বিজনেস আওয়ার প্রতিনিধি: রাজশাহী-১ আসনের সংসদ সদস্য ওমর ফারুকের রাজনৈতিক কার্যালয় সংলগ্ন ম্যানহোলে মিলেছে আওয়ামী লীগের এক কর্মীর অর্ধগলিত মৃতদেহ। দুই-তিন দিন আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছে পুলিশ।
সোমবার (১২ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মৃতদেহটি উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন শেষ দুপুরে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানা পুলিশ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কর্মকর্তারা বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেন। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে—কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন আগে ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে।
নিহত ব্যক্তির নাম নয়নাল উদ্দিন (৬০)। তার বাড়ি রাজশাহীর কাটাখালী পৌরসভার শ্যামপুর থান্দারপাড়া এলাকায়। নিহত ব্যক্তির মানিব্যাগে তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি পাওয়া গেছে। এর সূত্র ধরেই পরিচয় নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।
এছাড়া নিহত ব্যক্তির হাতে হাতঘড়ি পরনে প্যান্ট-শার্ট ছিল। তার পকেটে একটি গুলের কৌটা, লাইটার, ছোট একটি কাচিসহ মানিব্যাগের ভেতর আরও বেশকিছু কাগজপত্র পাওয়া গেছে। সেগুলো আলামত হিসেবে সংগ্রহ করেছে সিআইডি।
মৃতদেহ উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠানোর পর সেখানে তার পরিচয় শনাক্ত করেন স্বজনরা। তারা জানান, নয়নালের স্ত্রী-সন্তান নেই। তিনি ভবঘুরে প্রকৃতির লোক ছিলেন। এছাড়া তিনি আওয়ামী লীগের একনিষ্ঠ কর্মী। দিনের বেশির ভাগ সময় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়সহ দলের নেতাদের সঙ্গেই থাকতেন।
সোমবার সকালে রাজশাহী নিউমার্কেটের বিপরীতে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর রাজনৈতিক কার্যালয়ের পাশের ম্যানহোল থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সীমানা প্রাচীরের ভেতরে এমপি ওমর ফারুক চৌধুরীর মালিকানাধীন ১০ তলা ‘থিম ওমর প্লাজা’ ও একতলা রাজনৈতিক কার্যালয়। থিম ওমর প্লাজার প্রথম থেকে সাততলা পর্যন্ত শপিংমল। আর সপ্তম থেকে ১০ তলা পর্যন্ত অ্যাপার্টমেন্ট। এই ভবনের দশ তলার একটি অ্যাপার্টমেন্টে থাকেন এমপি ফারুক।
থিম ওমর প্লাজার সিকিউরিটি ইনচার্জ জুবায়ের হোসেন বাপ্পী বলেন, প্রতিদিন সকালে নিরাপত্তা প্রহরীরা চারপাশ ঘুরে দেখেন। সোমবার সকালে রোম্মান নামের একজন নিরাপত্তা প্রহরী রাজনৈতিক কার্যালয় সংলগ্ন শৌচাগারের ম্যানহোলে মৃতদেহটি পড়ে থাকতে দেখেন। মৃতদেহ থেকে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছিল। পরে পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে।
রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হুমায়ুন কবীর বলেন, ম্যানহোল থেকে মৃতদেহ উদ্ধারের সময় নিহতের শরীরের অনেক স্থান থেকে চামড়া উঠে গেছে। তাই তার শরীরে কোনো আঘাত ছিল কি না, তা বোঝা যায়নি। মৃতদেহ দেখে মনে হয়েছে কয়েক দিন আগে তার মৃত্যু হয়েছে।
মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকরা বাকিটা বলতে পারবেন। আপাতত এই ঘটনায় অপমৃত্যুর মামলা হবে। পরে ময়নাতদন্তে অন্য কিছু পাওয়া গেলে সেই অনুযায়ী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিজনেস আওয়ার/এএইচএ