বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: আফগানিস্তানে নারীদের জন্য মুখ ঢাকা ও পুরুষদের জন্য দাড়ি রাখা বাধ্যতামূলক করেছে তালেবান সরকার। গত সপ্তাহে নীতিনৈতিকতা-বিষয়ক একগুচ্ছ নিয়মকানুনকে আইন হিসেবে কার্যকর করা শুরু করেছেন তারা। আর চলতি সপ্তাহে আফগানিস্তানে ৩৫টি নৈতিকতার আইন আনুষ্ঠানিকভাবে কার্যকরের ঘোষণা দেয় তালেবান সরকার।
আফগানিস্তানের বিচার বিভাগ জানিয়েছে, আইনগুলো ইসলামিক শরিয়া আইন অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। নতুন আইন অনুযায়ী, নারীদের এমন পোশাক পরতে হবে যা তাদের শরীর ও মুখ সম্পূর্ণভাবে ঢেকে রাখে। নিষিদ্ধ করা হয়েছে পুরুষদের দাড়ি কাটা। বাদ দেওয়া যাবে না নামাজ আদায় ও রোজা পালন।
এছাড়া গাড়ি চালানোর সময় গান বাজানোও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আইন লঙ্ঘনের শাস্তির মধ্যে রয়েছে উপদেশ, পরকালীন শাস্তির সতর্কতা, মৌখিক হুমকি, সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত, এক ঘণ্টা থেকে তিন দিন পর্যন্ত প্রকাশ্য জেলে আটক অথবা প্রয়োজন অনুযায়ী অন্য যে কোনো শাস্তি।
আফগান বিচার মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র জানান, তালেবানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা ২০২২ সালে এই বিধিগুলো ঘোষণা করেন ও বর্তমানে এগুলোকে আনুষ্ঠানিকভাবে আইনে পরিণত করা হয়েছে।
নৈতিকতা মন্ত্রণালয় এরই মধ্যে এসব নিয়মাবলী প্রয়োগ করছে ও বহু মানুষকে আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে আটক করেছে। তবে নতুন আইনগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশিত হওয়ার পর প্রয়োগের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে কি না তা এখনো স্পষ্ট নয়।
২০২১ সালে তালেবান পুনরায় ক্ষমতা নেওয়ার পর থেকে নারীদের ওপর কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে। হ্রাস পেয়েছে নারীদের মতপ্রকাশের স্বাধীনতাও। এ কারণে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলো ও অনেক বিদেশি সরকার তালেবানের সমালোচনা করে আসছে।
পশ্চিমা দেশগুলো তালেবানকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার ক্ষেত্রে নারীদের অধিকার পুনরুদ্ধার ও মেয়েদেরকে উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়ালেখা করতে দেওয়ার শর্ত রেখেছে। তবে তালেবান কর্তৃপক্ষ দাবি করে আসছে, তারা ইসলামিক আইন ও স্থানীয় প্রথা অনুযায়ী নারীদের অধিকার আদায় করছে ও তা বহাল রাখবে।
সূত্র: ডন
বিজনেস আওয়ার/ ২৫ আগস্ট / হাসান