বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: আচরণবিধি অনুসরণ না করে পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যাওয়া নিয়ে প্রশ্ন করায়ি এক সাংবাদিকদের ওপর চড়াও গায়ে হাত তোলার অভিযোগ উঠেছে চট্টগ্রাম-১৬ (বাঁশখালী) আসনের আওয়ামী লীগ দলীয় সংসদ সদস্য প্রার্থী মোস্তাফিজুর রহমারে বিরুদ্ধে।
এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের সঙ্গে মোস্তাফিজ সমর্থকদের কথা-কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ নভেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বরত জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটেছে।
মোস্তাফিজুর রহমান বাঁশখালী আসন থেকে তৃতীয়বারের মতো মনোনয়ন পেয়েছেন। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালেও তিনি এ আসন থেকে নির্বাচিত হয়েছিলেন। এর আগেও সাংবাদিককে ফোন করে মোস্তাফিজুর রহমানের গালিগালাজের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছিল।
এছাড়া কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে নিয়ে ‘অশালীন’ মন্তব্যে ভিডিও ভাইরাল হওয়া, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে ‘আপত্তিকর’ মন্তব্য, সাংসদের বিরুদ্ধে মানববন্ধনে মুক্তিযোদ্ধাদের ওপর হামলা, বাঁশখালীতে নিজ দলের বিরোধী নেতা-কর্মীদের দমনপীড়ন, প্রকাশ্যে অস্ত্র নিয়ে মিছিলসহ নানা কারণে তিনি বারবার গণমাধ্যমের শিরোনাম হয়েছেন।
এবার মনোনয়ন না পাওয়ার গুঞ্জনের মধ্যেই নৌকা প্রতীক পেয়ে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে মনোনয়ন পত্র জমা দিতে যান মোস্তাফিজুর রহমান। রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে তার সঙ্গে ঢুকে পড়েন এক ডজন নেতা-কর্মী।
মনোনয়ন পত্র জমা দিয়ে বেরিয়ে আসার পর তিনি সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন। ইন্ডিপেন্ডেন্ট টেলিভিশনের প্রতিবেদক রাকিব উদ্দিন আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে প্রশ্ন করলে সাংসদ মোস্তাফিজুর রেগে যান। তিনি রাকিবকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে হুমকিধমকি দিতে থাকেন। তার সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরাও এসময় সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হন। এতে বিভিন্ন ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কিছু সরঞ্জাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মারধরের শিকার সাংবাদিক রাকিব উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘মোস্তাফিজুর রহমান পাঁচ জনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিতে আসেন। মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার পর নির্বাচনি আচরণবিধি ভঙ্গের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি আমার দিকে তেড়ে আসেন। মারতে উদ্যত হন, হুমকিও দেন। পেছন থেকে উনার কর্মীরা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তিনি আমাকে দেখে নেওয়ারও হুমকি দিয়েছেন।’
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং কর্মকর্তা আবুল বাসার মো. ফখরুজ্জামান বলেন, ‘এখানে সিসি ক্যামেরা আছে ৷ ক্যামেরায় সব দেখার সুযোগ আছে। কোনো প্রার্থী যদি আচরণবিধি ভঙ্গ করে বা কারও সঙ্গে কোনোপ্রকার ঝামেলায় জড়ান, সেটা আমরা দেখব। যাদের সঙ্গে এ ঘটনা ঘটেছে আপনারা লিখিত অভিযোগ দেন। নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ে পাঠাবে। শুধু সংবাদকর্মী নন, যে কেউ এরকম ঘটনার শিকার হলে আমরা ব্যবস্থা নেব। আমি এর জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।’
নির্বাচনি আচরণ বিধিমালায় কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দেওয়ার সময় মিছিল বা কোনো প্রকার শোডাউন করতে পারবেন না বলে উল্লেখ আছে। এ ছাড়া পাঁচজনের বেশি লোক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না বলেও উল্লেখ আছে।
বিজনেস আওয়ার/এএইচএ