বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগকারীদের মার্জিন ঋণ হিসাবে অনাদায়ী লোকসানের বিপরীতে প্রভিশন রাখতে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশন (বিএমবিএ)। সংগঠনটি আগামী ২০২৫ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রভিশন রাখার মেয়াদ বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) অনুরোধ জানিয়েছে। এতে নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাব থেকে গ্রাহকের শেয়ার বিক্রির চাপ বা ফোর্সড সেল অনেকটা কমে আসবে বলে মনে করছে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর এই সংগঠন।
সম্প্রতি বিএসইসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বরাবর এ সংক্রান্ত একটি চিঠি পাঠিয়েছে বিএমবিএ’র সভাপতি এবং আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও মহাব্যবস্থাপক মাজেদা খাতুন।
শেয়ারবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, ২০১০ সালের শেয়ারবাজার ধসের পরে মার্জিন ঋণ নিয়ে শেয়ার ব্যবসা করা অনেক বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার হারিয়ে ফেলেন। এতে মার্চেন্ট ব্যাংকের কাছে উল্টো বিনিয়োগকারীরা দেনাদার হয়ে যায়। এখন বিনিয়োগকারীদের হিসাবে আটকে থাকা টাকা ফেরত পেতে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর হাতে দুটো রাস্তা আছে। এর মধ্যে একটি হলো- বিনিয়োগকারীদের হিসাব থেকে সব শেয়ার বিক্রি করে দেওয়া। অন্যটি হলো- বিনিয়োগকারীদের হিসাবে যে লোকসান রয়েছে তার বিপরীতে প্রভিশন রেখে ধীরে ধীরে ঋণ কমিয়ে ফেলা। যদিও শেয়ার বিক্রি করে দিলে শেয়ারবাজারে বিক্রির চাপ বাড়বে এবং মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মূলধন ঋণাত্মক হয়ে যাবে। তাই এ সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে গ্রাহকদের মার্জিন হিসাবের অনাদায়ী ক্ষতির বিপরীতে প্রভিশন রাখতে মেয়াদ বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে বিএমবিএ।
বিএমবিএ’র চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ২০২৩ সালের ২২ অক্টোবর পর্যন্ত শেষ ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন অনুসারে, বিএমবিএ’র ২৬ জন সদস্যের নেতিবাচক ইকুইটি সমস্যা রয়েছে। এর মধ্যে একজন সদস্য ইতিমধ্যে তার নেগেটিভ ইক্যুইটির ব্যালেন্স সমন্বয় করেছে। আরও তিনজন সদস্য নেগেটিভ ইক্যুইটির ব্যালেন্স সমন্বয় করার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তারা ২০২৪ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে নেগেটিভ ইক্যুইটির ব্যালেন্স সমন্বয় নিষ্পত্তি করবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, শেয়ারবাজার এখনও ভালো অগ্রগতি হয়নি। শেয়ারবাজার মধ্যস্থতাকারী (মার্চেন্ট ব্যাংক এবং স্টক ব্রোকার) যারা বিনিয়োগকারীদের শেয়ার কিনতে মার্জিন ঋণ প্রদান করেছে, তারা ২০২৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ভালো ব্যবসা করতে পারেনি। সেই সঙ্গে শেয়ারবাজার দীর্ঘ সময় নেতিবাচক অবস্থায় থাকায় বিনিয়োগকারীদের নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাবের লোকসান পুনরুদ্ধার করতে পারেনি। আর বর্তমান বাজার পরিস্থিতিতে নেতিবাচক ইক্যুইটি হিসাব থেকে প্রতিনিয়ত বড় ধরনের বিক্রির চাপ হচ্ছে। তাই এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হলে বর্তমান শেয়ারবাজার পরিস্থিতিতে গ্রাহকদের নেগেটিভ ইক্যুইটি হিসাব থেকে ব্যাপক পরিমাণ শেয়ার বিক্রির চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে।
বিজনেস আওয়ার/বিএইচ