বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: রাজধানীর বনানীর কামাল আতাতুর্ক সড়কের এফআর (ফারুক রূপায়ন) টাওয়ারে আগুনের ঘটনায় করা মামলায় আটজনের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট গ্রহণ করেছেন আদালত। ডিবি পুলিশের পর এবার পিবিআই অধিকতর তদন্ত করে সেই ৮ জনকে অভিযুক্ত করে চার্জশিট জমা দিয়েছে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ভবন নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান রূপায়ণ গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খানকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রশিদুল আলমের আদালত এ চার্জশিট গ্রহণ করেন। সময় পলাতক থাকায় পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন আদালত। আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য আগামী ১২ মার্চ দিন ধার্য করা হয়েছে।
আদালতে বনানী থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন— এফআর টাওয়ার ভবনের জমির মালিক এস এম এইচ আই ফারুক, ভবন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি তানভিরুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক এ এ মনিরুজ্জামান, কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ আমিনুর রহমান, সদস্য কাজী মাহমুদুন নবী, রফিকুল ইসলাম, ওয়ারদা ইকবাল ও ভবনটির সপ্তম তলার মালিক সেলিম উল্লাহ। এদের মধ্যে আসামি ফারুক, তানভিরুল ও আমিনুর জামিনে রয়েছেন। অপর আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
২০১৯ সালের ২৮ মার্চ দুপুরে বনানীর ৩২ কামাল আতাতুর্ক অ্যাভিনিউতে অবস্থিত এফআর টাওয়ারে আগুন লাগে। জীবন বাঁচাতে বিভিন্নভাবে বাণিজ্যিক এ ভবন থেকে নামার সময় দুর্ঘটনা ও অগ্নিদগ্ধ হয়ে ২৭ জন প্রাণ হারান। আহত হন শতাধিক ব্যক্তি। এ ঘটনায় ৩০ মার্চ বনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপ-পরিদর্শক (এসআই) মিল্টন দত্ত বাদী হয়ে মামলা করেন। তদন্ত শেষে ২০২২ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তবে মামলাটি যথাযথ প্রক্রিয়ায় তদন্ত কার্যক্রম সম্পন্ন হয়নি উল্লেখ করে কাজে পিবিআইকে অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন আদালত।
পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও পিবিআই ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের পরিদর্শক রফিকুল ইসলাম আটজনকে অভিযুক্ত করে আদালতে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। তবে অভিযোগের সত্যতা না পাওয়ায় রূপায়ন গ্রুপের চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী খান মুকুলকে অব্যাহতির সুপারিশ করেন।
মামলার সম্পূরক চার্জশিটে বলা হয়েছে, রূপায়ন গ্রুপ ভবন নির্মাণের সময় ফায়ার পাম্প, জকি পাম্প, ফায়ার হাইড্রেন্ট, এবিসি ফায়ার এক্সটিংগুইসার, হিট ডিটেকটরসহ মোট ২১ লাখ ৬৪ হাজার টাকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে। রাজউক অনুমোদিত নকশা অনুযায়ী রূপায়ন হাউজিং এস্টেট লিমিটেড ২৩ তলা বাণিজ্যিক ভবন নির্মাণ করেছে। নকশা অনুমোদন পরবর্তী সময়েও রাজউক এখানে মনিটরিং করেছে। কোম্পানি পজেশন হস্তান্তর করায় ভবনটির সুপারভাইজ ও ম্যানেজমেন্টের দায়িত্ব কোম্পানির ওপর বর্তায় না। কাজেই অগ্নিকাণ্ডের ক্ষেত্রে নির্মাণ কোম্পানির কোনো অবহেলা পরিলক্ষিত হয় না।
বিজনেস আওয়ার/এএইচএ