স্পোর্টস ডেস্ক:বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে বল হাতে কোনো উইকেট নেই। প্রথম তিন ওভারে বেদম মার (ওভারপ্রতি ১০ রান খরচ) খেয়ে নিজের শেষ ওভার করার সাহসই পাননি। আর ব্যাট হাতে করেছেন ১৪ বলে মাত্র ৮ রান।
দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে নিউইয়র্কের স্পিনফ্রেন্ডলি পিচে করেছেন মাত্র ১ ওভার। উইকেট নেই, রান খরচ ৬।
বিশ্বসেরা টি-টোয়েন্টি অলরাউন্ডার হিসেবে যার বিশ্বকাপযাত্রা, সেই সাকিব আল হাসানের নামের পাশে উপরের দুইটি পরিসংখ্যান বড্ডই বেমামান। বিশ্বাস করতে কষ্ট হলেও এটিই সত্যি। নবমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে আসা সাকিব নিজের অভিজ্ঞতাকে উপস্থাপন করেছেন এভাবেই।
গেল বছর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও ভালো করতে পারেননি সাকিব। এরপর ইনজুরি ও চোখের সমস্যার কারণে কয়েক মাস বিরতি দিয়েছেন বাংলাদেশের সেরা এই অলরাউন্ডার। দীর্ঘ বিরতির পর বিশ্বকাপের আগে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হোমসিরিজে গায়ে জাতীয় দলের জার্সি জড়িয়েছেন সাকিব। তাতেও নেই কোনো পরিবর্তন। বিশ্বকাপেও ব্যর্থ।
দারুণ অফফর্মে থাকা সাকিবকে তাই বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে দেখতে চান না ভারতের সাবেক ক্রিকেটার বিরেন্দ্রর শেবাগ। নিজে থেকেই সাকিবের অবসর নেওয়া উচিত বলে মনে করেন এই ভারতীয়।
শেবাগ বলেন, ‘গত বিশ্বকাপেই আমার এমন মনে হয়েছে, ওকে আর টি-টোয়েন্টিতে খেলানো উচিত নয়। অনেক আগেই ওর অবসর নেওয়ার সময় হয়েছে। তুমি এত সিনিয়র ক্রিকেটার, নিজে অধিনায়ক ছিলে, তোমার পরিসংখ্যানের অবস্থা এমন, সাকিবের নিজেরই তো লজ্জা পাওয়া উচিত। নিজেরই বলা উচিত, আমি এই সংস্করণ থেকে অবসর নিচ্ছি।’
সাকিবকে অবসর নেওয়ার পরামর্শে নিজের উদাহরণ টানেন শেবাগ। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের সাবেক ওপেনার বলেন, ‘আমি তো দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় বিশ্বকাপ, যেটা শ্রীলঙ্কায় হয়েছিল। তখন যখন ডেল স্টেইন, মরনে মরকেল, আফগানিস্তানে একটা পেসার ছিল, স্বাচ্ছন্দ্যে আমি যখন ওদের মারতে পারছি, নির্বাচকদের বলে দিয়েছিলাম, আমাকে যেন টি-টোয়েন্টি দলে রাখা না হয়। আমি ওয়ানডে ও টেস্ট খেলবো। দিন শেষে নিজে তো বোঝা যায় আমার ব্যাটিং ভালো হচ্ছে না, বোলিং ভালো হচ্ছে না, দলের জন্য অবদানই রাখতে পারছি না। তাহলে খেলে কী হবে? আমার হিসেবে তো ওর (অবসরের) সময় আগেই হয়েছে।’
গতকাল প্রোটিয়া পেসার অ্যানরিখ নরকিয়াকে পুল করতে গিয়ে আউট হন সাকিব। কিন্তু শেবাগের মতে, সাকিব পুল শট খেলার মতো ক্রিকেটার নন। তার পিচে আরও কিছুক্ষণ থাকা উচিত ছিল। যে শট জানা আছে, ওগুলো খেলা উচিত ছিল।
শেবাগ বলেন, ‘যদি অভিজ্ঞতার জন্য তাকে দলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়, তাহলে আমাদের এটি দেখতে হতো না। অন্তত এই উইকেটে কিছুটা সময় টেকে থাকো। ব্যাপারটা এমন নয় যে, তুমি হেইডেন বা গিলক্রিস্ট হয়ে গেছ যে, শর্ট বলের পুল শট খেলতে পারবা। তুমি শুধু বাংলাদেশের একজন খেলোয়াড়। তুমি যেহেতু পুল শট খেলতে পারবা না, তাহলে জানা শটগুলো খেলো।’
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে সাকিব সর্বশেষ ফিফটি করেছেন ২০২২ সালে ২ জুলাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। এরপর ১৯টি ম্যাচ খেললেও সাকিবের ব্যাটে আর কোনো ফিফটি নেই।
বিজনেস আওয়ার/১১ মে/রানা