ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাজশাহীতে বিআরটিএ’ গণশুনানি, ভুক্তভোগিদের অভিযোগের পাহাড়!

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩
  • 52

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গণশুনানিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারকে পেয়ে ভোগান্তির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন এক বাসচালক। এ সময় বিআরটিএ চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিকভাবে ওই চালককে লাইসেন্স দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

রাজশাহীতে আয়োজিত এই গণশুনানিতে পরিবহন চালকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেসব সমস্যার সমাধান দেন। তার সামনে মুহূর্তেই পরিবহন চালক ও মালিকদের অভিযোগের পাহাড় জমে যায়।

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২০২৪ এর আওতায় বিআরটিএ রাজশাহী সার্কেলের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চালক, হেলপার, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অংশ নেন।

গণশুনাতিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সাবিহা সুলতানা, বিআরটিএ’র রাজশাহী সার্কেলের উপ-পরিচালক (ডিডি) এসএম কামরুল হাসান ও সহকারী পরিচালক (এডি) মোশাররফ হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সেবাপ্রত্যাশীদের নানান সমস্যা শোনার পর তারাও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেন।

আবদুল মমিন নামের এক বাসচালক লাইসেন্স নিয়ে হয়রানির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, তার গ্রামের বাড়ি নাটোর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। আসা যাওয়া করতে কম করে হলেও ৩০০ টাকা খরচ হয়। তিনি ২০১৪ সালে প্রথম লাইসেন্স করেন। তার লাইসেন্সের বয়স এখন ১০ বছরের বেশি। এখন তার ভারী যানবাহনের লাইসেন্স প্রয়োজন। দুই মাস আগে ব্যাংক ড্রাফট করেন। সব প্রক্রিয়া শেষ হলো। লাইসেন্স করতে গেলেন। তাকে বলা হলো, লাইসেন্স অনলাইনে হয়নি। তাই তার লাইসেন্স জিরো হয়ে গেছে। আবার নতুন করে হালকা যানবাহনের জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। এর নির্দিষ্ট সময়ের পরই তাকে ভারী যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়া হবে। তাই তিনি এখন ভারী যানবাহন চালাতে পারছেন না। আর সেজন্য চার মাস হলো তার চাকরিও চলে গেছে।

গণশুনানিতে বাসচালক মমিন আরও জানান, তার সংসারের অবস্থা কঠিন খারাপ। তার এক লাখ টাকা ঋণ। তিনটা মেয়ে। এর মধ্যে লাইসেন্স নিয়ে তিনি চরম হয়রানির মধ্যে পড়েছেন। অথচ তার সব কাগজপত্রই আছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসারদের সঙ্গে কোনো কথাই বলা যায় না! তারা বলেন যে, বেরিয়ে যান!

এ সময় অন্য যানবাহন চালক ও হেলপাররা হাততালি দিয়ে মমিনকে সমর্থন করেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান ওই চালককে একদিনের মধ্যে লাইসেন্স দেওয়ার নির্দেশ দেন। এভাবে নানান সমাস্যার কথা তুলে ধরে আরও অনেকে তাৎক্ষণিক সমাধান পান।

গণশুনানিতে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো, রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব আলী, রাজশাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদ আলী বক্তব্য দেন।

তারা সহজ উপায়ে যানবাহন চালকদের লাইসেন্স দেওয়া, যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করা ও সব ধরনের পরিবহনের মালিকানা পরিবর্তনের ব্যবস্থার দাবি জানান।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

রাজশাহীতে বিআরটিএ’ গণশুনানি, ভুক্তভোগিদের অভিযোগের পাহাড়!

পোস্ট হয়েছে : ০৬:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৩

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গণশুনানিতে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মদ মজুমদারকে পেয়ে ভোগান্তির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন এক বাসচালক। এ সময় বিআরটিএ চেয়ারম্যান তাৎক্ষণিকভাবে ওই চালককে লাইসেন্স দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন।

রাজশাহীতে আয়োজিত এই গণশুনানিতে পরিবহন চালকদের বিভিন্ন সমস্যার কথা শোনেন বিআরটিএ চেয়ারম্যান এবং তাৎক্ষণিকভাবে সেসব সমস্যার সমাধান দেন। তার সামনে মুহূর্তেই পরিবহন চালক ও মালিকদের অভিযোগের পাহাড় জমে যায়।

জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশল কর্মপরিকল্পনা ২০২৩-২০২৪ এর আওতায় বিআরটিএ রাজশাহী সার্কেলের উদ্যোগে বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত এই গণশুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এতে চালক, হেলপার, পরিবহন মালিক ও শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা অংশ নেন।

গণশুনাতিতে রাজশাহী জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সাবিহা সুলতানা, বিআরটিএ’র রাজশাহী সার্কেলের উপ-পরিচালক (ডিডি) এসএম কামরুল হাসান ও সহকারী পরিচালক (এডি) মোশাররফ হোসেনসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন। সেবাপ্রত্যাশীদের নানান সমস্যা শোনার পর তারাও বিভিন্ন সমস্যার সমাধান দেন।

আবদুল মমিন নামের এক বাসচালক লাইসেন্স নিয়ে হয়রানির কথা বলতে গিয়ে কেঁদে ফেলেন। তিনি বলেন, তার গ্রামের বাড়ি নাটোর শহর থেকে ১২ কিলোমিটার দূরে। আসা যাওয়া করতে কম করে হলেও ৩০০ টাকা খরচ হয়। তিনি ২০১৪ সালে প্রথম লাইসেন্স করেন। তার লাইসেন্সের বয়স এখন ১০ বছরের বেশি। এখন তার ভারী যানবাহনের লাইসেন্স প্রয়োজন। দুই মাস আগে ব্যাংক ড্রাফট করেন। সব প্রক্রিয়া শেষ হলো। লাইসেন্স করতে গেলেন। তাকে বলা হলো, লাইসেন্স অনলাইনে হয়নি। তাই তার লাইসেন্স জিরো হয়ে গেছে। আবার নতুন করে হালকা যানবাহনের জন্য লাইসেন্স নিতে হবে। এর নির্দিষ্ট সময়ের পরই তাকে ভারী যানবাহনের লাইসেন্স দেওয়া হবে। তাই তিনি এখন ভারী যানবাহন চালাতে পারছেন না। আর সেজন্য চার মাস হলো তার চাকরিও চলে গেছে।

গণশুনানিতে বাসচালক মমিন আরও জানান, তার সংসারের অবস্থা কঠিন খারাপ। তার এক লাখ টাকা ঋণ। তিনটা মেয়ে। এর মধ্যে লাইসেন্স নিয়ে তিনি চরম হয়রানির মধ্যে পড়েছেন। অথচ তার সব কাগজপত্রই আছে। বিষয়টি নিয়ে অফিসারদের সঙ্গে কোনো কথাই বলা যায় না! তারা বলেন যে, বেরিয়ে যান!

এ সময় অন্য যানবাহন চালক ও হেলপাররা হাততালি দিয়ে মমিনকে সমর্থন করেন। বিআরটিএ চেয়ারম্যান ওই চালককে একদিনের মধ্যে লাইসেন্স দেওয়ার নির্দেশ দেন। এভাবে নানান সমাস্যার কথা তুলে ধরে আরও অনেকে তাৎক্ষণিক সমাধান পান।

গণশুনানিতে রাজশাহী বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মতিউল হক টিটো, রাজশাহী মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মাহাতাব আলী, রাজশাহী ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, রাজশাহী ট্রাক শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি ফরিদ আলী বক্তব্য দেন।

তারা সহজ উপায়ে যানবাহন চালকদের লাইসেন্স দেওয়া, যানবাহনের ফিটনেস পরীক্ষা করা ও সব ধরনের পরিবহনের মালিকানা পরিবর্তনের ব্যবস্থার দাবি জানান।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: