ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন সুয়ারেজ

  • পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 66

স্পোর্টস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জীবনের সবচেয়ে আবেগময় সিদ্ধান্তের কথা জানান ৩৭ বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

আগামী শুক্রবার উরুগুয়ের জার্সিতে শেষবার দেখা যাবে সুয়ারেজকে। এদিন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলবে উরুগুয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে আবেগজড়িত কণ্ঠে সুয়ারেজ বলেন, ‘কখন অবসর নেওয়ার সঠিক মুহূর্ত, তা জানার চেয়ে গর্ব করার মতো ভালো আর কিছু নেই। সৌভাগ্যবশত আমি আত্মবিশ্বাসী যে, জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছি। কারণ, আমি একটি নতুন কোনো জায়গায় যেতে চাই। আমার বয়স ৩৭ বছর। আমি জানি যে পরের বিশ্বকাপে যাওয়া খুব কঠিন। এটা আমাকে অনেক সান্ত্বনা দেয় যে, আমি নিজে অবসর নিতে পারছি। ইনজুরির কারণে আমাকে অবসর নিতে হচ্ছে না। অথবা দল থেকে বাদ পড়ার কারণেও অবসর নিচ্ছি না।’

সুয়ারেজ আরও বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না। তবে আমি মনে শান্তি নিয়ে যাচ্ছি যে, শেষ খেলা পর্যন্ত আমি আমার সমস্ত কিছু দিয়েছি। তবে শিখা ধীরে ধীরে জ্বলে না। সে কারণেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এটি (অবসর) এখন হওয়া উচিত।’

উরুগুয়ের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন সুয়ারেজ। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৪২ ম্যাচে ৬৯ গোল করেছেন এই তারকা। ক্লাব ফুটবলেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব বার্সেলোনাতে লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের সঙ্গে জুটি করে খেলেছেন বহুদিন। তার আগে খেলেছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিভারপুলে।

সর্বশেষ সুয়ারেজ খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগে ইন্টার মিয়ামির হয়ে। বন্ধু মেসির সঙ্গে খেলার জন্যই চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি।

২০০৬ সালে উরুগুয়ে অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচারণা শুরু হয় সুয়ারেজের। পরের বছর সিনিয়র দলেও অভিষেক হয়ে যায় ‘নাম্বার নাইনের’।

২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২০ বছর বয়সে উরুগুয়ে জাতীয় দলে হয়ে খেলা শুরু করেন সুয়ারেজ। প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন কলম্বিয়ার বিপক্ষে। এরপর থেকে উরুগুয়ের স্কোয়াডে নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন তিনি।

উরুগুয়ের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন সুয়ারেজ। ২০১০ সালের আসর থেকে শুরু করে ২০২২ সালের আসর পর্যন্ত টানা চার বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে খেলেন তিনি। এছাড়া ২০১১, ২০১৬, ২০১৯, ২০২১ ও ২০২৪ সালের উরুগুয়ের কোপা আমেরিকার দলে ছিলেন সুয়ারেজ।

২০১০ সালের বিশ্বকাপে সুয়ারেজের সেই হ্যান্ডবলের দৃশ্য তো এখনো ভাসে ফুটপ্রেমীদের চোখের সামনে। সেইদিন কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল বাঁচাতে ইচ্ছে করে হ্যান্ডবল করে উরুগুয়ের জাল অক্ষত রাখেন তিনি। ইচ্ছে করে হাতে বল লাগানোর অপরাধে সুয়ারেজকে লালকার্ড দেখান রেফারি এবং ঘানার পক্ষে পেনাল্টি দেন।

সেই পেনাল্টি মিস করেন ঘাানার আসামোয়া গিয়ান। সেই সেভকে পরবর্তীতে টুর্নামেন্টের সেরা সেভ বলে অভিহিত করেন সুয়ারেজ। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচ টাইব্রেকারে জেতে উরুগুয়ে।

বিজনেস আওয়ার/ সেপ্টেম্বর ০৩ / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন সুয়ারেজ

পোস্ট হয়েছে : ১০:৪৮ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০২৪

স্পোর্টস ডেস্ক: আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিয়েছেন উরুগুয়ের তারকা লুইস সুয়ারেজ। গতকাল সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে জীবনের সবচেয়ে আবেগময় সিদ্ধান্তের কথা জানান ৩৭ বয়সী এই ফরোয়ার্ড।

আগামী শুক্রবার উরুগুয়ের জার্সিতে শেষবার দেখা যাবে সুয়ারেজকে। এদিন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলবে উরুগুয়ে।

সংবাদ সম্মেলনে আবেগজড়িত কণ্ঠে সুয়ারেজ বলেন, ‘কখন অবসর নেওয়ার সঠিক মুহূর্ত, তা জানার চেয়ে গর্ব করার মতো ভালো আর কিছু নেই। সৌভাগ্যবশত আমি আত্মবিশ্বাসী যে, জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছি। কারণ, আমি একটি নতুন কোনো জায়গায় যেতে চাই। আমার বয়স ৩৭ বছর। আমি জানি যে পরের বিশ্বকাপে যাওয়া খুব কঠিন। এটা আমাকে অনেক সান্ত্বনা দেয় যে, আমি নিজে অবসর নিতে পারছি। ইনজুরির কারণে আমাকে অবসর নিতে হচ্ছে না। অথবা দল থেকে বাদ পড়ার কারণেও অবসর নিচ্ছি না।’

সুয়ারেজ আরও বলেন, ‘সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না। তবে আমি মনে শান্তি নিয়ে যাচ্ছি যে, শেষ খেলা পর্যন্ত আমি আমার সমস্ত কিছু দিয়েছি। তবে শিখা ধীরে ধীরে জ্বলে না। সে কারণেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, এটি (অবসর) এখন হওয়া উচিত।’

উরুগুয়ের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা হলেন সুয়ারেজ। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৪২ ম্যাচে ৬৯ গোল করেছেন এই তারকা। ক্লাব ফুটবলেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। স্প্যানিশ লা লিগার ক্লাব বার্সেলোনাতে লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের সঙ্গে জুটি করে খেলেছেন বহুদিন। তার আগে খেলেছিলেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের ক্লাব লিভারপুলে।

সর্বশেষ সুয়ারেজ খেলছেন যুক্তরাষ্ট্রের মেজর সকার লিগে ইন্টার মিয়ামির হয়ে। বন্ধু মেসির সঙ্গে খেলার জন্যই চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান তিনি।

২০০৬ সালে উরুগুয়ে অনূর্ধ্ব-২০ দলের হয়ে খেলার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পদচারণা শুরু হয় সুয়ারেজের। পরের বছর সিনিয়র দলেও অভিষেক হয়ে যায় ‘নাম্বার নাইনের’।

২০০৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি মাত্র ২০ বছর বয়সে উরুগুয়ে জাতীয় দলে হয়ে খেলা শুরু করেন সুয়ারেজ। প্রথম ম্যাচ খেলেছিলেন কলম্বিয়ার বিপক্ষে। এরপর থেকে উরুগুয়ের স্কোয়াডে নিয়মিত সদস্য হয়ে ওঠেন তিনি।

উরুগুয়ের হয়ে চারটি বিশ্বকাপ খেলেছেন সুয়ারেজ। ২০১০ সালের আসর থেকে শুরু করে ২০২২ সালের আসর পর্যন্ত টানা চার বিশ্বকাপ টুর্নামেন্টে খেলেন তিনি। এছাড়া ২০১১, ২০১৬, ২০১৯, ২০২১ ও ২০২৪ সালের উরুগুয়ের কোপা আমেরিকার দলে ছিলেন সুয়ারেজ।

২০১০ সালের বিশ্বকাপে সুয়ারেজের সেই হ্যান্ডবলের দৃশ্য তো এখনো ভাসে ফুটপ্রেমীদের চোখের সামনে। সেইদিন কোয়ার্টার ফাইনালে ঘানার বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে গোল বাঁচাতে ইচ্ছে করে হ্যান্ডবল করে উরুগুয়ের জাল অক্ষত রাখেন তিনি। ইচ্ছে করে হাতে বল লাগানোর অপরাধে সুয়ারেজকে লালকার্ড দেখান রেফারি এবং ঘানার পক্ষে পেনাল্টি দেন।

সেই পেনাল্টি মিস করেন ঘাানার আসামোয়া গিয়ান। সেই সেভকে পরবর্তীতে টুর্নামেন্টের সেরা সেভ বলে অভিহিত করেন সুয়ারেজ। শেষ পর্যন্ত ওই ম্যাচ টাইব্রেকারে জেতে উরুগুয়ে।

বিজনেস আওয়ার/ সেপ্টেম্বর ০৩ / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: