ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিল্পকলার মহাপরিচালক হচ্ছেন নাট্যজন সৈয়দ জামিল আহমেদ

  • পোস্ট হয়েছে : ০৬:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 83

বিনোদন ডেস্ক: দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাচ্ছেন নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। আজ (৯ সেপ্টেম্বর) সোমবার জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সৈয়দ জামিল আহমেদ ১৯৫৫ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৭১ সালে ষোলো বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। সৈয়দ জামিল আহমেদ ১৯৭৮ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার টেলিভিশন প্রডিউসারস ট্রেনিংয়েও প্রথম হন তিনি। ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক থেকে থিয়েটার আর্টস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রি।

ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে এই বিভাগেই তিনি শিক্ষকতা করছেন। ইংরেজিতে প্রকাশিত তার আলোচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ‘অচিনপাখি ইনফিনিটি; ইনডিজেনাস থিয়েটার ইন বাংলাদেশ’, ‘ইন প্রেইজ অব নিরঞ্জন; ইসলাম থিয়েটার, এন্ড বাংলাদেশ’, ‘রিডিং এগেইন্সট দ্য ওরিয়েন্টালিস্ট গ্রেইন; পারফর্মেন্স অ্যান্ড পলিটিকস এন্টুইনড উইথ আ বুদ্ধিস্ট স্ট্রেইন এবং এপ্লাইড থিয়েট্রিক্স; এসেস ইন রিফিউসাল’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ইউপিএল ও এন্ডারসেনের মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রকাশনা সংস্থা তার বই প্রকাশ করেছে। মঞ্চনাটক, প্রায়োগিক মঞ্চনির্দেশনা, লোককথা ও সংস্কৃতি অধ্যয়নের ওপর তার লেখা ষাটটিরও বেশি একাডেমিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বাংলা, ইংরেজি, ফরাসি, নরওয়েজিয়ান, রাশিয়ান, চীনা ও কোরিয়ান ভাষায়।

সৈয়দ জামিল আহমেদ নর্থ আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা করেছেন, সেমিনার ও কনফারেন্স পরিচালনা করেছেন। তার নির্দেশিত অনেকগুলো প্রযোজনা রয়েছে, যেগুলোর বিস্তৃতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও কুড়িয়েছে সুনাম। ভারত, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রে মঞ্চস্থ হয়েছে তার প্রযোজনা, হয়েছে প্রশংসিত।

নির্দেশক হিসেবে সৈয়দ জামিল আহমেদের স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করা যায় ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের ভাষা ও এই অঞ্চলের আদিবাসী চরিত্রগুলির আদান-প্রদানের মধ্যদিয়ে, দৃশ্যরূপগত বহুরৈখিক বর্ণনামূলক প্রক্রিয়ায়, উত্তর নাটকীয় কাঠামোতে। দেশ ও দেশের বাইরে করা সেলিম আল দীনের ‘চাকা’, মীর মশাররফ হোসেনের ‘বিষাদসিন্ধু’, পালাগান থেকে করা ‘কমলা রানীর সাগর দিঘী’, মনসা মঙ্গল থেকে ‘বেহুলার ভাসান’, সংযাত্রা থেকে ‘সংভংচং’, রবীঠাকুর অবলম্বনে ‘শ্যামার উড়াল’, কাশ্মিরি কবি আগা শহীদ খানের কাব্য অবলম্বনে ‘রিজওয়ান’, শহিদুল জহিরের উপন্যাস অবলম্বনে ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ এবং সবশেষ সারাহ কেইনের ‘ফোর পয়েন্ট ফোর এইট সাইকোসিস’ অবলম্বনে ‘চার দশমিক চার আট, মন্ত্রাস’।

৭০টিরও বেশি মঞ্চ প্রযোজনার আলোক নির্দেশনা ও ৮০টিরও বেশি নাটকের মঞ্চপরিকল্পনা করেছেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। দেশ ও বিদেশে বহু কর্মশালা করিয়েছেন তিনি, একাধিক গবেষণার জন্য পেয়েছেন ফেলোশিপ। নিজের বিভাগ ছাড়াও দেশের বড় বড় নাটকের দলের প্রযোজনা নির্দেশনা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অলাভজনক ও পেশাদার নাট্যদল ‘স্পর্ধা: ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটার কালেকটিভ’।

বিজনেস আওয়ার/ ০৯ সেপ্টেম্বর / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

শিল্পকলার মহাপরিচালক হচ্ছেন নাট্যজন সৈয়দ জামিল আহমেদ

পোস্ট হয়েছে : ০৬:০২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিনোদন ডেস্ক: দুই বছরের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির মহাপরিচালকের দায়িত্ব পাচ্ছেন নাট্যনির্দেশক ও শিক্ষক সৈয়দ জামিল আহমেদ। আজ (৯ সেপ্টেম্বর) সোমবার জনপ্রসাশন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।

সৈয়দ জামিল আহমেদ ১৯৫৫ সালের ৭ এপ্রিল ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেছেন। ১৯৭১ সালে ষোলো বছর বয়সে তিনি মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। সৈয়দ জামিল আহমেদ ১৯৭৮ সালে ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা থেকে প্রথম শ্রেণিতে প্রথম হয়ে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। একই বছর ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়ার টেলিভিশন প্রডিউসারস ট্রেনিংয়েও প্রথম হন তিনি। ১৯৮৯ সালে ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়ারউইক থেকে থিয়েটার আর্টস থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯৯৭ সালে অর্জন করেন পিএইচডি ডিগ্রি।

ড. সৈয়দ জামিল আহমেদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরমেন্স স্টাডিজ বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। তিরিশ বছরের বেশি সময় ধরে এই বিভাগেই তিনি শিক্ষকতা করছেন। ইংরেজিতে প্রকাশিত তার আলোচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে, ‘অচিনপাখি ইনফিনিটি; ইনডিজেনাস থিয়েটার ইন বাংলাদেশ’, ‘ইন প্রেইজ অব নিরঞ্জন; ইসলাম থিয়েটার, এন্ড বাংলাদেশ’, ‘রিডিং এগেইন্সট দ্য ওরিয়েন্টালিস্ট গ্রেইন; পারফর্মেন্স অ্যান্ড পলিটিকস এন্টুইনড উইথ আ বুদ্ধিস্ট স্ট্রেইন এবং এপ্লাইড থিয়েট্রিক্স; এসেস ইন রিফিউসাল’। বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, ইউপিএল ও এন্ডারসেনের মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রকাশনা সংস্থা তার বই প্রকাশ করেছে। মঞ্চনাটক, প্রায়োগিক মঞ্চনির্দেশনা, লোককথা ও সংস্কৃতি অধ্যয়নের ওপর তার লেখা ষাটটিরও বেশি একাডেমিক প্রবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে বাংলা, ইংরেজি, ফরাসি, নরওয়েজিয়ান, রাশিয়ান, চীনা ও কোরিয়ান ভাষায়।

সৈয়দ জামিল আহমেদ নর্থ আমেরিকা, ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার বিভিন্ন দেশে বক্তৃতা করেছেন, সেমিনার ও কনফারেন্স পরিচালনা করেছেন। তার নির্দেশিত অনেকগুলো প্রযোজনা রয়েছে, যেগুলোর বিস্তৃতি দেশ ছাড়িয়ে বিদেশেও কুড়িয়েছে সুনাম। ভারত, পাকিস্তান এবং যুক্তরাষ্ট্রে মঞ্চস্থ হয়েছে তার প্রযোজনা, হয়েছে প্রশংসিত।

নির্দেশক হিসেবে সৈয়দ জামিল আহমেদের স্বাতন্ত্র্য চিহ্নিত করা যায় ঐতিহ্যবাহী বাংলা নাট্যের ভাষা ও এই অঞ্চলের আদিবাসী চরিত্রগুলির আদান-প্রদানের মধ্যদিয়ে, দৃশ্যরূপগত বহুরৈখিক বর্ণনামূলক প্রক্রিয়ায়, উত্তর নাটকীয় কাঠামোতে। দেশ ও দেশের বাইরে করা সেলিম আল দীনের ‘চাকা’, মীর মশাররফ হোসেনের ‘বিষাদসিন্ধু’, পালাগান থেকে করা ‘কমলা রানীর সাগর দিঘী’, মনসা মঙ্গল থেকে ‘বেহুলার ভাসান’, সংযাত্রা থেকে ‘সংভংচং’, রবীঠাকুর অবলম্বনে ‘শ্যামার উড়াল’, কাশ্মিরি কবি আগা শহীদ খানের কাব্য অবলম্বনে ‘রিজওয়ান’, শহিদুল জহিরের উপন্যাস অবলম্বনে ‘জীবন ও রাজনৈতিক বাস্তবতা’ এবং সবশেষ সারাহ কেইনের ‘ফোর পয়েন্ট ফোর এইট সাইকোসিস’ অবলম্বনে ‘চার দশমিক চার আট, মন্ত্রাস’।

৭০টিরও বেশি মঞ্চ প্রযোজনার আলোক নির্দেশনা ও ৮০টিরও বেশি নাটকের মঞ্চপরিকল্পনা করেছেন সৈয়দ জামিল আহমেদ। দেশ ও বিদেশে বহু কর্মশালা করিয়েছেন তিনি, একাধিক গবেষণার জন্য পেয়েছেন ফেলোশিপ। নিজের বিভাগ ছাড়াও দেশের বড় বড় নাটকের দলের প্রযোজনা নির্দেশনা দিয়েছেন। ২০১৮ সালের ১২ সেপ্টেম্বর তার নেতৃত্বে গঠিত হয়েছে অলাভজনক ও পেশাদার নাট্যদল ‘স্পর্ধা: ইনডিপেনডেন্ট থিয়েটার কালেকটিভ’।

বিজনেস আওয়ার/ ০৯ সেপ্টেম্বর / রানা

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: