স্পোর্টস ডেস্ক: আইপিএলে বইছে রানের বন্যা। সানরাইজার্স হায়দরাবাদ, কলকাতা নাইট রাইডার্স, দিল্লি ক্যাপিটাল, রাজস্থান রয়্যালস, রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু এবং সর্বশেষ পাঞ্জাব কিংস- প্রতিটি দলের ব্যাটাররাই ব্যাট হাতে মারমুখি। প্রথম বল থেকেই বইয়ে দিচ্ছেন চার-ছক্কার ফুলঝুড়ি।
এবারের আইপিএলে এখনও পর্যন্ত মোট ৪২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর মধ্যে ২৪টি ২০০ প্লাস স্কোর হয়েছে। যা অন্য যে কোনো আইপিএলের চেয়ে অনেক বেশি। সবচেয়ে বড় কথা এবারের আইপিএলে একের পর এক রেকর্ড ভেঙে বিশাল বিশাল স্কোর গড়ছে ফ্রাঞ্চাইজিগুলো। ২৮৭ রান পর্যন্ত উঠে গেছে। সবাই বলাবলি করছে, ৩০০ রানের গণ্ডি পার হতে হয়তো আর বেশিদিন বাকিও নেই।
তবে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বিষয় হলো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ২৬০ প্লাস রান করেও নিরাপদ বোধ করতে পারছেন না কোনো দল। সেই রানও টপকে গিয়ে জয় তুলে নিচ্ছে প্রতিপক্ষ। যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ দেখা গেলো শুক্রবার কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। ২৬১ রান করেও তারা নিরাপদ থাকতে পারেনি। ৮ বল এবং ৮ উইকেট হাতে রেখে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় পাঞ্জাব কিংস।
পুরো ম্যাচে ৪২টি ছক্কার মার মেরেছেন ব্যাটাররা। ২৪টি ছক্কার মার মেরেছে পাঞ্জাব কিংস। মোট ৩৬টি বাউন্ডারির মার মেরেছেন দুই দলের ব্যাটাররা। ৫২৩ রানের এই ম্যাচটি কলকাতার গরম চাপিয়ে আরও বেশি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছিলো।
সানরাইজার্স হায়দরাবাদ যেদিন ২৮৭ রান করেছিলো, সেদিন তাদের সেই রান তাড়ায় রয়েল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু গিয়েছিলো ২৬২ রান পর্যন্ত করে ফেলেছিলো।আইপিএলের এমন পরিস্থিতি আগে থেকেই মানতে পারছিলেন না ভারতীয় স্পিনার রবিচন্দ্রন অশ্বিন। কিছুদিন আগেই এক মন্তব্যে তিনি বলেছিলেন, ‘আইপিএল আসলে কোনো ক্রিকেটই নয়।’ তখন সাবেক অস্ট্রেলিয়ান কোচ টম মুডি বলেছিলেন, ‘আইপিএলে বোলারদের কোনোভাবেই সম্মান করা হয় না। তাদেরকে সব সময়ই লাঞ্ছিত হতে হয়।’
এবার কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং পাঞ্জাব কিংসের ম্যাচ দেখতে দেখতে রবিচন্দ্রন অশ্বিনের কাছ থেকে আফসোস ঝরে পড়লো। তিনি হতাশাভরেই এক্স (সাবেক টুইটার) একাউন্টে লিখলেন, ‘কেউ একজন বোলারদের রক্ষা করুন, প্লিজ।’
কয়েকদিন আগেই চেন্নাই সুপার কিংস ২১০ রান করেও জিততে পারেনি। লখনৌ সুপার জায়ান্টস ৩ বল বাকি থাকতেই ৬ উইকেটের ব্যবধানে জয় তুলে নেয়। ওই ম্যাচের পরও বোলারদের দোষারোপ না করে চেন্নাই কোচ পরাজয়ের কারণ হিসেবে উইকেটের কথাই তুলে ধরেছেন।অথ্যাৎ, আইপিএলের উইকেটগুলোতে বোলারদের জন্য কিছুই নেই। প্রতিটি উইকেটই যেন বোলারদের বধ্যভূমি। বোলাররা আসছেন, নিয়মতান্ত্রিনভাবে বল করছেন আর বেদম পিটুনি খাচ্ছেন- এটাই এখন প্রতিটি বোলারের নিয়তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেটা প্যাট কামিন্স হোক, মোস্তাফিজুর রহমান হোক কিংবা জসপ্রিত বুমরাহ অথবা অন্য যে কোনো বোলার হোক না কেন, মার খেতেই হবে।
জস বাটলার ম্যাচটি দেখতে দেখতে লিখলেন, ‘দিস ইস আউটরেজাস (খুবই আপত্তিকর)।’
হার্শা ভোগলে লিখলেন, ‘আর কত রান করলে যথেষ্ট মনে করা হবে? এটা একটা বাউন্ডারি, যা প্রতিদিনই পার হয়ে যাচ্ছে।’ হার্শা ভোগলের টুইটের জবাবে সাবেক ইংলিশস স্পিনার গ্রায়েম সোয়ান লিখেছেন , ‘তবে এটা দেখতে খুবই অসাধারণ!! বোলারদের জন্য হচ্ছে টেস্ট ম্যাচ। ব্যাটাররা অবশ্যই টি-টোয়েন্টিকে নিজেদের বলে দাবি করতে পারে।’
বিজনেস আওয়ার/২৭ এপ্রিল/ রানা