ঢাকা , রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যেভাবে জঙ্গিবাদে যোগ দেন আনসার আল ইসলামের ৫ কর্মী

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • 58

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন বর্তমান সময়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে আনসার আল ইসলামই সাধারণত সক্রিয়। সংগঠনটি ঘিরে সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছিলো, আমরা মনে করি সংগঠনের আমিরসহ নেতৃত্ব পর্যায়ের ৫ জনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমরা তা অনেকটাই নিউট্রাল করতে পেরেছি।

রোববার ৮ অক্টোবর দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এব কথা বলেন।

শনিবার ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির সাখাওয়াতুল কবির ওরফে আনিস ওরফে রফিক (৪৫), সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার ইহসানূর রহমান ওরফে মুরাদ ওরফে সাইফ (২৬), বখতিয়ার রহমান ওরফে নাজমুল (৩০), ইউসুফ আলী সরকার (৩১) ও জাহেদুল ইসলাম ওরফে আশ্রাফ (৩৫)।

আনসার আল ইসলামের গ্রেপ্তার যারা
সাখাওয়াতুল কবির ২০০২ সালে আনসার আল ইসলামের মাতৃ সংগঠন জামিয়াতুল মুসলিমিনে যোগদানের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায়। আনসার আল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা এজাজ কারগিলের মাধ্যমে রেডিক্যালাইজড হয়ে সংগঠনে যোগ দেয়। এরপর থেকে আমির এজাজ কারগিলের সঙ্গেই থাকতেন। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে ড্রোন হামলায় মারা যান। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে কারগিলের মাকে নিয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলেন।

২০১৫ সালে ডিবি তাকে গ্রেপ্তার করে, ১৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সংগঠনে যুক্ত হয়ে কার্যক্রম শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যে সংগঠনের সূরা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। শারক্বিয়ার উত্থানের সময় সাখাওয়াতুলকে আনসার আল ইসলাম থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। এরপর শারক্বিয়ার প্রধান শামিন মাহফুজ ও সাখাওয়াতুলের মধ্যে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে মিটিংয়ের নেতৃত্ব দিতেন শাখায়াতুল কবির।

আনসার আল ইসলাম যে শারক্বিয়াকে টাকা দিয়েছিল সেই টাকা এবং মাসিক একটা খরচের টাকাও শামিন মাহফুজকে দিতেন সাখাওয়াতুল।

ইছাননূর রহমান সাইফ সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার। ২০ সালে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেক্সটাইলে মাস্টার্স সম্পন্ন করে। ১৭ সাল থেকে সংগঠনে সক্রিয় হন তিনি। ২২ সালে তাকে এ অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাইফ সংগঠনের ফুলটাইম মেম্বার। আত্মগোপনে থেকে আসকারী শাখার অন্য সদস্যদের প্রশিক্ষণ, নতুন সদস্য রিক্রুট কাজগুলো তার নেতৃত্বে হতো।

বখতিয়ার রহমান, সাভারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ও হোমিও প্র্যাকটিস করতেন। কিছুদিন আগে সিটিটিসি একজনকে রোগী সাজিয়ে তার বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পেরে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে সে সবকিছু ফেলে আত্মগোপণে চলে যায়। গতকাল অন্যদের গ্রেপ্তারের সময় বখতিয়ারকেও পাওয়া গেছে।

আশ্রাফ জয়দেবপুর অঞ্চলের দাওয়াহ বিভাগের প্রধান। ঢাকার আশে-পাশে বেশ আনসার ইসলামের বেশ কয়েকটি সেল রয়েছে। এরমধ্যে সাভার অঞ্চলের একটি সেলের দায়িত্ব ছিলো আশ্রাফের। ১৫ সালে ঢাকা কলেজে অনার্স পড়াকালীন সংগঠনে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি ঢাকার একটি স্কুলে তার নিয়োগ হয়েছিল।

বিজনেস আওয়ার/০৮ অক্টোবর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

যেভাবে জঙ্গিবাদে যোগ দেন আনসার আল ইসলামের ৫ কর্মী

পোস্ট হয়েছে : ০৫:০২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেছেন বর্তমান সময়ে জঙ্গি সংগঠনগুলোর মধ্যে আনসার আল ইসলামই সাধারণত সক্রিয়। সংগঠনটি ঘিরে সামনে যে চ্যালেঞ্জ ছিলো, আমরা মনে করি সংগঠনের আমিরসহ নেতৃত্ব পর্যায়ের ৫ জনকে গ্রেপ্তারের মাধ্যমে আমরা তা অনেকটাই নিউট্রাল করতে পেরেছি।

রোববার ৮ অক্টোবর দুপুরে ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এব কথা বলেন।

শনিবার ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানাধীন কাজলা এলাকা থেকে আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির ও তার চার সহযোগীকে গ্রেপ্তার করেছে সিটিটিসি।

গ্রেপ্তাররা হলেন- আনসার আল ইসলামের নায়েবে আমির সাখাওয়াতুল কবির ওরফে আনিস ওরফে রফিক (৪৫), সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার ইহসানূর রহমান ওরফে মুরাদ ওরফে সাইফ (২৬), বখতিয়ার রহমান ওরফে নাজমুল (৩০), ইউসুফ আলী সরকার (৩১) ও জাহেদুল ইসলাম ওরফে আশ্রাফ (৩৫)।

আনসার আল ইসলামের গ্রেপ্তার যারা
সাখাওয়াতুল কবির ২০০২ সালে আনসার আল ইসলামের মাতৃ সংগঠন জামিয়াতুল মুসলিমিনে যোগদানের মাধ্যমে জঙ্গিবাদে জড়ায়। আনসার আল ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা এজাজ কারগিলের মাধ্যমে রেডিক্যালাইজড হয়ে সংগঠনে যোগ দেয়। এরপর থেকে আমির এজাজ কারগিলের সঙ্গেই থাকতেন। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে ড্রোন হামলায় মারা যান। এজাজ কারগিল পাকিস্তানে থাকা অবস্থায় ২০১৪ সালে কারগিলের মাকে নিয়ে পাকিস্তান গিয়েছিলেন।

২০১৫ সালে ডিবি তাকে গ্রেপ্তার করে, ১৮ সালে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবার সংগঠনে যুক্ত হয়ে কার্যক্রম শুরু করে। অল্পদিনের মধ্যে সংগঠনের সূরা সদস্য হিসেবে নির্বাচিত হন। শারক্বিয়ার উত্থানের সময় সাখাওয়াতুলকে আনসার আল ইসলাম থেকে দায়িত্ব দেওয়া হয় তাদের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য। এরপর শারক্বিয়ার প্রধান শামিন মাহফুজ ও সাখাওয়াতুলের মধ্যে একাধিকবার মিটিং হয়েছে। আনসার আল ইসলামের পক্ষ থেকে মিটিংয়ের নেতৃত্ব দিতেন শাখায়াতুল কবির।

আনসার আল ইসলাম যে শারক্বিয়াকে টাকা দিয়েছিল সেই টাকা এবং মাসিক একটা খরচের টাকাও শামিন মাহফুজকে দিতেন সাখাওয়াতুল।

ইছাননূর রহমান সাইফ সংগঠনের আশকারী বিভাগের ঢাকা অঞ্চলের কমান্ডার। ২০ সালে ড্যাফোডিল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে টেক্সটাইলে মাস্টার্স সম্পন্ন করে। ১৭ সাল থেকে সংগঠনে সক্রিয় হন তিনি। ২২ সালে তাকে এ অঞ্চলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সাইফ সংগঠনের ফুলটাইম মেম্বার। আত্মগোপনে থেকে আসকারী শাখার অন্য সদস্যদের প্রশিক্ষণ, নতুন সদস্য রিক্রুট কাজগুলো তার নেতৃত্বে হতো।

বখতিয়ার রহমান, সাভারে বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন ও হোমিও প্র্যাকটিস করতেন। কিছুদিন আগে সিটিটিসি একজনকে রোগী সাজিয়ে তার বাড়িতে পাঠায়। কিন্তু বিষয়টি বুঝতে পেরে মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে সে সবকিছু ফেলে আত্মগোপণে চলে যায়। গতকাল অন্যদের গ্রেপ্তারের সময় বখতিয়ারকেও পাওয়া গেছে।

আশ্রাফ জয়দেবপুর অঞ্চলের দাওয়াহ বিভাগের প্রধান। ঢাকার আশে-পাশে বেশ আনসার ইসলামের বেশ কয়েকটি সেল রয়েছে। এরমধ্যে সাভার অঞ্চলের একটি সেলের দায়িত্ব ছিলো আশ্রাফের। ১৫ সালে ঢাকা কলেজে অনার্স পড়াকালীন সংগঠনে জড়িয়ে পড়ে। সম্প্রতি ঢাকার একটি স্কুলে তার নিয়োগ হয়েছিল।

বিজনেস আওয়ার/০৮ অক্টোবর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: