বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: গত দুই মাসে পণ্য রপ্তানি বৃদ্ধি পাওয়ায় সামগ্রিক পণ্য রপ্তানির প্রবৃদ্ধির হার কিছুটা বেড়েছে। চলতি অর্থবছরের ফেব্রুয়ারি মাসে পণ্য রপ্তানি থেকে আয় এসেছে প্রায় ৫১৯ কোটি ডলার। গত বছরের একই মাসের চেয়ে এ আয় ১২ শতাংশ বেশি। ওই মাসের ৪৬৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ গত বছরের ফেব্রুয়ারির চেয়ে গেল ফেব্রুয়ারিতে রপ্তানি বেড়েছে ৫৬ কোটি ডলার। টাকার হিসেবে ৬ হাজার কোটি টাকারও বেশি। অবশ্য, গত জানুয়ারিতে দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ ৫৭২ কোটি ৪৭ লাখ ডলারের রপ্তানি আয় আসে দেশে।
সোমবার (৪ মার্চ) রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ইপিবি হালনাগাদ রপ্তানি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
প্রতিবেদনে দেখা যায়, ফেব্রুয়ারি মাসে রপ্তানি বেশি হয়েছে গত বছরের একই মাসের চেয়ে ১২ শূন্য ৪ শতাংশ। চলতি অর্থবছরের আর কোনো মাসে এত বেশি হারে প্রবৃদ্ধির রেকর্ড নেই। গত মাসে যখন রেকর্ড রপ্তানি আয় আসে দেশে তখনও প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ।
ফেব্রুয়ারি মাসে বড় অংকের রপ্তানি সত্ত্বেও সরকার নির্ধারিত মাসের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়নি। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫২৪ কোটি ডলার। অর্থাৎ লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে রপ্তানি কম হয়েছে ১ শতাংশ। একক মাসের হিসাবের বাইরে সার্বিক রপ্তানি অর্থাৎ চলতি অর্থবছরের জুলাই থেকে সমাপ্ত ফ্রেব্রুয়ারি পর্যন্ত গত ৮ মাসে রপ্তানি বেড়েছে গত অর্থবছরের একই মাসের চেয়ে ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। তবে সার্বিক হিসেবেও রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হয়নি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্ধারণ করা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে প্রকৃত রপ্তানি আয় ৬ দশমিক ৪৮ শতাংশ কম। মোট তিন হাজার ৮৪৫ কোটি ডলার রপ্তানি আয় আসে এ সময়। এ সময়ের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪ হাজার ১১২ কোটি ডলার।
রপ্তানি খাতের প্রধান পণ্য তৈরি পোশাকের রপ্তানি চিত্র বেশ ভালো। সার্বিক রপ্তানির গড় প্রবৃদ্ধির তুলনায় একক পণ্য পোশাকের প্রবৃদ্ধি বেশি। গত ৮ মাসে তৈরি পোশাকের প্রবৃদ্ধি দাঁড়িয়েছে ৪ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এ সময় মোট তিন হাজার ২৮৬ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়, যা গত অর্থবছরের একই সময়ে ছিল তিন হাজার ১৩৬ কোটি ডলার।
ফেব্রুয়ারিতে ভালো রপ্তানি আয়ের কারণ জানতে চাইলে পোশাক খাতের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান ইভিন্স গ্রুপের ইভিটেক্স ড্রেসের পরিচালক শাহ রাঈদ চৌধুরী সমকালকে বলেন, এবার লিফ ইয়ার হিসেবে ফেব্রুয়ারি মাস ১ দিন বেশি ছিল। গত ফ্রেব্রুয়ারি কিংবা অন্য ফেব্রুয়ারির তুলনায় এবারের ফেব্রুয়ারিতে ১ দিনের রপ্তানি বেশি যোগ হয়েছে। এছাড়া বিশ্ব অর্থনীতিতে কিছুটা আশার আলো দেখা যাচ্ছে। প্রধান বাজার ইউরোপ আমেরিকায় মূল্যস্ফীতি কমছে। এর ফলে গত কয়েক মাস ধরে ব্র্যান্ড ক্রেতাদের কাছ থেকে ভালো সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। সামনে নতুন মৌসুমও রয়েছে। আগামীতে প্রবৃদ্ধির এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আশাবাদী তিনি।
তৈরি পোশাকের বাইরে রপ্তানি খাতের প্রধান এবং আলোচিত পণ্যের মধ্যে কৃষিপণ্যের রপ্তানি বেড়েছে ৩ দশমিক ৪৯ শতাংশ। ওষুধ রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১৩ শতাংশ। তবে চামড়া ও চামড়া পণ্যের রপ্তানি কমে গেছে ১৪ শতাংশেরও বেশি। পাটের রপ্তানি কমেছে প্রায় ৫ শতাংশ। হোমটেক্সটাইলের কমেছে ৩০ শতাংশ। ছোটখাটো অন্যান্য বেশির ভাগ পণ্যের রপ্তানিই কমেছে।
বিজনেস আওয়ার/এএইচএ