বিজনেস আওয়ার ডেস্ক:বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি জিহাদ হাওলাদার ও সিয়াম হোসেনকে আবারও ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। শুক্রবার (৫ জুলাই) এই নির্দেশ দেন বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতের প্রধান বিচারপতি শুভঙ্কর বিশ্বাস।
এদিন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বিচারপতির সামনে হাজির করানো হয় জিহাদ হাওলাদার ও সিয়াম হোসেনকে। এসময় বিচারপতি শুভঙ্কর বিশ্বাস পৃথকভাবে দুই আসামির বক্তব্য শোনেন। আসামিদের বক্তব্য শোনার পর জিহাদ তাদের জামিন নামঞ্জুর করে ফের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে নির্দেশ দেন বিচারপতি। পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ১৯ জুলাই।
বারাসাত জেলা আদালতের আইনজীবী এ জামাল বলেন, জিহাদ ও সিয়ামকে আদালতে আজ সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশ ছিল। কিন্তু তা না করে, ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের এজলাসে হাজির করানো হয়েছে। দুই আসামির বক্তব্য শুনেছেন বিচারপতি। পরে সবকিছু বিবেচনা করে জিহাদ ও সিয়ামের জামিন নামঞ্জুর করে ১৯ জুলাই পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন আদালত।
এই আইনজীবী আরও বলেন, মোহাম্মদ সিয়াম ও জিহাদকে গ্রেফতার করার পরে ১৬৪ ধারায় ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। সাক্ষী হিসাবে ১৬১ ধাযরায় পিন্টু দাস ও সঞ্জয় লাইয়া বলে দুই ব্যক্তির জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছিল। সেখানে জিহাদ ও সিয়ামকে কারা মুম্বাই থেকে ভাড়া করে এসেছিল, তা জানা যায়।
এই মামলায় কতটা অগ্রগতি হয়েছে, সে বিষয়ে আইনজীবী এ জামাল জানান, বাগজোলা খাল থেকে সিআইডি কর্মকর্তারা যেসব হাড় উদ্ধার করেছেন, সেগুলো মানুষের কি না, তা জানার জন্য ফরেনসিক পরীক্ষা করতে দেওয়া হয়েছে। আর গত ৯ জুন আরও একটি মামলা করা হয়েছে।
‘আজ খামবন্দি অবস্থায় নতুন একটি আবেদন নিয়ে বিচারপতির কাছে আসে সিআইডি। কিন্তু আবেদনটি কোন বিষয়ে ছিল, তা তদন্তর অগ্রগতি স্বার্থে কেউ বলতে পারবে না। ১৯ জুলাই দুই আসামিকে আদালতে তোলা হলে, জানা যেতে পারে যে সিআইডির নতুন কোনো আবেদন আছে কি না।’
এর আগে ২১ জুন জিহাদ ও সিয়ামকে বারাসাত জেলা ও দায়রা আদালতে সশরীরে হাজির করানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন আদালত। কিন্তু জেল কর্তৃপক্ষের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যক গাড়ি না থাকায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাদের এজলাসে হাজির করা হয়েছিল।
চলতি বছরের ১৩ মে কলকাতার নিউটাউন এলাকার সঞ্জীবা গার্ডেনস আবাসনের একটি ফ্ল্যাটে হত্যার শিকার হন বাংলাদেশের ঝিনাইদহ-৪ আসনের এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার। হত্যার ১৫ দিন পরে সেই আবাসনের সেপটিক ট্যাংক থেকে উদ্ধার করা হয় আনারের মরদেহের কিছু অংশ। যদিও এই অংশগুলো এমপি আনারেরই কিনা, তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
উদ্ধারকৃত এই মাংসের টুকরা পরীক্ষার জন্য এরই মধ্যে ভারতের সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয়েছে। প্রয়োজনে করা হবে ডিএনএ টেস্টও। আর এই সময়ের মধ্যে আরও হাড় ও মাথার খুলি উদ্ধার করা গেলে এই খুনের তদন্ত গতি পাবে বলে দাবি তদন্তকারী কর্মকর্তাদের।
এমপি আনার হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে গিয়ে সিয়ামের বিষয়টিও সামনে আসে। গত ৭ জুন বাংলাদেশ সীমান্তবর্তী পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বনগাঁ এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করে পশ্চিমবঙ্গ পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগ সিআইডি।
বিজনেস আওয়ার/০৫জুলাই/ হাসান