ঢাকা , শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গাজায় প্রতিদিন গড়ে পঙ্গু হচ্ছে ১০ শিশু

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪
  • 40

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে যত মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। সেখানে প্রতিদিনই ছোট ছোট শিশুরা যুদ্ধের তাণ্ডবে প্রাণ হারাচ্ছে বা আহত হচ্ছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা আনরোয়া জানিয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন গড়ে ১০টি শিশু একটি অথবা দুটি পা হারিয়ে পঙ্গু হচ্ছে।

আনরোয়ার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহর থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই হিসাবের মধ্যে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দেওয়া তথ্য যোগ করা হয়নি। ইউনিসেফের তথ্য বলছে, ইসরায়েলের হামলায় বহু শিশু তাদের হাত অথবা বাহু হারিয়েছে।

ফিলিপ লাজারিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০ জন শিশু একটি পা বা দুটি পা হারাচ্ছে। এটা থেকে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে সেখানকার একটি শিশুর শৈশব কেমন হতে পারে।

লাজারিনি জানিয়েছেন, প্রায় চার হাজার শিশু নিখোঁজ হয়েছে। প্রায় ৮ মাস ধরে চলা সংঘাতে ১৭ হাজার শিশু তাদের অভিভাবককে হারিয়েছে। ভয়ানক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার শিশু নিহত হয়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, গাজার মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। সেখানে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মধ্যে এই সমস্যা তীব্র।

সেখানে ৪ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ভয়াবহ আগ্রাসনে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাকও সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে একদিকে খাবার নিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ি অপেক্ষা করছে অন্যদিকে তীব্র ক্ষুধায় ছটফট করছে গাজার ছোট ছোট শিশু, নারী, পুরুষ এবং বয়স্ক লোকজন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে অভিযানের নামে গত ৮ মাসে কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬৫৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮৬ হাজার ২৩৭ জন।

সংঘাত শুরুর পর কয়েকবার মাত্র ত্রাণবাহী গাড়ি গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। বাইরে থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এবং ক্রমাগত হামলা চলতে থাকায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। ছোট ছোট শিশুরা খাবারের অভাবে এবং তীব্র পুষ্টিহীনতায় মারা যাচ্ছে।

একদিকে দফায় দফায় বোমা হামলা অন্যদিকে খাদ্য সংকট, বাসস্থানের সংকট, একটু মাথা গোজার নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব সবকিছু মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের যেন কোনো শেষ নেই। কবে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে সেটাও কারও জানা নেই।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুন/হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

গাজায় প্রতিদিন গড়ে পঙ্গু হচ্ছে ১০ শিশু

পোস্ট হয়েছে : ০১:২০ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর আগ্রাসনে যত মানুষ নিহত বা আহত হয়েছে তার মধ্যে অধিকাংশই নারী এবং শিশু। সেখানে প্রতিদিনই ছোট ছোট শিশুরা যুদ্ধের তাণ্ডবে প্রাণ হারাচ্ছে বা আহত হচ্ছে। জাতিসংঘের ফিলিস্তিনি শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা আনরোয়া জানিয়েছে, ইসরায়েলের বর্বর আগ্রাসনে অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিন গড়ে ১০টি শিশু একটি অথবা দুটি পা হারিয়ে পঙ্গু হচ্ছে।

আনরোয়ার প্রধান ফিলিপ লাজারিনি সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহর থেকে এক সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য তুলে ধরেন। তিনি বলেন, এই হিসাবের মধ্যে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফের দেওয়া তথ্য যোগ করা হয়নি। ইউনিসেফের তথ্য বলছে, ইসরায়েলের হামলায় বহু শিশু তাদের হাত অথবা বাহু হারিয়েছে।

ফিলিপ লাজারিনি বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০ জন শিশু একটি পা বা দুটি পা হারাচ্ছে। এটা থেকে আপনি সহজেই বুঝতে পারবেন যে সেখানকার একটি শিশুর শৈশব কেমন হতে পারে।

লাজারিনি জানিয়েছেন, প্রায় চার হাজার শিশু নিখোঁজ হয়েছে। প্রায় ৮ মাস ধরে চলা সংঘাতে ১৭ হাজার শিশু তাদের অভিভাবককে হারিয়েছে। ভয়ানক পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, সংঘাতের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার শিশু নিহত হয়েছে।

তিনি আরও জানিয়েছেন যে, গাজার মোট জনসংখ্যার ৯০ শতাংশেরও বেশি তীব্র অপুষ্টিতে ভুগছে। সেখানে প্রতি পাঁচজনের মধ্যে একজনের মধ্যে এই সমস্যা তীব্র।

সেখানে ৪ লাখ ৯৫ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি ভয়াবহ খাদ্য ঘাটতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। ইসরায়েলি বাহিনী ভয়াবহ আগ্রাসনে ত্রাণবাহী কোনো ট্রাকও সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। ফলে একদিকে খাবার নিয়ে ত্রাণবাহী গাড়ি অপেক্ষা করছে অন্যদিকে তীব্র ক্ষুধায় ছটফট করছে গাজার ছোট ছোট শিশু, নারী, পুরুষ এবং বয়স্ক লোকজন।

গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় হামাস। এরপরেই গাজায় পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েলি বাহিনী। সেখানে অভিযানের নামে গত ৮ মাসে কমপক্ষে ৩৭ হাজার ৬৫৮ জনকে হত্যা করা হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরও ৮৬ হাজার ২৩৭ জন।

সংঘাত শুরুর পর কয়েকবার মাত্র ত্রাণবাহী গাড়ি গাজায় প্রবেশের অনুমতি পেয়েছে। বাইরে থেকে কোনো সহায়তা না পাওয়ায় এবং ক্রমাগত হামলা চলতে থাকায় গাজায় ভয়াবহ বিপর্যয় তৈরি হয়েছে। ছোট ছোট শিশুরা খাবারের অভাবে এবং তীব্র পুষ্টিহীনতায় মারা যাচ্ছে।

একদিকে দফায় দফায় বোমা হামলা অন্যদিকে খাদ্য সংকট, বাসস্থানের সংকট, একটু মাথা গোজার নিরাপদ আশ্রয়ের অভাব সবকিছু মিলিয়ে ফিলিস্তিনিদের দুর্ভোগের যেন কোনো শেষ নেই। কবে এই পরিস্থিতি ঠিক হবে সেটাও কারও জানা নেই।

বিজনেস আওয়ার/২৬ জুন/হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: