ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আর বেঁচে নেই

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২০
  • 62

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আর নেই (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন।

বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তখন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আদ-দ্বীন হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এ অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু গত শনিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে সকালের দিকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। এরপরে দুপুরের পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

গতকাল শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) এক ভিডিও বার্তায় হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বলেন, গত ১৫ তারিখ থেকে স্যার এখানে ভর্তি আছেন। স্যার এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। স্যার এখন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন। স্যারের রক্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করেছি। কিন্তু তাতে কোনো একটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। ওনারা দেখেছেন। ওনারাও বলেছেন স্যারের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এর আগে গত বুধবার (২১ অক্টোবর) ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি হাসপাতালের ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। পরে ১৭ অক্টোবর সকালে তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। কিন্তু ওইদিন দুপুরের পরই তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে। এ কারণে গত ৩ বছর ধরে তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেননি। বয়োবৃদ্ধ খ্যাতিমান এ মানুষটির জীবনের শেষ সময়গুলোর বেশিরভাগই কেটেছে বিছানায় শুয়ে। চলাফেরা করতেন হুইল চেয়ারে।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)।

তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় পার করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ অক্টোবর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আর বেঁচে নেই

পোস্ট হয়েছে : ১০:১৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২০

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার রফিক-উল হক আর নেই (ইন্না-লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। শনিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল সাড়ে আটটার দিকে রাজধানীর আদ্-দ্বীন হাসপাতালের আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন।

বার্ধক্যজনিত জটিলতা দেখা দেয়ায় গত শুক্রবার (১৬ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মগবাজারের আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। তখন তার শারীরিক অবস্থা খারাপ ছিল। শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে আদ-দ্বীন হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন ছিলেন সাবেক এ অ্যাটর্নি জেনারেল। কিন্তু গত শনিবার (১৭ অক্টোবর) তিনি কিছুটা সুস্থবোধ করলে সকালের দিকে রিলিজ নিয়ে বাসায় ফিরে যান। এরপরে দুপুরের পরপরই ফের তাকে ভর্তি করা হয় হাসপাতালে।

গতকাল শুক্রবার (২৩ অক্টোবর) এক ভিডিও বার্তায় হাসপাতালের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাহিদ ইয়াসমিন বলেন, গত ১৫ তারিখ থেকে স্যার এখানে ভর্তি আছেন। স্যার এখন লাইফ সাপোর্টে আছেন। স্যার এখন সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় আছেন। স্যারের রক্তের পরীক্ষা-নিরীক্ষাগুলো করেছি। কিন্তু তাতে কোনো একটা উন্নতি দেখা যাচ্ছে না। মেডিক্যাল বোর্ডের সঙ্গে কথা বলেছি। ওনারা দেখেছেন। ওনারাও বলেছেন স্যারের শারীরিক অবস্থা সঙ্কটাপন্ন। আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি।

এর আগে গত বুধবার (২১ অক্টোবর) ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তাকে হাসপাতালের ভিআইপি কেবিনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয়। তিনি হাসপাতালের ডা. রিচমন্ড রোল্যান্ড গোমেজের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। পরে ১৭ অক্টোবর সকালে তার শারীরিক অবস্থা স্বাভাবিক হওয়ায় হাসপাতাল থেকে বাসায় নেওয়া হয়। কিন্তু ওইদিন দুপুরের পরই তাকে ফের হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে বাম পায়ের হাঁটুতে অস্ত্রোপচারের পর থেকে তার চলাফেরা সীমিত হয়ে পড়ে। এ কারণে গত ৩ বছর ধরে তিনি স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে পারেননি। বয়োবৃদ্ধ খ্যাতিমান এ মানুষটির জীবনের শেষ সময়গুলোর বেশিরভাগই কেটেছে বিছানায় শুয়ে। চলাফেরা করতেন হুইল চেয়ারে।

ব্যারিস্টার রফিক-উল হক ১৯৩৫ সালের ২ নভেম্বর কলকাতার সুবর্ণপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৯০ সালের ৭ এপ্রিল থেকে একই বছরের ১৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা ছিলেন। তিনি ছিলেন রাষ্ট্রের ষষ্ঠ প্রধান আইন কর্মকর্তা (অ্যাটর্নি জেনারেল)।

তিনি ১৯৫৫ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক, ১৯৫৭ সালে দর্শন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৮ সালে এলএলবি পাস করেন। ১৯৬২ সালে যুক্তরাজ্য থেকে বার এট ল’ সম্পন্ন করেন তিনি। ১৯৬৫ সালে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী হিসেবে এবং ১৯৭৩ সালে আপিল বিভাগের আইনজীবী হিসেবে আইন পেশা শুরু করেন তিনি। বর্ণাঢ্য জীবনে আইন পেশায় দীর্ঘ প্রায় ৬০ বছরেরও বেশি সময় পার করেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার আইনজীবী ছিলেন।

বিজনেস আওয়ার/২৪ অক্টোবর, ২০২০/এ

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: