শোক এক প্রাকৃতিক অনুভূতি, যা জীবনের অপ্রত্যাশিত ক্ষতি বা প্রিয়জনের বিদায়ের সময় সবাইকে স্পর্শ করে। তবে দীর্ঘস্থায়ী দুঃখ ও মানসিক চাপ কখনও কখনও আমাদের দৈনন্দিন জীবন ও স্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। শোকের সময় মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা অপরিহার্য, যাতে আমরা ধীরে ধীরে এই ক্ষতি গ্রহণ করতে পারি এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকতে পারি। চলুন জেনে নেই কিছু কার্যকরী উপায়।
শোককে স্বীকার করুন: শোকের অনুভূতিগুলোকে স্বীকার করা এবং সেগুলোকে বুঝতে পারা জরুরি। দুঃখ, ক্রোধ এবং হতাশার অনুভূতি স্বাভাবিক। ডায়েরি লেখার মাধ্যমে অনুভূতিগুলোকে প্রকাশ করা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য সহায়ক হতে পারে।
সমর্থন নিন: আপনার প্রিয়জনদের সঙ্গে কথা বলুন। তারা আপনার অনুভূতিগুলো বুঝতে এবং শেয়ার করতে সাহায্য করতে পারে। প্রয়োজনে প্রশিক্ষিত মানসিক স্বাস্থ্য পেশাদারের সাহায্য নিতে পারেন।
দৈনিক রুটিন বজায় রাখুন: দৈনিক কাজগুলোতে নিয়মিত থাকা মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভাল। এটি আপনাকে স্থিরতা এবং নিয়মিততা প্রদান করে। স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ এবং নিয়মিত ব্যায়াম মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নয়নে সহায়ক।
মেডিটেশন ও যোগব্যায়াম: মানসিক শান্তি অর্জনের জন্য মেডিটেশন একটি কার্যকরী উপায়। এটি মনকে শান্ত রাখে এবং চাপ কমাতে সাহায্য করে। শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য যোগব্যায়াম অত্যন্ত উপকারী।
নেগেটিভ চিন্তা কমান: নেতিবাচক চিন্তা থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন। ইতিবাচক চিন্তার দিকে মনোনিবেশ করুন এবং ধীরে ধীরে পরিস্থিতির প্রতি একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করুন। নেগেটিভ চিন্তার পরিবর্তে ধন্যবাদ জানানো বা ইতিবাচক ঘটনা চিন্তা করার অভ্যাস গড়ুন।
সৃজনশীলতা প্রকাশ করুন: ছবি আঁকা, গান গাওয়া বা লেখা। সৃজনশীল কাজগুলো শোকের অনুভূতিকে প্রকাশ করার একটি ভালো মাধ্যম। এছাড়া প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্যে সময় কাটানো মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী।
শোকের সময়ে সময় নিন: শোক কাটিয়ে উঠতে সময় নিন। প্রতিটি মানুষের শোক কাটানোর প্রক্রিয়া আলাদা হতে পারে। তাই নিজেকে সময় দিন এবং ধৈর্য ধরুন। আচমকা অনুভূতি আসতে পারে, যা স্বাভাবিক।
শোকের সময় মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষা করা একটি চ্যালেঞ্জিং প্রক্রিয়া, কিন্তু সচেতন প্রচেষ্টা এবং সহায়তার মাধ্যমে এটি সম্ভব। এই সময়ে নিজেকে যত্ন নেওয়া এবং সমর্থন গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ। মনে রাখবেন শোকের অনুভূতি স্বাভাবিক এবং এটি কাটিয়ে উঠতে সময় প্রয়োজন।
তথ্যসূত্র: মেন্টাল হেলথ/পিপল ফার্স্ট ইনফো

























