বিজনেস আওয়ার ডেস্ক: কলকাতার আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদে উত্তাল গোটা ভারত। দোষীদের কড়া শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। এ ধরনের বর্বরোচিত অপরাধ রুখতে ধর্ষণের একমাত্র শাস্তি ফাঁসি চেয়ে নতুন আইনের দাবি জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জী।
এ অবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, ভারতের ন্যায় সংহিতায় ধর্ষণের অপরাধে কী কী সাজার বিধান রয়েছে? সেগুলো কতটা কঠোর?
গত ১ জুলাই ভারতে কার্যকর হয় নতুন তিনটি অপরাধমূলক আইন। এর একটি হলো ভারতীয় ন্যায় সংহিতা। ব্রিটিশ আমলের ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) বাতিল করে বিভিন্ন অপরাধের জন্য আরও কঠোর শাস্তির বিধান রেখে তৈরি হয়েছে ন্যায় সংহিতা আইন।
বিলুপ্ত হওয়া আইপিসি’র ৩৭৬ ধারা অনুযায়ী, ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতো অপরাধীর। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ নম্বর ধারায়ও একই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। তবে শিশুকে (ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় যৌন অপরাধ লিঙ্গ নিরপেক্ষ। ফলে ‘নাবালিকা’র বদলে ‘শিশু’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে) ধর্ষণ বা দলবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় কড়া হয়েছে আইন।
১৬ বছরের কম বয়সী কাউকে ধর্ষণের অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বনিম্ন ২০ বছরের শাস্তির বিধান রয়েছে ভারতে। অপরাধ বিবেচনায় এই সাজা ‘যাবজ্জীবন’ কারাদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল নয়, বরং আজীবন কারাবন্দি থাকতে হবে অপরাধীকে।
ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৫ নম্বর ধারায় আরও কড়া শাস্তির বিধান রয়েছে। এখানে বলা হয়েছে, ১২ বছরের কম বয়সী শিশুকে ধর্ষণে দোষী সাব্যস্ত হলে ২০ বছরের কারাদণ্ড হবে। তবে অপরাধ বিবেচনায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, এমনকি মৃত্যুদণ্ডও হতে পারে।
বিলুপ্ত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৬ (ডি) ধারায় দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দোষী প্রমাণিত হলে ২০ বছর পর্যন্ত জেল এবং জরিমানার বিধান ছিল। ভারতীয় ন্যায় সংহিতায়ও একই বিধান রাখা হয়েছে। তবে নতুন আইনের ধারা ৭০(২)-এর অধীনে শিশুকে দলবদ্ধ ধর্ষণের মামলায় দোষীর কমপক্ষে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হবে। অপরাধ বিবেচনা করে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। জরিমানার বিধানও রয়েছে। শিশুর বয়স ১২ বছরের কম হলে সরাসরি মৃত্যুদণ্ডের বিধান দেওয়া হয়েছে।
বিয়ে বা অন্য প্রতিশ্রুতি দিয়ে নারীদের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে ১০ বছরের সাজার বিধান রয়েছে ভারতীয় ন্যায় সহিংতায়।
এতে বলা হয়েছে, যৌন সহিংসতার অভিযোগের ক্ষেত্রে ভুক্তভোগী নারীর বয়ান তারই বাড়িতে নথিভুক্ত করতে হবে। নারী ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে সেই বয়ান দিতে পারবেন ভুক্তভোগী।
বাধ্যতামূলক সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে তদন্ত এবং শুনানির জন্য। এখন শুনানির ৪৫ দিনের মধ্যে সিদ্ধান্ত জানাতে হবে, অভিযোগের তিন দিনের মধ্যে এফআইআর দায়ের করতে হবে।
সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন, বিবিসি বাংলা
বিজনেস আওয়ার/ ২৯ আগস্ট / হাসান