ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অবশেষে ইসরায়েলকে ‘অপরাধী’দেশের তালিকায় যুক্ত করলো জাতিসংঘ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৫:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪
  • 103

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরপরাধ শিশুদের ওপর হামলা ও হাজার হাজার শিশুর মৃত্যুর কারণে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ‘অপরাধী’ দেশের তালিকায় যুক্ত করেছে জাতিসংঘ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ আরদান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, শুক্রবার (৭ জুন) তিনি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পান। সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত লজ্জাজনক ও জাতিসংঘের এমন কাজে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, এই পদক্ষেপের কারণে জাতিসংঘের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ও জাতিসংঘকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলকে মূলত একজন মাত্র ব্যক্তির সিদ্ধান্তেই এই তালিকায় ফেলা হয়েছে। তিনি হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতিসংঘ ইসরায়েলকে নয়, নিজেকেই ইতিহাসের কালো তালিকায় যুক্ত করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে জাতিসংঘের বার্ষিক ‘চিল্ড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ প্রতিবেদনে ইসরায়েলের তালিকাভুক্তির বিষয়টি জানান। বিষয়টি যাতে ফাঁস না হয়, সেজন্যই এমনটা করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ১৪ জুন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে।

এক জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদকেও এই তালিকায় যুক্ত করা হবে।

ইসরায়েলের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর চাইল্ডের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ৩৮ শিশুসহ প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়। তাছাড়া ৪২ শিশুসহ ২৫২ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস।

এদিকে, গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৭৩১ জন নিহত হয়েছে। গত মাসে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গাজায় মোট মৃত্যুর ৬৯ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশ ছিল নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের দাবি, এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে জাতিসংঘ হামাসের মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর করেছে। জাতিসংঘ বলেছে যে তারা এখন হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিসের (জিএমও) পরিবর্তে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করছে। এদিকে জিএমও বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে।

এদিকে, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার আল-আকসা হাসপাতালে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। ওই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত ও ৩০০ আহত ব্যক্তিকে আনা হয়, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন/ হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

অবশেষে ইসরায়েলকে ‘অপরাধী’দেশের তালিকায় যুক্ত করলো জাতিসংঘ

পোস্ট হয়েছে : ০৫:০০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৮ জুন ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার নিরপরাধ শিশুদের ওপর হামলা ও হাজার হাজার শিশুর মৃত্যুর কারণে ইসরায়েলি সেনাবাহিনীকে ‘অপরাধী’ দেশের তালিকায় যুক্ত করেছে জাতিসংঘ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত গিলাদ আরদান।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া পোস্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, শুক্রবার (৭ জুন) তিনি এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন পান। সিদ্ধান্তটি অত্যন্ত লজ্জাজনক ও জাতিসংঘের এমন কাজে তিনি অত্যন্ত ক্ষুব্ধ।

ইসরায়েলের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইসরায়েল কাটজ বলেছেন, এই পদক্ষেপের কারণে জাতিসংঘের সঙ্গে ইসরায়েলের সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ও জাতিসংঘকে এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

এদিকে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বলেছেন, আমাদের সেনাবাহিনী বিশ্বের সবচেয়ে নৈতিক বাহিনী। তা সত্ত্বেও ইসরায়েলকে মূলত একজন মাত্র ব্যক্তির সিদ্ধান্তেই এই তালিকায় ফেলা হয়েছে। তিনি হলেন জাতিসংঘের মহাসচিব। এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে জাতিসংঘ ইসরায়েলকে নয়, নিজেকেই ইতিহাসের কালো তালিকায় যুক্ত করেছে।

জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক এক সংবাদ সম্মেলনে জানিয়েছেন, জাতিসংঘের এক কর্মকর্তা ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে দেখা করে জাতিসংঘের বার্ষিক ‘চিল্ড্রেন ইন আর্মড কনফ্লিক্ট’ প্রতিবেদনে ইসরায়েলের তালিকাভুক্তির বিষয়টি জানান। বিষয়টি যাতে ফাঁস না হয়, সেজন্যই এমনটা করা হয়েছে। প্রতিবেদনটি ১৪ জুন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে উপস্থাপন করা হবে।

এক জাতিসঙ্ঘ কর্মকর্তার উদ্ধৃতি দিয়ে ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসলামিক জিহাদকেও এই তালিকায় যুক্ত করা হবে।

ইসরায়েলের ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর চাইল্ডের তথ্যানুযায়ী, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে হামাসের হামলায় ৩৮ শিশুসহ প্রায় ১২০০ জন নিহত হয়। তাছাড়া ৪২ শিশুসহ ২৫২ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায় হামাস।

এদিকে, গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৩৬ হাজার ৭৩১ জন নিহত হয়েছে। গত মাসে জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে গাজায় মোট মৃত্যুর ৬৯ শতাংশ থেকে ৫২ শতাংশ ছিল নারী ও শিশু।

ইসরায়েলের দাবি, এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে জাতিসংঘ হামাসের মিথ্যা তথ্যের উপর নির্ভর করেছে। জাতিসংঘ বলেছে যে তারা এখন হামাস পরিচালিত সরকারি মিডিয়া অফিসের (জিএমও) পরিবর্তে গাজায় হামাস পরিচালিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যানের উপর নির্ভর করছে। এদিকে জিএমও বলছে, ইসরায়েলি হামলায় ১৫ হাজারের বেশি শিশু নিহত হয়েছে।

এদিকে, ডক্টরস উইদাউট বর্ডারস (এমএসএফ) জানিয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজার আল-আকসা হাসপাতালে ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা গেছে। ওই সময়ের মধ্যে কমপক্ষে ৭০ জন নিহত ও ৩০০ আহত ব্যক্তিকে আনা হয়, যাদের মধ্যে বেশিরভাগই নারী ও শিশু।

সূত্র: বিবিসি, রয়টার্স

বিজনেস আওয়ার/০৮ জুন/ হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: