বিনোদন ডেস্ক: শোবিজ সড়কে বুঝেশুনে পা ফেলছেন নাজনীন নীহা। তাই এ পর্যন্ত যে কটি নাটকে কাজ করেছেন, দর্শকের সাড়া মিলেছে বেশ। তাঁর ঈদ নাটক এবং অভিনয় অধ্যায়ের পাতা উল্টেছেন কামরুল ইসলাম।
দুই নাটকে ঈদ
সম্ভাবনা জাগিয়েছেন নীহা, তবে কাজের স্রোতে এখনই ভাসতে নারাজ।
তাই সময় নিয়ে কম কাজ করছেন তিনি। ২১ জুন অন্তর্জালে এসেছে তাঁর অভিনীত নাটক ‘লাভ রেইন’। জাকারিয়া সৌখিন পরিচালিত এই নাটকে নিহার সঙ্গে আছেন তৌসিফ মাহবুব। অন্য নাটক রুবেল হাসানের ‘অবুঝ পাখি’আসবে কয়েক দিনের মধ্যে।
ঈদের মতো উৎসবে মাত্র দুটি নাটক কেন? জবাবে নীহা বলেন, ‘যাঁরা বেশি কাজ করেন, তাঁরা হয়তো তাঁদের জায়গা থেকে পারেন। আমি এখনো শিখছি। কিছুই পেরে উঠিনি। এখন শেখার সময়।
একটা কাজ শেষ করে কিছুদিন বিরতি নিই, যাতে পরবর্তী কাজের প্রস্তুতি ঠিকঠাক নিতে পারি। এ জন্য কম নাটক করছি। আর মানসম্পন্ন কাজ করতে চাই। সামনে হয়তো কাজের সংখ্যা কিছুটা বাড়বে। তবে এক ঈদে ১৫ থেকে ২০টি নাটক আসবে, এমনটা হবে না।
দর্শকের দৃষ্টিতে অভিনয়ের উন্নতি
মুক্তির তিন দিনেই ‘লাভ রেইন’-এর ভিউ প্রায় আড়াই মিলিয়ন। ভিউয়ের পাশাপাশি নীহার অভিনয়ের উন্নতি চোখে পড়ছে দর্শকের। অনেকেই সে কথা জানাচ্ছেন মন্তব্যের ঘরে। নীহা বলেন, ‘প্রতিক্রিয়া খুবই ভালো। ক্যারিয়ারের প্রথম থেকেই দর্শকের অনেক ভালোবাসা পাচ্ছি। এবার সবাই আমার অভিনয়ের প্রশংসা করছেন। দর্শক বলছেন, অভিনয়ে আগের চেয়ে উন্নতি করেছি। এ জন্য খুব ভালো লাগছে। দায়িত্ব আরো বেড়ে গেল। সামনে কাজের প্রতি আরো মনোযোগী থাকব। ঈদের এত এত কাজের ভিড়ে আমার অভিনীত নাটকটিও দর্শকের নজরে পড়ছে, এটাই তো দারুণ ব্যাপার।’
বিহাইন্ড দ্য সিন
‘এই নাটকের শুটিং হয়েছে বেশ আগে। ছয়-সাত দিনের মতো শুটিং করেছি। অনেক লোকেশন, এখন মনেও পড়ছে না সেভাবে। জাকারিয়া সৌখিন ভাই প্রতিটি দৃশ্য খুব বুঝিয়ে শট নেন। তৌসিফ ভাইও অনেক সহযোগিতা করেছেন, পরিচালকের মতো করে আমাকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। তাঁর জন্যই হয়তো এই নাটকে আমার অভিনয়টা ভালো হয়েছে। আমি বলছি না, অনেক ভালো হয়েছে; সামনে আরো ভালো করতে হবে’, নাটকটির শুটিং অভিজ্ঞতা জানিয়ে বললেন নীহা।
বৃষ্টি দিনের রুটিন
নাটকের নামে যেমন বৃষ্টির কথা, দৃশ্যেও আছে। সেই সুবাদে প্রশ্ন রাখা হয়, বৃষ্টির দিন কিভাবে কাটে? জবাবে অভিনেত্রী বলেন, ‘যখন বাসায় থাকি, বৃষ্টির সময়ে খিচুড়ি রান্না হয়। আমার মনে হয়, বৃষ্টি হলে সবাই খিচুড়ি খেতে চায়। আর বৃষ্টির দিনে ঘুমাতে খুব ভালো লাগে, তাই ঘুমাই। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে পরিবার, বন্ধুদের সঙ্গে পছন্দের কোনো জায়গায় ঘুরতে যাই।’
নীহা যখন দর্শক
ঈদে নিজের অভিনীত নাটক কম, তাই বিস্তর সময় পেয়েছেন নীহা। এই ফাঁকে অন্যদের কনটেন্ট দেখেছেন কি না? তাঁর উত্তর, “ঈদের একটি কাজই দেখেছি, ‘তুফান’। খুবই ভালো লেগেছে। এ জন্য ফেসবুকেও পোস্ট করেছি। ছবিতে শাকিব খান ভাইয়ের লুক একদম আলাদা লেগেছে। তিনি তো এমনিতে বড় তারকা, এবার রায়হান রাফী ভাইয়ের সঙ্গে তাঁর কম্বিনেশন দারুণ হয়েছে। যারা বাংলা ছবি নিয়ে নাক সিটকায়, ‘তুফান’ দেখলে তাদের ধারণা পাল্টে যাবে।”
আপাতত ছোট পর্দা
চলচ্চিত্র ও ওয়েব জগৎ থেকে ডাক আসছে। তবে এখনই সেদিকে পা বাড়াতে চান না নীহা। তিনি বলেন, ‘এখনো কোনো চলচ্চিত্র বা ওয়েব কনটেন্টে যুক্ত হইনি। আমি আসলে প্রস্তুত হচ্ছি। চলচ্চিত্র তো একটা বড় প্ল্যাটফরম, এর জন্য সঠিক প্রস্তুতি নিয়েই আসতে চাই। আপাতত ছোট পর্দা নিয়েই খুশি।’
লক্ষ্য বহুদূর
ছোটবেলা থেকেই অভিনেত্রী হতে চেয়েছেন, এমন নয়। শোবিজে এসেই অভিনয়ের প্রেমে পড়েছেন। তাই ভবিষ্যতের ভাবনা নিয়ে নীহা বলেন, ‘আপাতত অভিনয় নিয়েই ভাবছি। দর্শকের পছন্দের অভিনেত্রী হতে চাই। দর্শক যেন আমাকে মনে রাখেন। ২০ থেকে ৩০ বছর পরে কিংবা আমি বেঁচে না থাকলেও সবাই যেন মনে রাখেন, সে রকম কাজ করতে চাই। এর পাশাপাশি ব্যবসা করব, এই ইচ্ছাটা ছোটবেলা থেকেই।’
শেষে এসে শুরুর গল্প
নীহা জানান, তাঁর এক ফুফাতো ভাই শোবিজে কাজ করেন। তাঁর পরামর্শে শখের বশে ফটোশুট দিয়ে ২০২০ সালে ক্যামেরার সামনে আসেন নীহা। বাকিটা শোনা যাক তাঁর মুখে, ‘ফটোশুটের কিছু দিন পরই শুরু হয় কভিড মহামারির লকডাউন। তাই পরে অনেক দিন আর কাজ করা হয়নি। লকডাউন শেষে আরো কিছু ফটোশুট করি। কাজ করতে করতে অভিনয়ের প্রতি ভালোবাসা বেড়ে গেছে। এখন এটাই আমার পেশা ও আবেগ। শুরুর দিকে পরিবার খুব একটা রাজি না থাকলেও এখন উৎসাহ দেয়।’
বিজনেস আওয়ার/২৫ জুন/ রানা