ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এমপক্স রুখতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ চীনের

  • পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪
  • 65

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: এমপক্স ভাইরাসের প্রবেশ ও সংক্রমণ ঠেকাতে ছয় মাসের জন্য সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে চীন। শনিবার (১৭ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিজিটিএন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চীনের শুল্ক প্রশাসন জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস এক ঘোষণায় বলেছে, এমপক্স ছড়িয়ে পড়া অঞ্চল থেকে আসা মানুষ ও পণ্যসামগ্রীর প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর নজর রাখতে হবে। জ্বর, মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা বা ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ থাকা পর্যটক বা যাত্রীদের চীনে ঢোকার সময় নিজেদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এই কড়াকড়ি আগামী ছয় মাসের জন্য বহাল থাকবে।

বিশ্বে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের কঙ্গোতে এমপক্স নামের সংক্রামক রোগটি শনাক্ত হয়। এরপর ইউরোপ ও এশিয়াতেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কঙ্গো ছাড়াও এখন পর্যন্ত বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া ও পাকিস্তানে এমপক্স রোগীর সন্ধান মিলেছে।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এমপক্স ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সারাবিশ্বে জরুরি অবস্থা জারি করেছে । এর আগে ২০২২ সালে ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। সেসময়েও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছিল সংস্থাটি।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৭টি দেশে এমপক্স ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৭ হাজার মানুষের শরীরে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি। আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগই শিশু।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সুইডেনে প্রথম এমপক্স শনাক্ত হয়। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, এমপক্স শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তি আফ্রিকার একটি দেশে থাকার সময় এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে এটিই প্রথম দেশ যেখানে এমপক্স শনাক্ত হয়।

আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির একাধিক জেলায় অন্তত ৬১ জনের এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এমপক্সে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি।

আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় ৪ জনের এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। দেশটিতে এ রোগে কেউ মারা যাননি। আফ্রিকার আরেক দেশ উগান্ডায় দুজনের শরীরে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। দুজনই উগান্ডার বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে প্রথম এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর জানায়। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আরও দুই ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনজনই মধ্যপ্রাচ্য থেকে সম্প্রতি পাকিস্তানে ফিরেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আফ্রিকায় সংক্রমিত এলাকাগুলোতে এমপক্স প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি)। তবে ইসিডিসি বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এমপক্স পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

এমপক্স রুখতে সীমান্তে কড়াকড়ি আরোপ চীনের

পোস্ট হয়েছে : ০৯:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৭ অগাস্ট ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: এমপক্স ভাইরাসের প্রবেশ ও সংক্রমণ ঠেকাতে ছয় মাসের জন্য সীমান্তে কঠোর নিয়ন্ত্রণ জারি করেছে চীন। শনিবার (১৭ আগস্ট) দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম সিজিটিএন এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

চীনের শুল্ক প্রশাসন জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অব কাস্টমস এক ঘোষণায় বলেছে, এমপক্স ছড়িয়ে পড়া অঞ্চল থেকে আসা মানুষ ও পণ্যসামগ্রীর প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর নজর রাখতে হবে। জ্বর, মাথাব্যথা, পেশীতে ব্যথা বা ফুসকুড়ির মতো উপসর্গ থাকা পর্যটক বা যাত্রীদের চীনে ঢোকার সময় নিজেদের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। এই কড়াকড়ি আগামী ছয় মাসের জন্য বহাল থাকবে।

বিশ্বে সর্বপ্রথম আফ্রিকা মহাদেশের কঙ্গোতে এমপক্স নামের সংক্রামক রোগটি শনাক্ত হয়। এরপর ইউরোপ ও এশিয়াতেও এ ভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া যাচ্ছে। কঙ্গো ছাড়াও এখন পর্যন্ত বুরুন্ডি, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, সুইডেন, কেনিয়া ও পাকিস্তানে এমপক্স রোগীর সন্ধান মিলেছে।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) এমপক্স ছড়িয়ে পড়ার পরিপ্রেক্ষিতে সারাবিশ্বে জরুরি অবস্থা জারি করেছে । এর আগে ২০২২ সালে ইউরোপ ও এশিয়ার কিছু দেশসহ প্রায় ১০০টি দেশে ছড়িয়ে পড়ে ভাইরাসটি। সেসময়েও বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছিল সংস্থাটি।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের ৭টি দেশে এমপক্স ছড়িয়ে পড়েছে বলে জানা গেছে। ২০২৩ সালের জানুয়ারির পর থেকে এখন পর্যন্ত দেশটিতে ২৭ হাজার মানুষের শরীরে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে মারা গেছেন ১ হাজার ১০০ জনেরও বেশি। আক্রান্ত ও মারা যাওয়া ব্যক্তিদের সিংহভাগই শিশু।

ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) সুইডেনে প্রথম এমপক্স শনাক্ত হয়। দেশটির জনস্বাস্থ্য বিষয়ক সংস্থা জানিয়েছে, এমপক্স শনাক্ত হওয়া ওই ব্যক্তি আফ্রিকার একটি দেশে থাকার সময় এ ভাইরাসে সংক্রমিত হয়েছেন। আফ্রিকা মহাদেশের বাইরে এটিই প্রথম দেশ যেখানে এমপক্স শনাক্ত হয়।

আফ্রিকার দেশ বুরুন্ডির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, দেশটির একাধিক জেলায় অন্তত ৬১ জনের এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, দেশটিতে এমপক্সে আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যাননি।

আফ্রিকার দেশ রুয়ান্ডায় ৪ জনের এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর জানিয়েছে ডব্লিউএইচও। দেশটিতে এ রোগে কেউ মারা যাননি। আফ্রিকার আরেক দেশ উগান্ডায় দুজনের শরীরে এমপক্স শনাক্ত হয়েছে। দুজনই উগান্ডার বাইরে থেকে আক্রান্ত হয়েছেন।

এদিকে, গত বৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) পাকিস্তানের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দেশটিতে প্রথম এমপক্স শনাক্ত হওয়ার খবর জানায়। শুক্রবার (১৬ আগস্ট) আরও দুই ব্যক্তির শরীরে এ ভাইরাস শনাক্ত হয়। তিনজনই মধ্যপ্রাচ্য থেকে সম্প্রতি পাকিস্তানে ফিরেছেন। এমন পরিস্থিতিতে সতর্কতা জারি করেছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।

আফ্রিকায় সংক্রমিত এলাকাগুলোতে এমপক্স প্রতিরোধে টিকা নেওয়ার সুপারিশ করেছে ইউরোপিয়ান সেন্টার ফর ডিজিজ প্রিভেনশন অ্যান্ড কন্ট্রোল (ইসিডিসি)। তবে ইসিডিসি বলেছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা সম্প্রতি এমপক্স পরিস্থিতি নিয়ে বৈশ্বিক জরুরি অবস্থা ঘোষণা করলেও এটি বিশ্বের সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে কম।

বিজনেস আওয়ার/ ১৭ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: