বিনোদন ডেস্কঃ আজ মা দিবস। দিবস মেনে হয়তো মাকে ভালোবাসেন না কেউই, মা সব সময়ের। তবে মা দিবস এলে চারিদিকে বেশ চর্চা হয়, তখন মায়ের মুখটা একটু বেশিই মনে পড়ে, বিশেষ করে যাঁরা সদ্য মা হারিয়েছেন। বিগত পাঁচ বছরে মা হারানো শোবিজের কয়েকজন তারকা স্মরণ করেছেন জননীকে।
এখনো প্রায়ই কাঁদি (জায়েদ খান)
আমার মা শাহিদা হক ছিলেন রত্নগর্ভা। তিনি আমাদের ভাই-বোনদের জীবন গড়ে দিয়েছেন। আমার কাছে মায়ের জন্য বিশেষ কোনো দিবস নেই। প্রতিদিনই মাকে ভালোবাসা যায়।
মায়ের প্রতি সন্তানের দায়িত্ব সারা জীবনেও শেষ করা যায় না। মা দিবসে একটা কথাই শুধু বলব, কোনো সন্তান যেন মাকে আর বৃদ্ধাশ্রমে না রেখে আসে। দেশ থেকে যেন বৃদ্ধাশ্রম উঠে যায়। মায়ের সঙ্গে আমার হাজার স্মৃতি।
কোনটা রেখে কোনটার কথা বলব। সেগুলো এখনো জীবন্ত আমার মনে। সেসব মনে করে এখনো প্রায়ই কাঁদি। মায়ের জীবদ্দশায় সব সময়ই তাঁকে খুশি রাখার চেষ্টা করেছি। এখনো নামাজ শেষে সব সময়ই মায়ের জন্য মোনাজাত করি।
অজান্তেই মায়ের কাছে নালিশ করে বসি (অপু বিশ্বাস)
মাকে হারিয়েছি চার বছর হয়ে গেল। এখনো বিশ্বাস করতে পারি না মা নেই। আমি অপু বিশ্বাস হতে পেরেছি মায়ের জন্যই। যখনই সফলতা পেয়েছি, মায়ের সঙ্গে শেয়ার করেছি, কষ্ট পেলেও তাঁকে জড়িয়ে ধরে কেঁদেছি। আমার জীবনে যত ঝড় এসেছে সব মা-ই সামলেছেন। মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তিনি আমাকে বিভিন্ন বিষয়ে বুঝিয়েছেন, সাপোর্ট দিয়েছেন। দুনিয়ার সবাই আমাকে ভুল বুঝলেও মা আমাকে বুঝতেন। আমার শেষ আশ্রয় ছিল মা। মা না থাকার কষ্টটা প্রতি মুহূর্তে টের পাই এখন। কখনো কখনো মনের অজান্তে তাঁর কাছে নালিশ করে বসি। ভাবি, মা আমার ছায়াসঙ্গী হয়েই আছেন। এই বিশেষ দিবসে চাই সব সন্তানই তাদের বাবা-মাকে জীবিত অবস্থায় ভালোবাসুক, সময় দিক। কারণ একবার জীবন থেকে হারিয়ে গেলে এই অমূল্য সম্পদ আর পাওয়া যাবে না। বিশ্বের সব মাকে মা দিবসের শুভেচ্ছা।
এই কষ্ট সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে (বাপ্পী চৌধুরী)
জীবদ্দশায় এই দিবসগুলো অতটা বুঝতেন না মা। আমি প্রতি ঘণ্টায় তাঁকে বলতাম, হ্যাপি মাদারস ডে। আর মা আমাকে বকা দিতেন। এই দিনটা খুব স্পেশাল ছিল আমার কাছে। কাজ রাখতাম না। কেক কাটতাম, মাকে গিফট দেওয়ার চেষ্টা করতাম। খুব অল্পতে খুশি হয়ে যেতেন মা। এবার প্রথম দিবসটিতে আমার পাশে মা নেই। ভাবতেই পারছি না মা ছাড়া দিনটি কিভাবে কাটাব। মা দীর্ঘদিন অসুস্থ ছিলেন, তাঁকে বাঁচিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলাম আমরা, পারলাম না। এই কষ্ট সারা জীবন বয়ে বেড়াতে হবে। আজ সারা দিন মায়ের সঙ্গে আমার সুখের স্মৃতিগুলো মনে করার চেষ্টা করব, আর সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করব। মা যেখানেই থাকুন যেন আমার ভালোবাসা অনুভব করতে পারেন—ঈশ্বরের কাছে সেই কামনা করি।
মা আমি বের হলাম (পূজা চেরী)
মায়ের ডানায় নিজেকে সবচেয়ে নিরাপদ ভাবতাম। বয়সের পার্থক্য অনেক, তবু আমরা ছিলাম বন্ধু। আমি যেমন মাকে বিশ্বাস করতাম, মা-ও বিশ্বাস করতেন আমাকে। সারাক্ষণ আমার আশপাশেই থাকতেন। প্রায়ই বলতেন, ‘পূজা আমার হাতের লাঠি, আমার শক্তি।’ আমার মন এখনো পুরোপুরি বিশ্বাস করতে পারেনি যে মা আর নেই। মনে হয় মা সঙ্গেই আছেন। বাসায় মায়ের ঘরটা এখনো খালি। আমি ভাবি, মা ঘরেই আছেন। আসলে ভুলে যাই মা আর নেই। আগে যেমন বাসা থেকে কাজে বের হলে, রুমের সামনে দাঁড়িয়ে বলতাম, মা আমি বের হলাম। এখনো ভুল করে সেটা বলে ফেলি। মা আমাকে শক্ত মনের মানুষ মনে করতেন। বলতেনও, ‘সামনে যতই বাধা আসুক তুমি সেটা ডিঙাতে পারবে।’ তাঁর ধারণা পেশাগত জায়গায় আমি অনেক বড় হব। মায়ের সেই স্বপ্নটা আমাকে পূরণ করতেই হবে। মা যেখানেই থাকুন, ভালো থাকুন।
বিজনেস আওয়ার/১২ মে/ রানা