স্পোর্টস ডেস্ক: পাকিস্তানের মাটিতে পা ফেলার আগে পরিসংখ্যান কথা বলেছিল পুরোপুরি বাংলাদেশের বিপক্ষে। রূপকথার গল্পের মতো সেই পরিসংখ্যান ১৮০ ডিগ্রিতে ঘুরে বাংলাদেশের পক্ষে চলে এসেছে, এখনো যেন বিশ্বাসই হচ্ছে না। বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ নিজেও বিশ্বাস করতে পারছেন না ক্রিকেটারদের এমন পারফর্মম্যান্স।
না, ব্যাপারটা এমন নয়। পরিসংখ্যান বাংলাদেশের পক্ষে আসেনি। বরং অসাধারণ পারফর্ম করে টেস্ট ক্রিকেটের মন জয় করেছে বাংলাদেশ। যে কারণেই পরিসংখ্যান এখন বাংলাদেশের পক্ষে। বদলে যাওয়া বাংলাদেশের সঙ্গে সেটি সুর মিলিয়েছে কেবল।
পাকিস্তানের বিপক্ষে এর আগে ১৩ ম্যাচ খেলেও জয়ের দেখা পায়নি বাংলাদেশ। এই সফরে গিয়ে প্রথমে ২৩ বছরের জিগীষা পূরণ করে টাইগারবাহিনী। পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথমবারের মতো টেস্ট জয় করে বাংলাদেশ। এরপর পুরোনো ইতিহাস বদলে দিয়ে সিরিজও জয় করে নেয় নাজমুল হোসেন শান্তর দল। পাকিস্তানের বিপক্ষে এটিই প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়।
এ নিয়ে পঞ্চমবার সিরিজ জয় করলো টাইগাররা। দেখা যাক- বাংলাদেশ কখন, কোথায়, কাদের বিপক্ষে সিরিজগুলো জয় করেছে__
প্রথম
বাংলাদেশ প্রথম টেস্ট সিরিজ জয় করে ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। দুই ম্যাচের ওই সিরিজের প্রথম টেস্টে চট্টগ্রামের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামে ২২৬ রানে জেতে বাংলাদেশ। শেরে বাংলায় দ্বিতীয় ম্যাচটি ড্র করে হাবিবুল বাশারের দল। এতে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে বাংলাদেশ। ১৮ উইকেট নিয়ে সিরিজসেরা হন এনামুল হক জুনিয়র।
দ্বিতীয়
চার বছর অপেক্ষার আবারও টেস্ট সিরিজ জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। ২০০৯ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ধবলধোলাই করে টাইগাররা। বিদেশের মাটিতে এটি বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট জয়। কিংসটাউনে প্রথম টেস্টে ৯৫ রানে জেতে বাংলাদেশ। ১২৮ রানের ইনিংস খেলে ম্যাচসেরা নির্বাচিত হন তামিম ইকবাল। সেইন্ট জর্জে পরের ম্যাচে ৪ উইকেটের জয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে সাকিব আল হাসানের দল। প্রথম টেস্টে মাশরাফি বিন মর্তুজা ইনজুরিতে পড়ায় এই ম্যাচে দলের দায়িত্ব নিজের কাঁধে নিয়েছিলেন সাকিব। এরপর ৯৬ রানের হার না মানা ইনিংস খেলে বাংলাদেশকে জয় এনে দেন এই অলরাউন্ডার।
তৃতীয়
২০১৪ সালে জিম্বাবুয়েকে ঘরের মাঠে ডেকে এনে ধবলধোলই করে বাংলাদেশ। তিন ম্যাচের সিরিজ ৩-০ ব্যবধানে জেতে সে সময়ের মুশফিকুর রহিমের দল। শেরে বাংলায় প্রথম টেস্টে ১০১ রানের লক্ষ্য তাড়ায় রানের খাতা খোলার আগেই ৩ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। শেষমেশ ৩ উইকেট হাতে রেখেই জয় পেয়েছিল স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয় টেস্টে ইতিহাস গড়েন সাকিব। এক সেঞ্চুরির সঙ্গে ১০ উইকেট শিকার করে ইয়ান বোথাম ও ইমরানের খানের মতো কিংবদন্তির পাশে নাম লেখান সাকিব। খুলনায় এই ম্যাচে ১৬২ রানে জেতে বাংলাদেশ। চট্টগ্রামে শেষ টেস্টে ১৮৬ রানে জিম্বাবুয়েকে হারায় স্বাগতিকরা।
চতুর্থ
২০১৮ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে দ্বিতীয়বারের মতো ধবলধোলাই করে বাংলাদেশ। এবার ঘরের মাঠে দুই ম্যাচের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয় পায় টাইগাররা। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে ৫ উইকেট শিকার করেন অভিষেক হওয়া অফস্পিনার নাঈম হাসান। ৬৪ রানে জেতা ম্যাচে ১২০ রান করে ম্যাচসেরা হন মুমিনুল হক। দ্বিতীয় টেস্টে দুই ইনিংস মিলিয়ে মেহেদী হাসানের ১২ উইকেটের সুবাদে ক্যারিবিয়ানদের ইনিংস ব্যবধানে হারায় বাংলাদেশ।
পঞ্চম
দুই ম্যাচের সিরিজের প্রথম টেস্টে রাওয়াপিন্ডিতে পাকিস্তানকে ১০ উইকেটে হারায় বাংলাদেশ। একই ভেন্যুতে দ্বিতীয় টেস্টে স্বাগতিকদের ৬ উইকেটে হারিয়ে ২-০ ব্যবধানে সিরিজ নিশ্চিত করে নাজমুল হোসেন শান্তর দল।
বিজনেস আওয়ার/ ০৪ সেপ্টেম্বর / রানা