বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: বাংলাদেশে কোটা সংস্কারআন্দোলন থেকে এক দফা দাবির প্রেক্ষিতে দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভ দমনে ব্যর্থ হয়ে পদত্যাগ করতে বাধ্য হন শেখ হাসিনা। শেষ পর্যন্ত বলপ্রয়োগ করে হলেও ক্ষমতায় থাকতে চেয়েছিলেন বাংলাদেশের এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু দেশজুড়ে চলমান বিক্ষোভের চাপ এতটাই তীব্র ছিল যে তিনি তা সামলাতে পারেননি।
গত সোমবার (৫ আগস্ট) বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করার পরই ভারতে পালিয়ে যান শেখ হাসিনা। তিনি একা নন, সেদিন তার বোন শেখ রেহানা এবং আওয়ামী লীগের অনেক শীর্ষ নেতাই দেশ ছেড়ে পালান। তারা সবাই ভারতে আশ্রয় নেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) ইন্ডিয়া ট্যুডের এক প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছে যে, শেখ হাসিনার সঙ্গীরা নতুন কোনো দেশে আশ্রয়ের উদ্দেশ্যে ভারত ছাড়তে শুরু করেছেন। সরকারের শীর্ষ কিছু সূত্র ইন্ডিয়া ট্যুডে এ তথ্য নিশ্চিত করেছে। তবে তারা কে কোন দেশে যাচ্ছেন সে বিষয়টি স্পষ্ট নয়।
এছাড়া শেখ হাসিনা ভারত থেকে কোথায় যাবেন সেটাও এখনও পরিষ্কার নয়। শোনা যাচ্ছে, তিনি আশ্রয়ের জন্য আবেদন করেছিলেন যুক্তরাজ্যে। কিন্তু সেটি প্রত্যাখ্যান হয়েছে। এর ফলে তার পরবর্তী গন্তব্য কোথায় হবে, তা নিয়ে চলছে ব্যাপক জল্পনা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম দ্য হিন্দুর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতে শেখ হাসিনার আত্মীয়রা রয়েছেন। তাই এসব দেশে আশ্রয় খুঁজতে পারেন তিনি। পাশাপাশি, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের মতো দেশগুলোতেও আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তবে একটি সূত্র দ্য হিন্দুকে নিশ্চিত করেছে, আমিরাতে শেখ হাসিনার আশ্রয়ের অনুরোধ গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা কম।
এ অবস্থায় তৃতীয় কোনো দেশে যাওয়ার অনুমতি না পাওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনাকে আশ্রয় দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত। ১৯৭৫ সালে বাবা-মাসহ পরিবারের অন্য সদস্যরা হত্যার শিকার হলে একইভাবে ভারতে আশ্রয় পেয়েছিলেন তিনি।
এর আগে ইন্ডিয়া ট্যুডের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশ ছাড়ার জন্য শেখ হাসিনাকে মাত্র ৪৫ মিনিট সময় দিয়েছিল নিরাপত্তা বাহিনী। পরে একটি সামরিক প্লেনে চড়ে উড়াল দেন তিনি। এসময় তার সঙ্গে ছিলেন ছোট বোন শেখ রেহানা এবং অন্য ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা। তাদের বহনকারী প্লেনটি দিল্লির কাছে হিন্দন বিমানঘাঁটিতে অবতরণ করে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, শেখ হাসিনার সঙ্গে যে দলটি ভারতে পৌঁছেছিল, তারা বেশ কষ্টের মধ্যে ছিলেন। কারণ তাড়াহুড়ো করে তাদের দেশ ত্যাগ করতে হয়েছে। তারা নিজেদের সঙ্গে অতিরিক্ত কাপড়-চোপড় বা নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্রও সঙ্গে নিতে পারেননি। দেশত্যাগের প্রায় তিনদিন পার হলেও এখনো হিন্দন বিমানঘাঁটির কাছে একটি সেফ হাউজে অবস্থান করছেন শেখ হাসিনা।
বিজনেস আওয়ার/০৮ আগস্ট / হাসান