ঢাকা , রবিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১৪ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একই কবরস্থানে শায়িত হলো হোসাইনের মা-বাবা ও বোন

  • পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 51

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: জীবিকার তাগিদে চার বছর আগে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মিজান। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রী মুক্তা (২৫) আর সাত বছরের মেয়ে লিমা আক্তার ও সাত মাস বসয়ী ছেলে হোসাইনকে নিয়ে ঝিলপাড় বস্তি এলাকায় মিজানের শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মিরপুরে জলাবদ্ধতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে মিজান, তার স্ত্রী ও মেয়ে। এই ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে সাত মাসের ছেলে হোসাইন।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরপাশা গ্রামে নিহত তিনজনের একসঙ্গে জানাজা শেষে একই কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

নিহত মিজানের বড় ভাই আরিফুর রহমান বলেন, আমার ভাইঝি সাত বছরের লিমাকে মাঝখানে রেখে দুই পাশে ওর মা-বাবাকে দাফন করা হয়েছে। জানাজাও লিমাকে মাঝখানে রেখে মিজান আর ও স্ত্রীকে দুই পাশে রেখে একসঙ্গে নামাজ আদায় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আল্লাহর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তবে যাদের কারণে এমন পরিণতি হলো, আমার ভাইয়ের পরিবারটি একেবারে নিভে গেল তাদেরও যেন আল্লাহ বিচার করেন। আমরা এই শোক কিভাবে কাটিয়ে উঠব জানি না। মিজানকে বুকে-পিঠে করে ছোটবেলা থেকে বড় করেছি। সেই মিজান ঘুমিয়ে গেল চিরতরে।

স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। শুধু আমরা নই দেশবাসী কেউ এমন মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ঘটনাকে মেনে নিতে পারেনি। একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। মিজানদের জানাজা দাফনের খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে লোক এসেছে। জানাজায় আসা প্রতিটি মানুষ কেঁদেছে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে অতিবৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যায়। মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের। তাদের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরনপাশা গ্রামে। তারা হলেন- মিজান, তার স্ত্রী মুক্ত ও সাত বছরের মেয়ে লিমা। মিজান-মুক্তা দম্পতির ৭ মাসের ছেলে পানিতে ডুবে গেলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে। তাকে দাদা নাসির হাওলাদারের তত্ত্বাবধায়নে রাখা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

একই কবরস্থানে শায়িত হলো হোসাইনের মা-বাবা ও বোন

পোস্ট হয়েছে : ০৩:৫১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: জীবিকার তাগিদে চার বছর আগে স্ত্রী ও মেয়েকে নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমিয়েছিলেন মিজান। ভালোই চলছিল তাদের সংসার। গত বৃহস্পতিবার স্ত্রী মুক্তা (২৫) আর সাত বছরের মেয়ে লিমা আক্তার ও সাত মাস বসয়ী ছেলে হোসাইনকে নিয়ে ঝিলপাড় বস্তি এলাকায় মিজানের শ্বশুরবাড়িতে দাওয়াত খেতে গিয়েছিলেন। সেখান থেকে বাড়ি ফেরার পথে মিরপুরে জলাবদ্ধতায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে প্রাণ গেছে মিজান, তার স্ত্রী ও মেয়ে। এই ঘটনায় অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে সাত মাসের ছেলে হোসাইন।

শনিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে ঝালকাঠি সদর উপজেলার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরপাশা গ্রামে নিহত তিনজনের একসঙ্গে জানাজা শেষে একই কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

নিহত মিজানের বড় ভাই আরিফুর রহমান বলেন, আমার ভাইঝি সাত বছরের লিমাকে মাঝখানে রেখে দুই পাশে ওর মা-বাবাকে দাফন করা হয়েছে। জানাজাও লিমাকে মাঝখানে রেখে মিজান আর ও স্ত্রীকে দুই পাশে রেখে একসঙ্গে নামাজ আদায় করা হয়েছে।

তিনি বলেন, আল্লাহর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। তবে যাদের কারণে এমন পরিণতি হলো, আমার ভাইয়ের পরিবারটি একেবারে নিভে গেল তাদেরও যেন আল্লাহ বিচার করেন। আমরা এই শোক কিভাবে কাটিয়ে উঠব জানি না। মিজানকে বুকে-পিঠে করে ছোটবেলা থেকে বড় করেছি। সেই মিজান ঘুমিয়ে গেল চিরতরে।

স্থানীয় বাসিন্দা তৌহিদুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি খুবই হৃদয়বিদারক। আমরা কেউ মেনে নিতে পারছি না। শুধু আমরা নই দেশবাসী কেউ এমন মর্মান্তিক হৃদয়বিদারক ঘটনাকে মেনে নিতে পারেনি। একটি পরিবার ধ্বংস হয়ে গেল। মিজানদের জানাজা দাফনের খবর শুনে দূর-দূরান্ত থেকে লোক এসেছে। জানাজায় আসা প্রতিটি মানুষ কেঁদেছে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাতে অতিবৃষ্টিতে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক তলিয়ে যায়। মিরপুরের ঢাকা কমার্স কলেজ সংলগ্ন ঝিলপাড় বস্তির সামনের সড়কে জমে থাকা পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চারজনের মৃত্যু হয়। এর মধ্যে তিনজন একই পরিবারের। তাদের বাড়ি ঝালকাঠি সদর উপজেলার বাসন্ডা ইউনিয়নের আগরনপাশা গ্রামে। তারা হলেন- মিজান, তার স্ত্রী মুক্ত ও সাত বছরের মেয়ে লিমা। মিজান-মুক্তা দম্পতির ৭ মাসের ছেলে পানিতে ডুবে গেলেও ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছে। তাকে দাদা নাসির হাওলাদারের তত্ত্বাবধায়নে রাখা হয়েছে।

বিজনেস আওয়ার/২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: