বিনোদন ডেস্ক: গত জুলাই মাস জুড়েই চলেছে ছাত্রদের বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। যার ফলাফল আসে গত ৫ আগস্ট। এই দিন পালিয়ে যান দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আন্দোলন চলাকালে অনেক তারকাই সংহতি জানিয়েছিলেন।
তাদের মধ্যে একজন তরুণ জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী তাসরিফ খান। আন্দোলন চলাকালে ‘রাজার রাজ্যে সবাই গোলাম’ শীর্ষক পুরোনো গানের সঙ্গে প্রতিবাদের মিছিলে যোগ দেন জনপ্রিয় এই ব্যান্ড সংগীত শিল্পী। পোস্টও করেছেন দেদার। এসবের কারণে নানা ধরণের সমস্যার মুখোমুখি হয়েছিলেন এই শিল্পী।
যেমন পেয়েছেন হুমকি, তেমনি হয়েছেন মানসিক নির্যাতনের শিকার। তার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে বেধরক পেটানো হয়েছিল লোহার রড দিয়ে। তারই বিশদ বর্ণণা দিয়ে পরশু এক ফেসবুক পোস্ট দিয়েছেন এই শিল্পী। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, একটা এজেন্সি ও সরকারী সংস্থার লোকজন মিলে তার বাসার নিচে গিয়ে তাকে ওই সময়ের সরকারের পক্ষে ভিডিও করার জন্য টাকা ও হুমকি দিয়ে এসেছিলেন।
এমনকি ওই সময় ফোনে তার ব্যান্ডের ড্রামার শান্তকে পেটানোর খবরও পান। এসবের পেছনে অনুঘটন হিসেবে কাজ করেছে সিনিয়ন একজন ইনফ্লুয়েন্সার। ঘটনার দিন তার ডাকেই বাসার নিচে নেমে এসেছিলেন তিনি।
তবে পুরো পোস্টে সেই ইনফ্লুয়েন্সারের নাম প্রকাশ করেননি তাসরিফ। অনেকেই মন্তব্যর ঘরে প্রশ্ন করে জানতে চাইলেও সেটা এড়িয়ে গেছেন এই শিল্পী।
তবে অনেকেই ধারণা করেছেন সেই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার সোলায়মান সুখন। কারণ পুরো আন্দোলন জুড়ে তাকে সেভাবে ছাত্রদের পক্ষ নিতে দেখা যায়নি। উল্টো আকার ইঙ্গিতে নানাভাবে সরকারের সাফাই করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে। পাশাপাশি নাম এসেছে আরেক ইনফ্লুয়েন্সার তৌহিদ আফ্রিদিরও। আসলে কার ডাকে সেদিন নিচে নেমেছিলেন সেটা স্পষ্ট করতে পারবে তাসরিফ।
তবে কালের কন্ঠের পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হয় সোলায়মান সুখনের কাছে। তিনি বলেন, ‘আমি ছাত্রদের পক্ষ নিয়ে ১১ জুলাই একটা পোস্ট করেছিলাম। তারপর থেকে পেশাগত জায়গা থেকে আমাদের একটা চাপ ছিল। এরপর আমি কোনো কিছুর সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না। এ কারণে অনেকেই আমার উপর রাগও করেছেন। অনেকেই বলেছেন, আপনি তরুণদের নিয়ে এত কথা বলেন কিন্তু আন্দোলনে তো যুক্ত ছিলেন না। আমি এখনো কোনো কথা বলছি না। নিজে বোঝার চেষ্টা করছি। কোনটা বলা উচিত কোনটা বলা উচিত না।’
তিনি বলেন, ‘এর মাঝে অনেক রিউমার এসেছে। তবে একটা কথা বলতে চাই, যৌক্তিক কোনো কিছুর বিরুদ্ধে থাকার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। আমি ১১ তারিখ সবকিছু পরিস্কার করেছিলাম। আমার ফেসবুক ওয়ালে এখনো সেই ভিডিও আছে। তবে ছাত্রটা যেভাবে করেছে সেভাবে কিছুই করতে পারিনি। এজন্য কষ্ট আছে।’
তবে তাসরিফ খানের পোস্ট দেয়া ঘটনার সেই সিনিয়র ইনফ্লুয়েন্সার তিনি কিনা জানতে চাইলে সোলায়মান সুখন বলেন, ‘আমি কেন একজনকে হুমকি ধামকি দিতে যাবো। আমার এই বয়সে কি এটা যায়। আমি একটা চাকরি করি। অনেক চাপ আছে। বাচ্চারা অনেক কিছু লিখছে। লিখুক। আমার আসলে আর কিছু বলার নাই।’
তবে আত্নপক্ষ সমর্থন করে সিনিয়র এই ইনফ্লুয়েন্সার বলেন, ‘গত ১১ বছর কিন্তু আমি অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলেই গেছি। আজকে রাস্তা এমন কেন, ময়লা কেন, নদীতে দূষন কেন এসব কিন্তু বলেছি। হয়তো স্থান কাল পাত্র ভেদে যে পরিমান বলিষ্ঠতা থাকা দরকার সেভাবে ছিল না। সেই অপারগতা আমাদের বড়ে বেড়াতে হবে।’
বিজনেস আওয়ার/ ১৭ আগস্ট / রানা