ঢাকা , রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৩ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালী লাইফ: চেয়ারম্যানসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

  • পোস্ট হয়েছে : ১২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪
  • 70

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ কোম্পানির আট কর্মকর্তার নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কোম্পানিটির ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) এই মামলা (নম্বর-১৭) করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, মোস্তফা কামরুস সোবহান, শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, তাসনিয়া কামরুন অনিকা, ফজলুতুননেসা, নূর-ই-হাফজা এবং কোম্পানির সাবেক সিএফও ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদ বিন আমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আত্মসাতের বিষয়টি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদন্তে উঠে আসার পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ওই আত্মসাতের টাকা অফিস ভাড়া হিসেবে গ্রহণের পক্ষে ভাড়া চুক্তিনামা তৈরি করে দাখিল করেন। চুক্তিনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, চুক্তিপত্রে ভবন মালিক হিসেবে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও কোম্পানির পক্ষে তার মেয়ের জামাতা আরেক পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েল স্বাক্ষর করেছেন।

কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বা চেয়ারম্যান এতে স্বাক্ষর করেননি। ২০১৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বছরভিত্তিক ফ্লোর এরিয়ার অবান্তর চাহিদা নির্ধারণ করে মোট ১৮৪ কোটি ৫২ লাখ ২২ হাজার ৮০০ টাকার ভাড়া চুক্তি ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বরে স্বাক্ষর করা হয়েছে। জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অবান্তর চাহিদা নির্ধারণ করে একটি কথিত চুক্তিনামা তৈরি করা হয়।

চুক্তিনামায় ১০০ টাকার যে চারটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর গ্রহণ করে ১৭ নভেম্বর নরসিংদীর জেলা ট্রেজারিতে সরবরাহ করে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পেইডআপ ক্যাপিটাল বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে প্রতিটি ১০ টাকা দরে ১ কোটি ৫ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কোম্পানির পরিচালক ও প্রথম চেয়ারম্যান নূর-ই-হাফজা, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এই কোম্পানিরও চেয়ারম্যান) পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন, পরিচালক শাফিয়া সোবহান (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের পুত্রবধূ) ও শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েলের (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা) কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ না করেই তাদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়। দুদক বলছে, পরবর্তী সময়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানির এফডিআরের বিপরীতে সাউথ বাংলা ব্যাংকে হিসাব খুলে ঋণ হিসেবে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা উত্তোলন এবং ব্যাংকে কোম্পানির সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ৫৫ লাখসহ মোট ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আসামিরা একই ব্যাংকে কোম্পানির হিসাবে জমা করেন, যা উল্লিখিত পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের মূল্য হিসেবে প্রদর্শন করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস তার ছেলে মোস্তফা কামরুস সোবহান ও মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার কাছ থেকে ২৬ লাখ ৮০ হাজারটি শেয়ার বিনামূল্যে লাভ করে পরিচালক হন। পরবর্তী সময়ে মোস্তফা কামরুস সোবহান তার স্ত্রী শাফিয়া সোবহান চৌধুরীর কাছ থেকে তিন লাখ শেয়ার, তাসনিয়া কামরুন অনিকা তার স্বামী শেখ মোহম্মদ ডানিয়েলের কাছ থেকে ১২ লাখ ও মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের স্ত্রী ফজলুতুননেসা রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে ৬ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে লাভ করেন।

এছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ১৪ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার তার মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়াকে, ২ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার তার স্ত্রী ফজলুতুননেসাকে ও ৬ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার শাফিয়া সোবহান চৌধুরী ও তার স্বামী মোস্তফা কামরুস সোবহানকে হস্তান্তর করেন।

এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শেয়ারধারণের মাধ্যমে বিধিবহির্ভূতভাবে একই পরিবারের সাত সদস্য কোম্পানির বোর্ডে পরিচালক হয়ে পারিবারিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা মীর রাশেদ বিন আমানকে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ দিয়ে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

এজাহারে অভিযোগ, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস সুপরিকল্পিতভাবে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকা করে মোট ১৮ কোটি টাকা বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির হিসাব থেকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটারে স্থানান্তর করেন।

এছাড়া বোর্ড সভার কার্যবিবরণীর জাল উদ্ধৃতাংশ দাখিল করে কোম্পানির এফডিআরের বিপরীতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও কমার্স ব্যাংক থেকে মোট ১৯৫ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকার ঋণ নিয়ে ৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা কোম্পানির বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তরের পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে আত্মসাৎ করেন। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কমিউনিকেশন লিমিটেড, ড্রাগন সোয়েটার লিমিটেড, ইম্পেরিয়াল সোয়েটার লিমিটেড এবং ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লিমিটেডে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে প্রতি মাসে ২ লাখ ও তার পরিবারের ছয় সদস্য ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া প্রতি মাসে ২ লাখ, তাসনিয়া অনিকা প্রতি মাসে ২ লাখ, মোস্তফা কামরুস সোবহান প্রতি মাসে ৩ লাখ, শাফিয়া সোবহান চৌধুরী প্রতি মাসে ১ লাখ, ফজলুতুননেসা প্রতি মাসে ২ লাখ, শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েল প্রতি মাসে ২ লাখ ও সাবেক চেয়ারম্যান নূর-ই-হাফজা প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা করে আটজন পরিচালক অবৈধভাবে বেতন হিসেবে দেখিয়ে মোট ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করে তাদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেছেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সোনালী লাইফ: চেয়ারম্যানসহ আট কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

পোস্ট হয়েছে : ১২:০৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসসহ কোম্পানির আট কর্মকর্তার নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

কোম্পানিটির ১৮৭ কোটি ৮৪ লাখ টাকা আত্মসাতের অভিযোগে বৃহস্পতিবার দুদকের সহকারী পরিচালক মো. রাকিবুল হায়াত সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে (ঢাকা-১) এই মামলা (নম্বর-১৭) করেন।

মামলার অপর আসামিরা হলেন- পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া, মোস্তফা কামরুস সোবহান, শাফিয়া সোবহান চৌধুরী, তাসনিয়া কামরুন অনিকা, ফজলুতুননেসা, নূর-ই-হাফজা এবং কোম্পানির সাবেক সিএফও ও মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা মীর রাশেদ বিন আমান।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, আত্মসাতের বিষয়টি বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের তদন্তে উঠে আসার পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ওই আত্মসাতের টাকা অফিস ভাড়া হিসেবে গ্রহণের পক্ষে ভাড়া চুক্তিনামা তৈরি করে দাখিল করেন। চুক্তিনামা পর্যালোচনায় দেখা যায়, চুক্তিপত্রে ভবন মালিক হিসেবে মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ও কোম্পানির পক্ষে তার মেয়ের জামাতা আরেক পরিচালক শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েল স্বাক্ষর করেছেন।

কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা বা চেয়ারম্যান এতে স্বাক্ষর করেননি। ২০১৩ থেকে ২০২৭ সাল পর্যন্ত বছরভিত্তিক ফ্লোর এরিয়ার অবান্তর চাহিদা নির্ধারণ করে মোট ১৮৪ কোটি ৫২ লাখ ২২ হাজার ৮০০ টাকার ভাড়া চুক্তি ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বরে স্বাক্ষর করা হয়েছে। জালিয়াতি ও প্রতারণার মাধ্যমে অবান্তর চাহিদা নির্ধারণ করে একটি কথিত চুক্তিনামা তৈরি করা হয়।

চুক্তিনামায় ১০০ টাকার যে চারটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্প ব্যবহার করা হয়েছে, সেগুলো সিকিউরিটি প্রিন্টিং প্রেস থেকে বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ২০২৩ সালের ১৬ নভেম্বর গ্রহণ করে ১৭ নভেম্বর নরসিংদীর জেলা ট্রেজারিতে সরবরাহ করে।

মামলার এজাহারে অভিযোগ আনা হয়, সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের পেইডআপ ক্যাপিটাল বৃদ্ধির জন্য ২০১৮ সালে উদ্যোক্তা পরিচালকদের মধ্যে প্রতিটি ১০ টাকা দরে ১ কোটি ৫ লাখ প্লেসমেন্ট শেয়ার ইস্যুর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। কোম্পানির পরিচালক ও প্রথম চেয়ারম্যান নূর-ই-হাফজা, রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস এই কোম্পানিরও চেয়ারম্যান) পরিচালক ফৌজিয়া কামরুন, পরিচালক শাফিয়া সোবহান (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের পুত্রবধূ) ও শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েলের (মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা) কাছ থেকে কোনো টাকা গ্রহণ না করেই তাদের নামে মোট ৯ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার শেয়ার ইস্যু করা হয়। দুদক বলছে, পরবর্তী সময়ে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড কোম্পানির এফডিআরের বিপরীতে সাউথ বাংলা ব্যাংকে হিসাব খুলে ঋণ হিসেবে ৮ কোটি ৯৫ লাখ টাকা উত্তোলন এবং ব্যাংকে কোম্পানির সঞ্চয়ী হিসাব থেকে ১ কোটি ৫৫ লাখসহ মোট ১০ কোটি ৫০ লাখ টাকা উত্তোলন করে আসামিরা একই ব্যাংকে কোম্পানির হিসাবে জমা করেন, যা উল্লিখিত পরিচালকদের শেয়ার ক্রয়ের মূল্য হিসেবে প্রদর্শন করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস তার ছেলে মোস্তফা কামরুস সোবহান ও মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়ার কাছ থেকে ২৬ লাখ ৮০ হাজারটি শেয়ার বিনামূল্যে লাভ করে পরিচালক হন। পরবর্তী সময়ে মোস্তফা কামরুস সোবহান তার স্ত্রী শাফিয়া সোবহান চৌধুরীর কাছ থেকে তিন লাখ শেয়ার, তাসনিয়া কামরুন অনিকা তার স্বামী শেখ মোহম্মদ ডানিয়েলের কাছ থেকে ১২ লাখ ও মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের স্ত্রী ফজলুতুননেসা রূপালী ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি থেকে ৬ লাখ ২৫ হাজার শেয়ার হস্তান্তরের মাধ্যমে লাভ করেন।

এছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস ১৪ লাখ ৮০ হাজার শেয়ার তার মেয়ে ফৌজিয়া কামরুন তানিয়াকে, ২ লাখ ৩০ হাজার শেয়ার তার স্ত্রী ফজলুতুননেসাকে ও ৬ লাখ ৫০ হাজার শেয়ার শাফিয়া সোবহান চৌধুরী ও তার স্বামী মোস্তফা কামরুস সোবহানকে হস্তান্তর করেন।

এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় শেয়ারধারণের মাধ্যমে বিধিবহির্ভূতভাবে একই পরিবারের সাত সদস্য কোম্পানির বোর্ডে পরিচালক হয়ে পারিবারিক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করেন। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের জামাতা মীর রাশেদ বিন আমানকে কোম্পানির প্রধান অর্থ কর্মকর্তা ও ভারপ্রাপ্ত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগ দিয়ে এসব অর্থ আত্মসাৎ করা হয়।

এজাহারে অভিযোগ, মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস সুপরিকল্পিতভাবে ২০২৩ সালের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত প্রতি মাসে ৩ লাখ টাকা করে মোট ১৮ কোটি টাকা বোর্ডের অনুমোদন ছাড়া অবৈধভাবে সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির হিসাব থেকে নিজ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ড্রাগন সোয়েটারে স্থানান্তর করেন।

এছাড়া বোর্ড সভার কার্যবিবরণীর জাল উদ্ধৃতাংশ দাখিল করে কোম্পানির এফডিআরের বিপরীতে সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, সাউথ বাংলা এগ্রিকালচার ব্যাংক, ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক ও কমার্স ব্যাংক থেকে মোট ১৯৫ কোটি ৪২ লাখ ৮১ হাজার ২০০ টাকার ঋণ নিয়ে ৮৩ কোটি ৯৯ লাখ টাকা কোম্পানির বিভিন্ন হিসাবে স্থানান্তরের পর মোস্তফা গোলাম কুদ্দুসের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা করে আত্মসাৎ করেন। মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস চেয়ারম্যান থাকাকালীন প্রতারণা ও জালজালিয়াতির মাধ্যমে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ড্রাগন ইনফরমেশন টেকনোলজি ও কমিউনিকেশন লিমিটেড, ড্রাগন সোয়েটার লিমিটেড, ইম্পেরিয়াল সোয়েটার লিমিটেড এবং ড্রাগন সোয়েটার ও স্পিনিং লিমিটেডে বিভিন্ন সময়ে মোট ১৪১ কোটি ৫৬ লাখ ৯০ হাজার টাকা স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেন।

এছাড়া মোস্তফা গোলাম কুদ্দুস নিজে প্রতি মাসে ২ লাখ ও তার পরিবারের ছয় সদস্য ফৌজিয়া কামরুন তানিয়া প্রতি মাসে ২ লাখ, তাসনিয়া অনিকা প্রতি মাসে ২ লাখ, মোস্তফা কামরুস সোবহান প্রতি মাসে ৩ লাখ, শাফিয়া সোবহান চৌধুরী প্রতি মাসে ১ লাখ, ফজলুতুননেসা প্রতি মাসে ২ লাখ, শেখ মোহাম্মদ ডানিয়েল প্রতি মাসে ২ লাখ ও সাবেক চেয়ারম্যান নূর-ই-হাফজা প্রতি মাসে ২ লাখ টাকা করে আটজন পরিচালক অবৈধভাবে বেতন হিসেবে দেখিয়ে মোট ২ কোটি ২৪ লাখ টাকা নগদ উত্তোলন করে তাদের ব্যাংক হিসাবে স্থানান্তর করে আত্মসাৎ করেছেন।

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: