ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দাফনের ৫ দিন পর জীবিত ফিরলেন গৃহবধূ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 62

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় লাশ দাফনের পাঁচদিন পর হাসি বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার করেছে সদরপুর থানা পুলিশ।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে ওই গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার করে ফরিদপুরের সদরপুর থানায় নেওয়া হয়।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন গৃহবধূ। পরে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাংগা উপজেলার নাউটানা এলাকার একটি পুকুর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হাসির মা সালমা বেগম মরদেহটি নিজের মেয়ের বলে শনাক্ত করে। লাশটির ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে শোলডুবি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর মাঝে ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি তার মাকে ফোন করে জীবিত থাকার কথা জানায়। এরপর সদরপুর থানা পুলিশ গতকাল সোমবার হাসিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করে ফরিদপুরে নিয়ে যায়।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও সদরপুর থানা সূত্রে জানা যায়, সদরপুর উপজেলার শৌলডুবি গ্রামের হাসি বেগমের সঙ্গে ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর গ্রামের মাতালেব শেখের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে ৭ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান মেয়ের নিখোঁজের ঘটনায় সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে হাসিকে তার স্বামী শেখ মোতালেব হত্যা করে লাশ গুম করেছে বলে উল্লেখ করেন হাবিবুর।

এরপর হাসির স্বামী শেখ মোতালেব থানায় পাল্টা অভিযোগ দেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী হাসি বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছে। এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাংগা উপজেলার নাউটানা এলাকার একটি পুকুর থেকে অর্ধগলিত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে সদরপুর থানা পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহটি মেয়ের বলে শনাক্ত করে। পরে ওই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. গফ্ফার শিকদার বলেন, এরকম একটি খবর আমি শুনেছি। গত কয়েক দিন আগে স্থানীয়ভাবে জানলাম হাসির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে সেই লাশটি পরিবারের লোকজন স্থানীয় একটি কবরস্থানে দাফন করে। হঠাৎ আজ শুনলাম হাসি বেচে আছে। বর্তমানে সদরপুর থানা থেকে হাসিকে তার বাবা নিয়ে এসেছে। বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে হাসির মা সালমা বেগম জানান, ভাংগা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের নাউটানা এলাকার পুকুর থেকে যে অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে সেই মরদেহটি আমি শনাক্ত করিনি। আমি অনেকভাবেই চেষ্টা করেছি বুঝাতে যে এটা আমার মেয়ের মরদেহ নয়। পরে উপস্থিত অনেকেই আমাকে মরদেহটি হাসির বলে জানাতে থাকে। পরে এক পর্যায়ে লাশটি স্থানীয় মাদ্রাসার কবরস্থানে পুলিশের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়। তবে এ বিষয়ে হাসির বাবার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

এ বিষয়ে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব না। ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা জড়িত। ফলে সব তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

দাফনের ৫ দিন পর জীবিত ফিরলেন গৃহবধূ

পোস্ট হয়েছে : ০৪:১৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় লাশ দাফনের পাঁচদিন পর হাসি বেগম (২৪) নামের এক গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার করেছে সদরপুর থানা পুলিশ।

সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে ওই গৃহবধূকে জীবিত উদ্ধার করে ফরিদপুরের সদরপুর থানায় নেওয়া হয়।

এর আগে গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হয়েছিলেন গৃহবধূ। পরে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাংগা উপজেলার নাউটানা এলাকার একটি পুকুর থেকে এক নারীর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিখোঁজ হাসির মা সালমা বেগম মরদেহটি নিজের মেয়ের বলে শনাক্ত করে। লাশটির ময়নাতদন্ত ও আইনি প্রক্রিয়া শেষে শোলডুবি কবরস্থানে দাফন করা হয়।

এর মাঝে ২৩ সেপ্টেম্বর হাসি তার মাকে ফোন করে জীবিত থাকার কথা জানায়। এরপর সদরপুর থানা পুলিশ গতকাল সোমবার হাসিকে ময়মনসিংহের নান্দাইল থেকে উদ্ধার করে ফরিদপুরে নিয়ে যায়।

স্থানীয় এলাকাবাসী ও সদরপুর থানা সূত্রে জানা যায়, সদরপুর উপজেলার শৌলডুবি গ্রামের হাসি বেগমের সঙ্গে ৮ বছর আগে একই উপজেলার চরবিষ্ণুপুর গ্রামের মাতালেব শেখের বিয়ে হয়। তাদের পরিবারে ৭ বছরের একটি সন্তান রয়েছে। গত ৭ সেপ্টেম্বর হাসি বেগম বিদ্যুৎ বিল দেওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। এরপর হাসির বাবা শেখ হাবিবুর রহমান মেয়ের নিখোঁজের ঘটনায় সদরপুর থানায় একটি অভিযোগ দেন। অভিযোগে হাসিকে তার স্বামী শেখ মোতালেব হত্যা করে লাশ গুম করেছে বলে উল্লেখ করেন হাবিবুর।

এরপর হাসির স্বামী শেখ মোতালেব থানায় পাল্টা অভিযোগ দেন। তিনি অভিযোগ করেন, তার স্ত্রী হাসি বাড়ি থেকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালঙ্কারসহ ১০ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে বাবার বাড়িতে পালিয়ে গেছে। এমন পাল্টাপাল্টি অভিযোগের পরে ২০ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ভাংগা উপজেলার নাউটানা এলাকার একটি পুকুর থেকে অর্ধগলিত এক নারীর মরদেহ উদ্ধার করে সদরপুর থানা পুলিশ। পরবর্তীতে নিখোঁজ হাসি বেগমের মা সালমা বেগম মরদেহটি মেয়ের বলে শনাক্ত করে। পরে ওই লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।

এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের ৭ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য মো. গফ্ফার শিকদার বলেন, এরকম একটি খবর আমি শুনেছি। গত কয়েক দিন আগে স্থানীয়ভাবে জানলাম হাসির মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পরে সেই লাশটি পরিবারের লোকজন স্থানীয় একটি কবরস্থানে দাফন করে। হঠাৎ আজ শুনলাম হাসি বেচে আছে। বর্তমানে সদরপুর থানা থেকে হাসিকে তার বাবা নিয়ে এসেছে। বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে হচ্ছে।

বিষয়টি নিয়ে হাসির মা সালমা বেগম জানান, ভাংগা উপজেলার মানিকদহ ইউনিয়নের নাউটানা এলাকার পুকুর থেকে যে অর্ধগলিত নারীর মরদেহ উদ্ধার করে সেই মরদেহটি আমি শনাক্ত করিনি। আমি অনেকভাবেই চেষ্টা করেছি বুঝাতে যে এটা আমার মেয়ের মরদেহ নয়। পরে উপস্থিত অনেকেই আমাকে মরদেহটি হাসির বলে জানাতে থাকে। পরে এক পর্যায়ে লাশটি স্থানীয় মাদ্রাসার কবরস্থানে পুলিশের উপস্থিতিতে দাফন করা হয়। তবে এ বিষয়ে হাসির বাবার সঙ্গে কথা বলা যায়নি।

এ বিষয়ে সদরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মামুন আল রশিদ বলেন, হাসি বেগমকে ময়মনসিংহের নান্দাইল এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। বর্তমানে তাকে তার পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এখনই এ বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য জানানো সম্ভব না। ঘটনাটি ভাঙ্গা ও সদরপুর থানা জড়িত। ফলে সব তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত এ বিষয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

বিজনেস আওয়ার/২৬ সেপ্টেম্বর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: