ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের জানাজা অনুষ্ঠিত

  • পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪
  • 78

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিমের (হেলাল) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শন করতে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

জানাজা নামাজের আগে তার ছেলে আভাস বলেন, আমার বাবা সাংবাদিক পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন আমি তার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। তার কাছে কেউ কিছু পাওয়া থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, হেলাল ভাইকে আমরা শেষ বিদায় জানাতে এসেছি। আমি জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তার পরিবারের সবার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সবাইকে বলবো হেলাল ভাইয়ের জন্য আপনারা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন। হেলাল ভাই একজন সাংবাদিক ছিলেন না, তিনি আমাদের কাছে ছিলেন অভিভাবক, বড় ভাই। আমরা নানা সমস্যায় তার কাছে যেতাম, বড় ভাইয়ের মতো, অভিভাবকের মতো আমাদেরকে পরামর্শ দিতেন।

তিনি বলেন, হেলাল ভাইয়ের অত্যন্ত পছন্দের জায়গা ছিল জাতীয় প্রেসক্লাব। দীর্ঘদিন যাবত তিনি প্রেসক্লাবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও প্রেসক্লাবে আসতেন।

জানাজার নামাজ শেষে তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন।

ইহসানুল করিম ১০ মার্চ রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি ১৯৪৯ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর হয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধে অংশ নেন।

ইহসানুল করিম ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সংবাদ সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের নয়া দিল্লিতে বাসস এর ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি, পিটিআই এবং ভারতের দ্য স্টেটমেন্ট ও ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন।

তিনি বাসস থেকে অবসর গ্রহণের পর একই বছরের ২০মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে প্রথমে এক বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তার চুক্তির মেয়াদ দুই বার-তিন বছর করে বৃদ্ধি করা হয়।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিমের জানাজা অনুষ্ঠিত

পোস্ট হয়েছে : ০২:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১১ মার্চ ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা ইহসানুল করিমের (হেলাল) জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সোমবার (১১ মার্চ) সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের টেনিস গ্রাউন্ডে তার জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত হয়।

এর আগে এই বীর মুক্তিযোদ্ধাকে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে রাষ্ট্রীয়ভাবে সম্মান প্রদর্শন করতে গার্ড অব অনার প্রদান করা হয়।

জানাজা নামাজের আগে তার ছেলে আভাস বলেন, আমার বাবা সাংবাদিক পরিবারের একজন সদস্য ছিলেন। তিনি যদি কারো মনে কষ্ট দিয়ে থাকেন আমি তার পক্ষ থেকে ক্ষমা চাচ্ছি। তার কাছে কেউ কিছু পাওয়া থাকলে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করার অনুরোধ করছি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, হেলাল ভাইকে আমরা শেষ বিদায় জানাতে এসেছি। আমি জাতীয় প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে তার পরিবারের সবার প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছি। সবাইকে বলবো হেলাল ভাইয়ের জন্য আপনারা প্রার্থনা করেন। আল্লাহ যেন তাকে বেহেস্ত নসিব করেন। হেলাল ভাই একজন সাংবাদিক ছিলেন না, তিনি আমাদের কাছে ছিলেন অভিভাবক, বড় ভাই। আমরা নানা সমস্যায় তার কাছে যেতাম, বড় ভাইয়ের মতো, অভিভাবকের মতো আমাদেরকে পরামর্শ দিতেন।

তিনি বলেন, হেলাল ভাইয়ের অত্যন্ত পছন্দের জায়গা ছিল জাতীয় প্রেসক্লাব। দীর্ঘদিন যাবত তিনি প্রেসক্লাবের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তিনি সপ্তাহে অন্তত একদিন হলেও প্রেসক্লাবে আসতেন।

জানাজার নামাজ শেষে তাকে ফুলেল শ্রদ্ধা জানায় রাষ্ট্রপতির কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন।

ইহসানুল করিম ১০ মার্চ রাত ৮টার দিকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। বেশ কিছুদিন ধরে তিনি অসুস্থ ছিলেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন, প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা ইহসানুল করিমের মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি ১৯৪৯ সালে কুষ্টিয়ায় জন্মগ্রহণ করেন। স্ত্রী, এক মেয়ে ও এক ছেলেসহ অসংখ্য আত্মীয়-স্বজন, সহকর্মী ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন তিনি।

শিক্ষাজীবনে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি সাংবাদিকতায় স্নাতকোত্তর ডিপ্লোমা ডিগ্রী লাভ করেন। ১৯৭১ সালে তিনি মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে মুক্তি বাহিনীর হয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধে অংশ নেন।

ইহসানুল করিম ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থায় (বাসস) নিজস্ব প্রতিবেদক হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। তিনি সংবাদ সংস্থার বিভিন্ন পদে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৭ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত তিনি ভারতের নয়া দিল্লিতে বাসস এর ব্যুরো প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন। এছাড়াও তিনি আন্তর্জাতিক সংবাদ সংস্থা বিবিসি, পিটিআই এবং ভারতের দ্য স্টেটমেন্ট ও ইন্ডিয়া টুডেসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেন।

বাসসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান সম্পাদক হিসেবে চার বছর দায়িত্ব পালনের পর তিনি ২০১৩ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি অবসর গ্রহণ করেন।

তিনি বাসস থেকে অবসর গ্রহণের পর একই বছরের ২০মে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদের প্রেস সচিব হিসেবে নিয়োগ পান এবং ২০১৫ সালের জুন পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৫ সালের ১৫ জুন তাকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রেস সচিব হিসেবে প্রথমে এক বছরের জন্য নিয়োগ প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে তার চুক্তির মেয়াদ দুই বার-তিন বছর করে বৃদ্ধি করা হয়।

বিজনেস আওয়ার/এএইচএ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: