নজরে আসে এবং তারা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে অবহিত করেন। জালিয়াতির মাধ্যমে বীজ আত্মসাতের প্রায় সাড়ে ৩ বছর পর দুর্নীতি দমন কমিশন তথ্য ও সাক্ষ্য প্রমানের ভিত্তিত্বে এই মামলা করলো।

বিজনেস আওয়ার/২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: