ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

‘প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচাতে রবিউলকে ফাঁসানো হয়েছে’

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০
  • 68

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (দিনাজপুর): দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় রবিউল জড়িত নন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। রবিউলের পরিবারের অভিযোগ- প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যে রবিউলকে বর্ণিত মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন দাবি করেন রবিউলের ভাই রশিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে রবিউলের ভাই রশিদুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ঘোড়াঘাট ইউএনও কার্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর থেকেই রবিউল ইসলাম বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার সময় নিজ বাসভবনে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন ইউএনও ও তার বাবা। যার সঙ্গে আমার ছোট ভাই রবিউল ইসলামের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই।

আমরা ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মারফত বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে বিভিন্ন জনের নাম জানতে পারি যা গোটা দেশবাসী মিডিয়ার মাধ্যমে অবগত হয়েছেন। এরই এক পর্যায়ে হঠাৎ করে ডিবি পুলিশ আমার ছোট ভাই রবিউলকে আমাদের বাড়ি থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে ধরে নিয়ে যায়।

তিন দিন পর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার মামলায় ডিবি পুলিশ আমার ভাইকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নিয়ে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে রবিউল একাই মেরেছে বলে আদালতে জবানবন্দি প্রদানে বাধ্য করেছে।

প্রকৃতপক্ষে আমার ছোট ভাই রবিউল বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে কোনো কিছু জানে না এবং সে ওই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিল না। প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যে আমার ছোট ভাই রবিউলকে বর্ণিত মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা বিষয়টির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীর বিচার কামনা করছি।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর নারাজীর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত আসামিদের বিচার দাবি করছি। ওই দিন রাতে তারা সব ভাই মিলে একসঙ্গে ভাত খেয়েছেন।

এ সময় রবিউলের গ্রামের স্থানীয়রা বলেন, ঘটনার আগের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত রবিউলকে এলাকায় দেখেছেন তারা। আবার পরের দিন সকাল ৬টার সময়ও মুসল্লিরা তাকে এলাকায় দেখেছেন। ৩ তারিখ সকালে রবিউলকে তার নিজ জমিতে ঘাস নিড়ানি করতে দেখেছেন। রবিউল ঘোড়াঘাটে যাননি বলেও দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- রবিউলের মা রহিমা বেগম, ভাই রহিদুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, প্রতিবেশী আব্দুল মালেক, প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রায় অর্ধশত এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, ইউএনও ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন বিরল উপজেলার ধামাহার গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিন আহাম্মেদের ছেলে রবিউল ইসলাম। গত ১২ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত আদালতের আদেশে ডিবি পুলিশের হেফাজতে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিলেন তিনি। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট ইউএনও ও তার বাবার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

বিজনেস আওয়ার/২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

‘প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচাতে রবিউলকে ফাঁসানো হয়েছে’

পোস্ট হয়েছে : ০২:২৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক (দিনাজপুর): দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় রবিউল জড়িত নন বলে দাবি করেছে তার পরিবার। রবিউলের পরিবারের অভিযোগ- প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যে রবিউলকে বর্ণিত মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় দিনাজপুর প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এমন দাবি করেন রবিউলের ভাই রশিদুল ইসলাম।

সংবাদ সম্মেলনে রবিউলের ভাই রশিদুল ইসলাম বলেন, চলতি বছরের ১১ জানুয়ারি ঘোড়াঘাট ইউএনও কার্যালয় থেকে সাময়িক বরখাস্ত করার পর থেকেই রবিউল ইসলাম বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত আনুমানিক ২টার সময় নিজ বাসভবনে সন্ত্রাসীদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর জখম হয়েছেন ইউএনও ও তার বাবা। যার সঙ্গে আমার ছোট ভাই রবিউল ইসলামের কোনো প্রকার সংশ্লিষ্টতা নেই।

আমরা ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার মারফত বর্ণিত ঘটনার সঙ্গে জড়িত মর্মে বিভিন্ন জনের নাম জানতে পারি যা গোটা দেশবাসী মিডিয়ার মাধ্যমে অবগত হয়েছেন। এরই এক পর্যায়ে হঠাৎ করে ডিবি পুলিশ আমার ছোট ভাই রবিউলকে আমাদের বাড়ি থেকে গত ৯ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাত ১টা ৩০ মিনিটে ধরে নিয়ে যায়।

তিন দিন পর মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবার ওপর হামলার মামলায় ডিবি পুলিশ আমার ভাইকে গ্রেফতার দেখিয়ে তাকে রিমান্ডে নিয়ে তার উপর চাপ সৃষ্টি করে। পরে ইউএনও ওয়াহিদা খানম ও তার বাবাকে রবিউল একাই মেরেছে বলে আদালতে জবানবন্দি প্রদানে বাধ্য করেছে।

প্রকৃতপক্ষে আমার ছোট ভাই রবিউল বর্ণিত ঘটনার বিষয়ে কোনো কিছু জানে না এবং সে ওই ঘটনার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত ছিল না। প্রকৃত সন্ত্রাসীদেরকে বাঁচানোর অসৎ উদ্দেশ্যে আমার ছোট ভাই রবিউলকে বর্ণিত মামলায় ফাঁসানো হয়েছে। আমরা বিষয়টির সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্তপূর্বক মামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িত প্রকৃত অপরাধীর বিচার কামনা করছি।

স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দীর নারাজীর ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। কিন্তু আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক প্রকৃত আসামিদের বিচার দাবি করছি। ওই দিন রাতে তারা সব ভাই মিলে একসঙ্গে ভাত খেয়েছেন।

এ সময় রবিউলের গ্রামের স্থানীয়রা বলেন, ঘটনার আগের দিন রাত ৮টা পর্যন্ত রবিউলকে এলাকায় দেখেছেন তারা। আবার পরের দিন সকাল ৬টার সময়ও মুসল্লিরা তাকে এলাকায় দেখেছেন। ৩ তারিখ সকালে রবিউলকে তার নিজ জমিতে ঘাস নিড়ানি করতে দেখেছেন। রবিউল ঘোড়াঘাটে যাননি বলেও দাবি করেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- রবিউলের মা রহিমা বেগম, ভাই রহিদুল ইসলাম, আজিজুর রহমান, প্রতিবেশী আব্দুল মালেক, প্রতিবেশী জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রায় অর্ধশত এলাকাবাসী।

উল্লেখ্য, ইউএনও ও তার বাবার ওপর হামলার ঘটনায় দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করেন বিরল উপজেলার ধামাহার গ্রামের মৃত খতিব উদ্দিন আহাম্মেদের ছেলে রবিউল ইসলাম। গত ১২ তারিখ থেকে ২০ তারিখ পর্যন্ত আদালতের আদেশে ডিবি পুলিশের হেফাজতে ৯ দিনের রিমান্ডে ছিলেন তিনি। এর আগে গত ২ সেপ্টেম্বর দিবাগত রাতে ঘোড়াঘাট ইউএনও ও তার বাবার উপর হামলার ঘটনা ঘটে।

বিজনেস আওয়ার/২৯ সেপ্টেম্বর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: