ঢাকা , মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ২ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ত্রিপুরায় বন্যায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু, জলাবদ্ধ ১৭ লাখ মানুষ

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪
  • 137

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: গত কয়েক দিন ধরে রেকর্ড ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে চলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায়। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী-শিশুও রয়েছে। তাছাড়া, রাজ্যটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৭ লাখ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত চার দিন ধরে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতি বৃহস্পতিবারও (২২ আগস্ট) ভয়াবহ ছিল। এদিন দক্ষিণ ত্রিপুরায় কাদার স্রোতে চাপা পড়ে নারী, শিশুসহ সাতজনের মৃত্যু হয়।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ত্রিপুরার আটটি জেলার সবকটিতেই ‘রেড অ্যালার্ট’ বজায় রেখেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সাহায্য ও সহায়তা আরও বাড়াতে কাজ করছে দেশটির বিমানবাহিনী। এছাড়া ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) বহু সদস্য সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি সি-১৩০ এবং একটি এএন-৩২ প্লেন ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার কাজ করেছে। এছাড়া হেলিকপ্টারগুলোও দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে ও আরও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে কাজ করে যাচ্ছে।

জানা গেছে, রাজ্যটিতে সবমিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য গত ১৯ আগস্ট থেকে জেলা প্রশাসন ৪৫০টি ত্রাণ শিবির খুলেছে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, বন্যার কারণে ত্রিপুরায় ২ হাজার ৩২টি স্থানে ভূমিধস হয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯টি পরিষ্কার করা হয়েছে। পুরোদমে চলছে সংস্কারকাজ। ১ হাজার ৯৫২টি জায়গার রাস্তায় ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৫৭৯টি স্থানে এখন পর্যন্ত ভাঙন মেরামত করে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া আগরতলা থেকে সব রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং অন্যান্য বন্যাদুর্গত এলাকায় টেলিযোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর রাজ্যের অনেক জায়গায় আজ ও আগামীকাল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। শুক্র ও শনিবারের জন্য চারটি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

ত্রিপুরার নদীগুলোর পানির স্তর এখনো উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি রয়ে গেছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনাকোটি ও পশ্চিম ত্রিপুরার মতো জেলাগুলো বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা ও উনাকোটি- এই ছয়টি জেলায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

বিজনেস আওয়ার/ ২৩ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

ত্রিপুরায় বন্যায় অন্তত ২০ জনের মৃত্যু, জলাবদ্ধ ১৭ লাখ মানুষ

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ অগাস্ট ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: গত কয়েক দিন ধরে রেকর্ড ভারী বৃষ্টিপাত হয়ে চলেছে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য ত্রিপুরায়। ব্যাপক বৃষ্টিপাতের কারণে সৃষ্ট বন্যায় রাজ্যটিতে এখন পর্যন্ত ১৯ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী-শিশুও রয়েছে। তাছাড়া, রাজ্যটিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত লোকের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১৭ লাখ। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে ফসলের।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, গত চার দিন ধরে ভারী বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত ত্রিপুরার বন্যা পরিস্থিতি বৃহস্পতিবারও (২২ আগস্ট) ভয়াবহ ছিল। এদিন দক্ষিণ ত্রিপুরায় কাদার স্রোতে চাপা পড়ে নারী, শিশুসহ সাতজনের মৃত্যু হয়।

ভারতীয় আবহাওয়া বিভাগ ত্রিপুরার আটটি জেলার সবকটিতেই ‘রেড অ্যালার্ট’ বজায় রেখেছে। বন্যাকবলিত এলাকায় সাহায্য ও সহায়তা আরও বাড়াতে কাজ করছে দেশটির বিমানবাহিনী। এছাড়া ন্যাশনাল ডিজাস্টার রেসপন্স ফোর্সের (এনডিআরএফ) বহু সদস্য সেখানে উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন।

ভারতীয় বিমানবাহিনীর দুটি সি-১৩০ এবং একটি এএন-৩২ প্লেন ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার কাজ করেছে। এছাড়া হেলিকপ্টারগুলোও দুর্গত এলাকায় পৌঁছাতে ও আরও ত্রাণ তৎপরতা চালাতে কাজ করে যাচ্ছে।

জানা গেছে, রাজ্যটিতে সবমিলিয়ে ৬৫ হাজার ৪০০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য গত ১৯ আগস্ট থেকে জেলা প্রশাসন ৪৫০টি ত্রাণ শিবির খুলেছে। তবে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সংখ্যা ১৭ লাখ ছাড়িয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, বন্যার কারণে ত্রিপুরায় ২ হাজার ৩২টি স্থানে ভূমিধস হয়েছে, যার মধ্যে ১ হাজার ৭৮৯টি পরিষ্কার করা হয়েছে। পুরোদমে চলছে সংস্কারকাজ। ১ হাজার ৯৫২টি জায়গার রাস্তায় ভাঙনের ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে ৫৭৯টি স্থানে এখন পর্যন্ত ভাঙন মেরামত করে যোগাযোগ পুনরুদ্ধার করা হয়েছে।

এছাড়া আগরতলা থেকে সব রেল পরিষেবা স্থগিত করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং অন্যান্য বন্যাদুর্গত এলাকায় টেলিযোগাযোগ মারাত্মকভাবে বিঘ্নিত হয়েছে।

আবহাওয়া দপ্তর রাজ্যের অনেক জায়গায় আজ ও আগামীকাল ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে। শুক্র ও শনিবারের জন্য চারটি জেলায় রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে।

ত্রিপুরার নদীগুলোর পানির স্তর এখনো উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি রয়ে গেছে। গোমতী, দক্ষিণ ত্রিপুরা, উনাকোটি ও পশ্চিম ত্রিপুরার মতো জেলাগুলো বন্যায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্যদিকে ধলাই, খোয়াই, দক্ষিণ ত্রিপুরা, পশ্চিম ত্রিপুরা, উত্তর ত্রিপুরা ও উনাকোটি- এই ছয়টি জেলায় নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

সূত্র: এনডিটিভি

বিজনেস আওয়ার/ ২৩ আগস্ট / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: