বিনোদন ডেস্ক: বিশ্বের ইতিহাসে অন্যতম সেরা চলচ্চিত্র টাইটানিক। ১৯৯৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সিনেমাটি বিশ্বব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন ফেলে দেয়। সেই সিনেমার জ্যাক আর রোজ এখনও মানুষের স্মৃতিতে অম্লান। সিনেমাটির শেষ দৃশ্যে রোজ একটি কাঠের ওপরে ভেসে বেঁচে ছিলেন, যখন জ্যাক নিজের নিয়তি বরণ করে নেন।
হারিয়ে যান আটলান্টিকের অতলে। সেই দৃশ্য আজও জীবন্ত সিনেমাপ্রেমীদের মনে। এবার সেই দৃশ্যের সেই কাঠের দড়জাটি নিলামে ৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাসের ডালাসভিত্তিক নিলামকারী প্রতিষ্ঠান হেরিটেজ অকশন শনিবার এ নিলামের আয়োজন করে।
সিনেমায় ব্যবহৃত কস্টিউম ও আরও কিছু প্রপও নিলামে বিক্রি হয়েছে। কাঠের বড় এই টুকরোকে কেবল একটি দরজা বলা হলেও নিলামে এটিকে বাস্তবিকভাবে টাইটানিকের প্রথম শ্রেণির লাউঞ্জের প্রবেশ দরজার ফ্রেমের একটি অংশ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
১৯১২ সালে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ও বিলাসবহুল জাহাজ টাইটানিক প্রথম যাত্রাতেই ২,২২৪ জন যাত্রী নিয়ে আটলান্টিক মহাসাগরে ডুবে যায়। হাজারেরও বেশি মানুষ মারা যায়।
সেই ভয়াবহ বিপর্যয়ই ১৯৯৭ সালে চলচ্চিত্র টাইটানিকের মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন জেমস ক্যামেরন। সিনেমাটির নায়ক নায়িকা ছিলেন রোজের চরিত্রে ক্যাট উইন্সলেট আর জ্যাকের চরিত্রে লিওনার্দো ডিক্যাপ্রিও। সিনেমায় দেখা গেছে, জাহাজডুবির পর টাইটানিকের যাত্রীদের বেঁচে থাকার মরিয়া চেষ্টা। অপর্যাপ্ত লাইফ বোটে ঠাঁই হয়নি বেশিরভাগ যাত্রীর। এর মধ্যেই দেখানো হয়, ঠান্ডা বরফ জমা পানিতে একটি কাঠের টুকরোর ওপর ভেসে আছেন রোজ।
সিনেমাটি সারা বিশ্বব্যাপী ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেয়েছে। কাঠের টুকরোটিকে অনেকে দরজা বলে ভুল করলেও এটি আসলে ছিল জাহাজের লাউঞ্জের প্রবেশপথের দরজার ফ্রেমের অংশ।
বিবিসি জানায়, কাঠের এই টুকরোটি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই বিতর্ক চলে এসেছে যে, জ্যাক এবং রোজ দুইজনই এই কাঠের খণ্ডের ওপরে ভেসে থাকতে পারতেন কিনা। কাঠ খণ্ডটি ছিল ৮ ফুট লম্বা এবং প্রায় সাড়ে তিন ফুট চওড়া। কাঠটি নিলামে তোলার সময় বলা হয়েছিল, ‘বিশাল জিনিস। সত্যিই সবচেয়ে বড় দৃশ্য। চূড়ান্ত দৃশ্য। এটিই সেই বিদায়।
৯০ হাজার ডলার থেকে দাম হাকা শুরু হয়। ৫ মিনিট পরই দাম ৫ লাখ ডলার ছাড়িয়ে যায় এবং শেষ পর্যন্ত দাঁড়ায় ৭ লাখ ১৮ হাজার ৭৫০ ডলারে। কাঠের টুকরোটি দুই দশক ধরে পড়ে ছিল স্টোরেজে। তার আগে ফ্লোরিডার অরল্যান্ডোয় প্ল্যানেট হলিউডে এটি ডিসপ্লেতে রাখা ছিল।
সিনেমাটিতে উইন্সলেটের পরা পোশাকটিও নিলামে এক লাখ ২৫ হাজার ডলারে বিক্রি হয়েছে। নিলামে ‘টেম্পল অব ডুম’ সিনেমায় হ্যারিসন ফোর্ডের চাবুকটি বিক্রি হয়েছে পাঁচ লাখ ২৫ হাজার ডলারে। এই সিনেমাতেই দেখানো তিনটি শঙ্কর পাথরের একটি সেট বিক্রি হয়েছে এক লাখ ডলারে। ‘দ্য লাস্ট ক্রুসেড’ সিনেমায় দেখানো ‘ছুতারের (কাঠমিস্ত্রী) কাপ’ (হলি গ্রেইল) বিক্রি হয়েছে ৮৭ হাজার ৫০০ ডলারে।
নিলামে ‘কিংপিন’ সিনেমায় বিল মুরের লাল গোলাপযুক্ত বলটি সাড়ে তিন লাখ ডলার, ‘দ্য শাইনিং’ সিনেমায় নিকোলসনের কুঠারটি এক লাখ ২৫ হাজার ডলার, ‘স্পাইডার-ম্যান ৩’ সিনেমার টবি ম্যাগুয়ারের কালোরঙা স্যুটটি এক লাখ ২৫ হাজার ডলার ও ‘জুরাসিক পার্ক’ সিনেমায় ওয়েইনি নাইটের ব্যবহৃত শেভিং ক্রিমের কৌটাটি আড়াই লাখ ডলারে বিক্রি হয়েছে।
বিজনেস আওয়ার/২৯ মার্চ/ রহমান