ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিফা-আরোগ্য লাভে সূরা ফাতেহা পাঠের ফজিলত

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩
  • 186

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: সূরা ফাতেহা পবিত্র কোরআনুল কারিমের প্রথম সূরা। সূরাটি কোরআনের নির্যাস। কোরআনের বাকি ১১৩টি সূরা আসলে সূরা ফাতেহারই ব্যাখ্যা। পুরো কোরআনে মূলত তিনটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।

আল্লাহতায়ালার পরিচয়, আল্লাহপাকের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য মানুষের করণীয় ও বর্জনীয়। সূরা ফাতেহায় এ তিনটি বিষয় খুব চমৎকারভাবে বলে দেয়া হয়েছে।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) একদিন উবাই ইবনে কাব (রা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কীভাবে নামাজে কোরআন পড়?

তিনি সূরা ফাতেহা পড়ে শুনালেন। তখন রাসূল (সা.) বললেন, কসম সেই আল্লাহর, যার হাতে আমার জীবন, সূরা ফাতেহার মতো কোনো সূরা না তওরাতে নাজিল হয়েছে, না ইঞ্জিলে, না জাবুরে আর না কোরআনে নাজিল হয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস ২৮৭৫; মিশকাত, হাদিস ২১৪২)।

হজরত আবদুল মালেক ইবনে ওমায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূরা ফাতেহা সব রোগের মহাওষুধ।’- (সুনানে দারেমি, হাদিস ৩৪১৩; মিশকাত, হাদিস ২১৭০)।

মিশকাত শরিফের ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলী কারী (রহ.) মিরকাতুল মাফাতিহে বলেন, ‘সূরা ফাতেহার অক্ষর, শব্দ পড়াতে যেমন শেফা আছে তেমনি লেখাতেও শেফা আছে। যে কোনো ধরনের রোগ চাই দ্বিনী হোক কিংবা পার্থিব, অনুভবযোগ্য হোক বা না হোক সব কিছু এ সূরা পড়া বা লেখার বরকতে আল্লাহর ইচ্ছায় আরোগ্য হবে।’

হজরত আবু সাঈদ ইবনে মুআল্লা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কয়েকজন সাহাবি আরবের এক গোত্রে এলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোনো মেহমানদারি করল না। হঠাৎ ওই গোত্রের নেতাকে সাপে কাটে। তখন তারা এসে বলল, আপনাদের কাছে কি কোনো ওষুধ আছে?

তারা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তোমাদের আমাদের মেহমানদারি করতে হবে। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। তারা মেহমানদারি করতে রাজি হল। এ ছাড়া আমরা তাদের কাছে একপাল বকরি চাইলাম। তখন একজন সাহাবি উম্মুল কোরআন অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়ে মুখে থুথু জমা করে সে ব্যক্তির ক্ষতে মেখে দিলেন। ফলে বিষ নেমে গেল এবং সে সুস্থ হয়ে গেল।

সাহাবিরা খাওয়া-দাওয়া করে নবী করিম (সা.)-এর কাছে বকরিসহ ফিরে এলেন। তারা রাসূল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন তাদের এ ধরনের কাজ ঠিক হল কি না। নবী (সা.) শুনে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, তোমরা কীভাবে জানলে যে, সূরা ফাতেহায় শেফা রয়েছে। ঠিক আছে বকরিগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দিও।’ (বুখারি, হাদিস ৫০০৬।)

সূরা ফাতেহা যে কোনো রোগের জন্য ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরামর্শগুলো মেনে চলার পাশাপাশি আমরা সূরা ফাতেহার আমলও করতে পারি।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শিফা-আরোগ্য লাভে সূরা ফাতেহা পাঠের ফজিলত

পোস্ট হয়েছে : ১০:৫৪ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: সূরা ফাতেহা পবিত্র কোরআনুল কারিমের প্রথম সূরা। সূরাটি কোরআনের নির্যাস। কোরআনের বাকি ১১৩টি সূরা আসলে সূরা ফাতেহারই ব্যাখ্যা। পুরো কোরআনে মূলত তিনটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে।

আল্লাহতায়ালার পরিচয়, আল্লাহপাকের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের সন্তুষ্টি লাভের জন্য মানুষের করণীয় ও বর্জনীয়। সূরা ফাতেহায় এ তিনটি বিষয় খুব চমৎকারভাবে বলে দেয়া হয়েছে।

হজরত আবু হুরাইরা (রা.) বলেন, রাসূল (সা.) একদিন উবাই ইবনে কাব (রা.)কে জিজ্ঞেস করলেন, তুমি কীভাবে নামাজে কোরআন পড়?

তিনি সূরা ফাতেহা পড়ে শুনালেন। তখন রাসূল (সা.) বললেন, কসম সেই আল্লাহর, যার হাতে আমার জীবন, সূরা ফাতেহার মতো কোনো সূরা না তওরাতে নাজিল হয়েছে, না ইঞ্জিলে, না জাবুরে আর না কোরআনে নাজিল হয়েছে।’ (সুনানে তিরমিজি, হাদিস ২৮৭৫; মিশকাত, হাদিস ২১৪২)।

হজরত আবদুল মালেক ইবনে ওমায়ের (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সূরা ফাতেহা সব রোগের মহাওষুধ।’- (সুনানে দারেমি, হাদিস ৩৪১৩; মিশকাত, হাদিস ২১৭০)।

মিশকাত শরিফের ব্যাখ্যাকার মোল্লা আলী কারী (রহ.) মিরকাতুল মাফাতিহে বলেন, ‘সূরা ফাতেহার অক্ষর, শব্দ পড়াতে যেমন শেফা আছে তেমনি লেখাতেও শেফা আছে। যে কোনো ধরনের রোগ চাই দ্বিনী হোক কিংবা পার্থিব, অনুভবযোগ্য হোক বা না হোক সব কিছু এ সূরা পড়া বা লেখার বরকতে আল্লাহর ইচ্ছায় আরোগ্য হবে।’

হজরত আবু সাঈদ ইবনে মুআল্লা (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী (সা.)-এর কয়েকজন সাহাবি আরবের এক গোত্রে এলেন। গোত্রের লোকেরা তাদের কোনো মেহমানদারি করল না। হঠাৎ ওই গোত্রের নেতাকে সাপে কাটে। তখন তারা এসে বলল, আপনাদের কাছে কি কোনো ওষুধ আছে?

তারা উত্তর দিলেন, হ্যাঁ, আছে। তবে তোমাদের আমাদের মেহমানদারি করতে হবে। আমরা প্রচণ্ড ক্ষুধার্ত। তারা মেহমানদারি করতে রাজি হল। এ ছাড়া আমরা তাদের কাছে একপাল বকরি চাইলাম। তখন একজন সাহাবি উম্মুল কোরআন অর্থাৎ সূরা ফাতেহা পড়ে মুখে থুথু জমা করে সে ব্যক্তির ক্ষতে মেখে দিলেন। ফলে বিষ নেমে গেল এবং সে সুস্থ হয়ে গেল।

সাহাবিরা খাওয়া-দাওয়া করে নবী করিম (সা.)-এর কাছে বকরিসহ ফিরে এলেন। তারা রাসূল (সা.)-এর কাছে জানতে চাইলেন তাদের এ ধরনের কাজ ঠিক হল কি না। নবী (সা.) শুনে মুচকি হাসলেন এবং বললেন, তোমরা কীভাবে জানলে যে, সূরা ফাতেহায় শেফা রয়েছে। ঠিক আছে বকরিগুলো নিয়ে যাও এবং তাতে আমার জন্যও একটি অংশ রেখে দিও।’ (বুখারি, হাদিস ৫০০৬।)

সূরা ফাতেহা যে কোনো রোগের জন্য ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। তাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের পরামর্শগুলো মেনে চলার পাশাপাশি আমরা সূরা ফাতেহার আমলও করতে পারি।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: