ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

উত্তপ্ত মণিপুরে এবার রকেট হামলার পর সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা

  • পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 68

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক:ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর যেন শান্তই হচ্ছে না। এবার সেখানে বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় এক বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। ওই হামলার পর শনিবার থেকে রাজ্যের স্কুলগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি কখনোই। ইম্ফাল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল, তাদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু এই দাবির বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

তফশিলি উপজাতি ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং জরিপ নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছিল মণিপুরে। এ সহিংসতায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ মানুষ।

স্থানীয় সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, শনিবার রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ থাকবে। একদিন আগে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাজ্যের বিষ্ণুপুর জেলায় রকেট ছুড়েছে। স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনায় কুকি সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে।

পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত মাইরেম্বাম কোইরেং সিংয়ের বাসভবনে রকেট আঘাত হানলে এক বয়স্ক ব্যক্তি নিহত হন।

এর আগে গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) গুলি ও বোমার আঘাতে সেখানে দুজন নিহত হন। আহত হয়েছেন পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন। সে সময় অভিযোগ উঠেছে, কুকি সন্ত্রাসীরা একটি মেইতেই গ্রামে হামলা চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

দ্য ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস জানিয়েছে, রোববার মণিপুরের কৌত্রুক এলাকায় ওই হামলা চালানো হয়। পুলিশ বলেছে, পাহাড়ের ওপর থেকে নিচের উপত্যকা লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এসময় উচ্চপ্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করে আরপিজি (রকেট প্রোপেলড গ্রেনেড) নিক্ষেপ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রামটিকে লক্ষ্য করে এ ধরনের অন্তত সাতটি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে।

জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে একজনের নাম নাংবাম সুরবালা। ৩১ বছর বয়সী ওই নারীর মাথায় গুলি লাগে। হামলায় তার ১১ বছরের মেয়েও গুলিবিদ্ধ হয়। তবে সে বেঁচে রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। এরপরও রাতভর উত্তেজনা ছিল এলাকায়।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

উত্তপ্ত মণিপুরে এবার রকেট হামলার পর সব স্কুল বন্ধ ঘোষণা

পোস্ট হয়েছে : ০১:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার ডেস্ক:ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য মণিপুর যেন শান্তই হচ্ছে না। এবার সেখানে বিদ্রোহীদের রকেট হামলায় এক বেসামরিক নাগরিক নিহত ও ছয়জন আহত হয়েছে। ওই হামলার পর শনিবার থেকে রাজ্যের স্কুলগুলো বন্ধের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। খবর এএফপির।

২০২৩ সালের মে মাস থেকে জাতিগত সহিংসতার সাক্ষী মণিপুর। মাঝে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত ছিল। তবে পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়নি কখনোই। ইম্ফাল উপত্যকায় সংখ্যাগরিষ্ঠ হলো মেইতেই জনজাতি। তারা সম্প্রতি দাবি তুলেছিল, তাদের তফসিলি উপজাতির স্বীকৃতি দিতে হবে। কিন্তু এই দাবির বিরোধিতা করে স্থানীয় কুকি-জো আদিবাসীরা। এ নিয়ে দু’পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে।

তফশিলি উপজাতি ইস্যুর পাশাপাশি সংরক্ষিত জমি এবং জরিপ নিয়েও উত্তাপ ছড়িয়েছিল মণিপুরে। এ সহিংসতায় এ পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন কয়েকশ মানুষ।

স্থানীয় সরকারের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, শনিবার রাজ্যের সব স্কুল বন্ধ থাকবে। একদিন আগে একটি বিদ্রোহী গোষ্ঠী রাজ্যের বিষ্ণুপুর জেলায় রকেট ছুড়েছে। স্থানীয় পুলিশ এই ঘটনায় কুকি সন্ত্রাসীদের দায়ী করেছে।

পুলিশের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার ঘটনায় ৭৮ বছর বয়সী এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন এবং আরও ছয়জন আহত হয়েছে।

বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আক্রমণের সঙ্গে সঙ্গেই পাল্টা জবাব দেন পুলিশ কর্মকর্তারা। স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, মণিপুরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত মাইরেম্বাম কোইরেং সিংয়ের বাসভবনে রকেট আঘাত হানলে এক বয়স্ক ব্যক্তি নিহত হন।

এর আগে গত রোববার (১ সেপ্টেম্বর) গুলি ও বোমার আঘাতে সেখানে দুজন নিহত হন। আহত হয়েছেন পুলিশ-সাংবাদিকসহ অন্তত ১০ জন। সে সময় অভিযোগ উঠেছে, কুকি সন্ত্রাসীরা একটি মেইতেই গ্রামে হামলা চালালে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

দ্য ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস জানিয়েছে, রোববার মণিপুরের কৌত্রুক এলাকায় ওই হামলা চালানো হয়। পুলিশ বলেছে, পাহাড়ের ওপর থেকে নিচের উপত্যকা লক্ষ্য করে নির্বিচারে গুলি ছোড়ে সন্ত্রাসীরা। এসময় উচ্চপ্রযুক্তির ড্রোন ব্যবহার করে আরপিজি (রকেট প্রোপেলড গ্রেনেড) নিক্ষেপ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে। একজন জ্যেষ্ঠ পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, গ্রামটিকে লক্ষ্য করে এ ধরনের অন্তত সাতটি বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয়েছে।

জানা গেছে, নিহতদের মধ্যে একজনের নাম নাংবাম সুরবালা। ৩১ বছর বয়সী ওই নারীর মাথায় গুলি লাগে। হামলায় তার ১১ বছরের মেয়েও গুলিবিদ্ধ হয়। তবে সে বেঁচে রয়েছে।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, রোববার স্থানীয় সময় দুপুর ২টার দিকে গুলিবর্ষণ শুরু হয়। চলে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত। এরপরও রাতভর উত্তেজনা ছিল এলাকায়।

বিজনেস আওয়ার/ ০৭ সেপ্টেম্বর / হাসান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: