ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ঝিনাইদহে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা

  • পোস্ট হয়েছে : ০৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩
  • 71

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদীয় দুর্গা পুজা। আর এই সারদীয় পুজা উপলক্ষে ঝিনাইদহে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। জেলার বিভিন্ন পুজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ের দিকে। বেশিরভাগ মন্দীরে প্রতিমা রংয়ের কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীদের আয় কিছুটা বেড়ে যাওযায় তারা অনেকটা খুশিতে রয়েছে।

গত বছরের তুলনায় এবার পুজা মন্ডপের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮২টি। এ উৎসব শান্তিপুর্নভাবে শেষ করতে চায় পুজা কমিটি। জেলা পুলিশ মন্দিরে সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রেখেছে। যাতে শান্তিপুর্নভবে এ উৎসব শুরু থেকে শেষ করতে পারে।

জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহে ঢাকের আওয়াজ আর বাতাস যেন জানান দিবে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। এ মাসের ২০ তারিখে সনাতন ধর্মের বড় উৎসব সারদীয় দুর্গা পুজা। আর তখন সর্বত্র চলবে মা’ দুর্গার আরাধনা। স্বর্গ থেকে ধরনীতে আসবেন দেবী দুর্গা। আর তাই কারিগরদের নিপুন হাতে গড়ে উঠছে মা’ দুর্গার প্রতিমা।

এ জেলার ৬টি উপজেলাতে গত বছর ৪শত ৩১টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর তার সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮২টি। তারা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কোন অরাজকতা ছাড়াই উৎসব শুরু থেকে শেষ ভালো ভাবে করতে চায়। কোন সহিংসতা যেনো না হয় সেইটি প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

তাই দেবী দুর্গার আগমন উপলক্ষে ঝিনাইদহ জেলা শহরের হামদহ কালীতলা, কেন্দ্রীয় বারোয়ারী, চাকলাপাড়া, উত্তর চাকলাপাড়া, মডার্ন পাড়া, ব্যাপড়িপাড়া সহ জেলার পুজা মন্দির গুলোতে প্রতিমা তৈরিতে শেষ মহুর্ত্তের ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা।

এ বছরের দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারনে পুজা উদযাপন কমিটি পুলিশের সহযোগিতায় নিজেরা রাতে পাহারা দিয়ে শান্তিপুর্নভাবে উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে প্রতিমা শিল্পী বিজয় কৃঞ্চ, সবুজ বিশ^াস জানান, এ উৎসবে এবার মনের মাধুরি মিশিয়ে আমরা মন্দিরে রংয়ের কাজ করে চলেছি। শিল্পীরা সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরী করে থাকেন। প্রতিমা সৌন্দর্য ভেদে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয় এ সকল কারিগরদের। তারা রাত দিন পরিশ্রম করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা পুজার আগেই কমিটির নেতাদের কাছে বুঝিয়ে দিবেন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার তাদের অর্থ বেশি আয় হচ্ছে।

হামদহ কালীতলা মন্দিরের পুরোহিত নারায়ন ভট্রাচার্য জানান, তারা পুজা প্রতিবছর ভালোভাবেই শেষ করতে পারেন। তবে দেশের অনান্য স্থানে মন্দিরে কয়েকটি বিচ্ছন্ন ঘটনার কারনে তারা কিছুটা আতংকিত হলেও পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। তারা আশা করেন এবারও তাদের উৎসব করতে পারবেন শান্তিতে।

মন্দির কমিটির নেতা সঞ্জয় জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিীষের মুল্য বেশি হওয়ার কারনে তাদের খরচ বেশি। মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবকদের পাহারা দেওয়াসহ প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন। তারা চান এমন নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তারা এ উৎসব শেষ করতে, তেমনি বরাবরের মতোই সকল ধর্মের সহযোগিতা নিয়েই তারা পালন করতে চান ।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার আজিম-উল আহসান জানান, সবচাইতে হিন্দুদের বড় উৎসব শারদিয় দুর্গা পুজা আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ করার জন্য জেলার ৪৮২টি মন্দিরে এক হাজার পুলিশের পাশাপাশি, আনসার সদস্য, র‌্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে থাকবে। নিরাপত্তার জন্য বেশির ভাগ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আর যদি কেও কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনার চেষ্টা চালানো হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিকে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিনয় কৃঞ্চ বিশ^াস জানান, জেলার ৬টি উপজেলাতে পুজার সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তারা সকল ধর্মের মানুষের নিয়েই এ উৎসব পালন করতে চান। এ কারনে সবাইকে পাশে থাকার আহবান জানান।

বিজনেস আওয়ার/১২ অক্টোবর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ঝিনাইদহে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা

পোস্ট হয়েছে : ০৮:২৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ অক্টোবর ২০২৩

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সব থেকে বড় ধর্মীয় উৎসব সারদীয় দুর্গা পুজা। আর এই সারদীয় পুজা উপলক্ষে ঝিনাইদহে ব্যস্ত সময় পার করছেন প্রতিমা তৈরির কারিগররা। জেলার বিভিন্ন পুজা মন্দিরে প্রতিমা তৈরির কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ের দিকে। বেশিরভাগ মন্দীরে প্রতিমা রংয়ের কাজ চলছে। প্রতিমা শিল্পীদের আয় কিছুটা বেড়ে যাওযায় তারা অনেকটা খুশিতে রয়েছে।

গত বছরের তুলনায় এবার পুজা মন্ডপের সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮২টি। এ উৎসব শান্তিপুর্নভাবে শেষ করতে চায় পুজা কমিটি। জেলা পুলিশ মন্দিরে সিসি ক্যামেরাসহ নিরাপত্তার চাদরে ডেকে রেখেছে। যাতে শান্তিপুর্নভবে এ উৎসব শুরু থেকে শেষ করতে পারে।

জেলা পুজা উদযাপন পরিষদ সুত্রে জানা যায়, ঝিনাইদহে ঢাকের আওয়াজ আর বাতাস যেন জানান দিবে দেবী দুর্গার আগমনী বার্তা। এ মাসের ২০ তারিখে সনাতন ধর্মের বড় উৎসব সারদীয় দুর্গা পুজা। আর তখন সর্বত্র চলবে মা’ দুর্গার আরাধনা। স্বর্গ থেকে ধরনীতে আসবেন দেবী দুর্গা। আর তাই কারিগরদের নিপুন হাতে গড়ে উঠছে মা’ দুর্গার প্রতিমা।

এ জেলার ৬টি উপজেলাতে গত বছর ৪শত ৩১টি মন্দিরে পুজা অনুষ্ঠিত হলেও এ বছর তার সংখ্যা বেড়ে দাড়িয়েছে ৪৮২টি। তারা প্রশাসনসহ সবার সহযোগিতা নিয়ে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও কোন অরাজকতা ছাড়াই উৎসব শুরু থেকে শেষ ভালো ভাবে করতে চায়। কোন সহিংসতা যেনো না হয় সেইটি প্রশাসনের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষন করেন।

তাই দেবী দুর্গার আগমন উপলক্ষে ঝিনাইদহ জেলা শহরের হামদহ কালীতলা, কেন্দ্রীয় বারোয়ারী, চাকলাপাড়া, উত্তর চাকলাপাড়া, মডার্ন পাড়া, ব্যাপড়িপাড়া সহ জেলার পুজা মন্দির গুলোতে প্রতিমা তৈরিতে শেষ মহুর্ত্তের ব্যস্ত সময় পার করছে কারিগররা।

এ বছরের দেশের বিভিন্ন স্থানে কয়েকটি বিচ্ছিন্ন ঘটনার কারনে পুজা উদযাপন কমিটি পুলিশের সহযোগিতায় নিজেরা রাতে পাহারা দিয়ে শান্তিপুর্নভাবে উৎসবের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ বিষয়ে প্রতিমা শিল্পী বিজয় কৃঞ্চ, সবুজ বিশ^াস জানান, এ উৎসবে এবার মনের মাধুরি মিশিয়ে আমরা মন্দিরে রংয়ের কাজ করে চলেছি। শিল্পীরা সর্বোচ্চ ৫ থেকে ৬টি মন্দিরে প্রতিমা তৈরী করে থাকেন। প্রতিমা সৌন্দর্য ভেদে ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হয় এ সকল কারিগরদের। তারা রাত দিন পরিশ্রম করে ব্যস্ত সময় পার করছেন। তারা পুজার আগেই কমিটির নেতাদের কাছে বুঝিয়ে দিবেন। তবে গত বছরের তুলনায় এবার তাদের অর্থ বেশি আয় হচ্ছে।

হামদহ কালীতলা মন্দিরের পুরোহিত নারায়ন ভট্রাচার্য জানান, তারা পুজা প্রতিবছর ভালোভাবেই শেষ করতে পারেন। তবে দেশের অনান্য স্থানে মন্দিরে কয়েকটি বিচ্ছন্ন ঘটনার কারনে তারা কিছুটা আতংকিত হলেও পুলিশ ও প্রশাসনের সহযোগিতা চেয়েছেন। তারা আশা করেন এবারও তাদের উৎসব করতে পারবেন শান্তিতে।

মন্দির কমিটির নেতা সঞ্জয় জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিীষের মুল্য বেশি হওয়ার কারনে তাদের খরচ বেশি। মন্দিরে স্বেচ্ছাসেবকদের পাহারা দেওয়াসহ প্রশাসন ও পুলিশের সহযোগিতা তারা পাচ্ছেন। তারা চান এমন নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তারা এ উৎসব শেষ করতে, তেমনি বরাবরের মতোই সকল ধর্মের সহযোগিতা নিয়েই তারা পালন করতে চান ।

জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে পুলিশ সুপার আজিম-উল আহসান জানান, সবচাইতে হিন্দুদের বড় উৎসব শারদিয় দুর্গা পুজা আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে শেষ করার জন্য জেলার ৪৮২টি মন্দিরে এক হাজার পুলিশের পাশাপাশি, আনসার সদস্য, র‌্যাবসহ গোয়েন্দা সংস্থা মাঠে থাকবে। নিরাপত্তার জন্য বেশির ভাগ স্থানে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। আর যদি কেও কোন অপ্রীতিকর কোন ঘটনার চেষ্টা চালানো হয় তবে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এ দিকে জেলা পুজা উদযাপন পরিষদের সাধারন সম্পাদক বিনয় কৃঞ্চ বিশ^াস জানান, জেলার ৬টি উপজেলাতে পুজার সংখ্যা গত বছরের তুলনায় বেড়েছে। তারা সকল ধর্মের মানুষের নিয়েই এ উৎসব পালন করতে চান। এ কারনে সবাইকে পাশে থাকার আহবান জানান।

বিজনেস আওয়ার/১২ অক্টোবর, ২০২৩/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: