ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

হিরু ও তার সহযোগীদের সতর্ক করেছে বিএসইসি

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪
  • 64

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক:শেয়ারবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী ও সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের শেয়ারদর কারসাজির ঘটনায় সতর্ক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে গত মাসে বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ থেকে তাদের সতর্ক করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে তাদের আইন মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসির উপপরিচালক মো. সুলতান সালাহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, অভিযোগের প্রকৃত অবস্থা, অভিযুক্তের প্রত্যক্ষ ও লিখিত বক্তব্য পরীক্ষা ও বিবেচনার পর আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশনের অসন্তুষ্টি প্রকাশ ও সতর্ক করার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের ভবিষ্যতে সব ধরনের সিকিউরিটিজ আইন মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় হিরু ও তার সহযোগীদের সতর্ক করা হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ানোর জন্য বড় ধরনের কারসাজির ঘটনা ঘটে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৯ টাকা ৬০ পয়সা। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ টাকা ২০ পয়সায়। ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানিটির অস্বাভাবিক শেয়ার দরবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, আবুল খায়ের হিরু, তার শ্যালক কাজী ফরিদ হাসান ও সজীব হোসেন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে সাফকো স্পিনিংয়ের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার শেয়ারবাজার থেকে কিনে নেন। এতে ওই শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির এক পর্যায়ে উল্লিখিত বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা তুলে নেন। এছাড়া সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ারদর বাড়াতে সজীব হোসেন ও তার সহযোগীরা মিলে সিরিজ লেনদেনের ঘটনা ঘটান। সজীব হোসেনের সঙ্গে এ সিরিজ লেনদেনে জড়িত ছিলেন আবদুল কুদ্দুস আমিন, মো. সুলেয়মান ও নুরুন্নেসা সাকি।

ডিএসইর প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য সে সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কাছে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে হিরুর বক্তব্য জানতে গত বছরের ৮ অক্টোবর তাকে শুনানিতে ডেকেছিল কমিশন।

এর আগে বেশকিছু শেয়ার কারসাজির ঘটনায় হিরুকে জরিমানা করা হলেও এবার সতর্ক করে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণ ও অভিযুক্তের বক্তব্য পর্যালোচনা করে যে ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যৌক্তিক সে ধরনের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করাটাও এক ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।’

২০২২ সালে ঢাকা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির দায়ে মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের ১২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে শেয়ারবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী ও সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের হিরু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিএসইসির পক্ষ থেকে সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ার কারসাজির বিষয়ে আমাকে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল। সেখানে আমি কারসাজির অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তি তুলে ধরেছি।’

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

হিরু ও তার সহযোগীদের সতর্ক করেছে বিএসইসি

পোস্ট হয়েছে : ১০:৩২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক:শেয়ারবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী ও সমবায় অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের শেয়ারদর কারসাজির ঘটনায় সতর্ক করেছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘনের কারণে গত মাসে বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগ থেকে তাদের সতর্ক করা হয়। পাশাপাশি ভবিষ্যতে তাদের আইন মেনে চলার বিষয়ে নির্দেশনাও দিয়েছে বিএসইসি।

বিএসইসির উপপরিচালক মো. সুলতান সালাহ উদ্দিন স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, অভিযোগের প্রকৃত অবস্থা, অভিযুক্তের প্রত্যক্ষ ও লিখিত বক্তব্য পরীক্ষা ও বিবেচনার পর আইন লঙ্ঘনের বিষয়ে কমিশনের অসন্তুষ্টি প্রকাশ ও সতর্ক করার মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তির সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের ভবিষ্যতে সব ধরনের সিকিউরিটিজ আইন মেনে চলার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, তালিকাভুক্ত কোম্পানি সাফকো স্পিনিং মিলস লিমিটেডের শেয়ার কারসাজির ঘটনায় হিরু ও তার সহযোগীদের সতর্ক করা হয়েছে। ২০২২ সালের এপ্রিল থেকে আগস্টের মধ্যে কোম্পানিটির শেয়ারদর বাড়ানোর জন্য বড় ধরনের কারসাজির ঘটনা ঘটে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) ২০২২ সালের ১৩ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল মাত্র ৯ টাকা ৬০ পয়সা। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়ে দাঁড়ায় ৩৩ টাকা ২০ পয়সায়। ডিএসইর পক্ষ থেকে কোম্পানিটির অস্বাভাবিক শেয়ার দরবৃদ্ধির বিষয়টি তদন্ত করে বিএসইসির কাছে প্রতিবেদন পাঠানো হয়। ডিএসইর তদন্ত প্রতিবেদন অনুসারে, আবুল খায়ের হিরু, তার শ্যালক কাজী ফরিদ হাসান ও সজীব হোসেন সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করে সাফকো স্পিনিংয়ের ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার শেয়ারবাজার থেকে কিনে নেন। এতে ওই শেয়ারের দাম বাড়তে থাকে। শেয়ারের মূল্যবৃদ্ধির এক পর্যায়ে উল্লিখিত বিনিয়োগকারীরা তাদের শেয়ার বিক্রি করে দিয়ে মুনাফা তুলে নেন। এছাড়া সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ারদর বাড়াতে সজীব হোসেন ও তার সহযোগীরা মিলে সিরিজ লেনদেনের ঘটনা ঘটান। সজীব হোসেনের সঙ্গে এ সিরিজ লেনদেনে জড়িত ছিলেন আবদুল কুদ্দুস আমিন, মো. সুলেয়মান ও নুরুন্নেসা সাকি।

ডিএসইর প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিষয়টি অধিকতর তদন্তের জন্য সে সময় বিএসইসির পক্ষ থেকে দুই সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করা হয়েছিল। তদন্ত শেষে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য এনফোর্সমেন্ট বিভাগের কাছে পাঠানো হয়। এ বিষয়ে হিরুর বক্তব্য জানতে গত বছরের ৮ অক্টোবর তাকে শুনানিতে ডেকেছিল কমিশন।

এর আগে বেশকিছু শেয়ার কারসাজির ঘটনায় হিরুকে জরিমানা করা হলেও এবার সতর্ক করে ছেড়ে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম বণিক বার্তাকে বলেন, ‘তথ্যপ্রমাণ ও অভিযুক্তের বক্তব্য পর্যালোচনা করে যে ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া যৌক্তিক সে ধরনের ব্যবস্থাই নেয়া হয়েছে। জরিমানার পাশাপাশি সতর্ক করাটাও এক ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।’

২০২২ সালে ঢাকা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, গ্রীন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, এশিয়া ইন্স্যুরেন্স লিমিটেড, ফরচুন সুজ লিমিটেড, এনআরবি কমার্শিয়াল ব্যাংক লিমিটেড, ওয়ান ব্যাংক লিমিটেড, বিডিকম অনলাইন লিমিটেড ও আইপিডিসি ফাইন্যান্স লিমিটেডের শেয়ারদর কারসাজির দায়ে মো. আবুল খায়ের হিরু ও তার সহযোগীদের ১২ কোটি ৩৯ লাখ টাকা জরিমানা করেছিল বিএসইসি। এছাড়া তার বিরুদ্ধে আরো বেশকিছু কোম্পানির শেয়ার কারসাজির ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে।

জানতে চাইলে শেয়ারবাজারের আলোচিত বিনিয়োগকারী ও সমবায় অধিদপ্তরের উপনিবন্ধক মো. আবুল খায়ের হিরু বণিক বার্তাকে বলেন, ‘বিএসইসির পক্ষ থেকে সাফকো স্পিনিংয়ের শেয়ার কারসাজির বিষয়ে আমাকে শুনানিতে ডাকা হয়েছিল। সেখানে আমি কারসাজির অভিযোগের বিরুদ্ধে আমার কাছে থাকা তথ্যপ্রমাণ ও যুক্তি তুলে ধরেছি।’

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: