ঢাকা , সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সোনালী ব্যাংকের কাছে ১১০০ কোটি টাকা ধার চায় ইসলামী ব্যাংক

  • পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪
  • 105

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে। এমন পরিস্থিতে ব্যাংকটি রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংকের কাছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ধার চেয়েছে। ব্যাংকটি ইতোমধ্যে ধার দেয়ার জন্য সম্মতিও দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি পেলে তারল্য সুবিধা দেবে সোনালী ব্যাংক। গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গ্যারান্টি চেয়ে ইসলামী ব্যাংক চিঠিও দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এছাড়াও স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) আওতায় আরও পাঁচ হাজার কোটি টাকার তারল্য সুবিধা চেয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

এর আগে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। নামে-বেনামে টাকা বের করে নেয়ায় তীব্র তারল্য সংকটে পড়েছে ব্যাংকটি। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবেও ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

ব্যাংকটি ঋণাত্মক হলেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। টাকা ছাপিয়ে দেয়া সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তাই ব্যাংকটি এখন আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ধার চাচ্ছে ব্যাংকটি। তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা তারল্য সুবিধা চেয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ প্রথম প্রজন্মের শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সারাদেশে ব্যাংকটির বর্তমানে ৩৯৫ ব্রাঞ্চ, ২৫২ সাব-বাঞ্চ এবং ৭৮৭টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। সম্প্রতি উচ্চমূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং দেশের সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ব্যাংক খাত থেকে আমানত তোলার চাহিদা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতে ব্যাংকের ওপর তারল্য চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাই সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিন মাসের জন্য আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পেতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে সোনালী ব্যাংকের অনুকূলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার একটি ব্যাংক গ্যারান্টি ইস্যু করার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, তারল্য সুবিধার জন্য অনেক ব্যাংকই আবেদন করেছে। তবে আন্তঃব্যাংক পদ্ধতিতে গ্যারান্টি চেয়ে কেবল ইসলামী ব্যাংক চিঠি দিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ সেপ্টেম্বর / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান:
ট্যাগ :

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার মেইলে তথ্য জমা করুন

সোনালী ব্যাংকের কাছে ১১০০ কোটি টাকা ধার চায় ইসলামী ব্যাংক

পোস্ট হয়েছে : ০৪:৩৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিজনেস আওয়ার প্রতিবেদক: শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত শরিয়াভিত্তিক ইসলামী ব্যাংক তীব্র তারল্য সংকটে ভুগছে। এমন পরিস্থিতে ব্যাংকটি রাষ্ট্রায়াত্ত সোনালী ব্যাংকের কাছে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ধার চেয়েছে। ব্যাংকটি ইতোমধ্যে ধার দেয়ার জন্য সম্মতিও দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্যারান্টি পেলে তারল্য সুবিধা দেবে সোনালী ব্যাংক। গত সোমবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কাছে গ্যারান্টি চেয়ে ইসলামী ব্যাংক চিঠিও দিয়েছে। যদিও বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

ইসলামী ব্যাংক সূত্রে জানা যায়, এছাড়াও স্ট্যান্ডিং লেন্ডিং ফ্যাসিলিটি (এসএলএফ) আওতায় আরও পাঁচ হাজার কোটি টাকার তারল্য সুবিধা চেয়েও কেন্দ্রীয় ব্যাংকে চিঠি দিয়েছে ইসলামী ব্যাংক।

এর আগে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিতর্কিত ব্যবসায়ী গোষ্ঠী এস আলম গ্রুপ। ব্যাংকটির মালিকানা নেয়ার পর থেকে নামে-বেনামে অন্তত ৫০ হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়েছে এই ব্যবসায়ী গ্রুপ। নামে-বেনামে টাকা বের করে নেয়ায় তীব্র তারল্য সংকটে পড়েছে ব্যাংকটি। দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ব্যাংকের সিআরআর ও এসএলআর রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে। পাশাপাশি ব্যাংকটির বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে চলতি হিসাবেও ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

ব্যাংকটি ঋণাত্মক হলেও লেনদেন অব্যাহত রাখার সুযোগ দিয়েছিলেন সাবেক পলাতক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। টাকা ছাপিয়ে দেয়া সেই বিশেষ সুবিধা এখন বন্ধ করে দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তাই ব্যাংকটি এখন আমানতকারীদের অর্থ ফেরত দিতে হিমশিম খাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে ধার চাচ্ছে ব্যাংকটি। তারই ধারাবাহিকতায় ইতোমধ্যে সোনালী ব্যাংকের ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা তারল্য সুবিধা চেয়েছে।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ প্রথম প্রজন্মের শরিয়াভিত্তিক বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংক। সারাদেশে ব্যাংকটির বর্তমানে ৩৯৫ ব্রাঞ্চ, ২৫২ সাব-বাঞ্চ এবং ৭৮৭টি এজেন্ট আউটলেট রয়েছে। সম্প্রতি উচ্চমূল্যস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান জীবনযাত্রার ব্যয় এবং দেশের সামগ্রিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ব্যাংক খাত থেকে আমানত তোলার চাহিদা বেড়েছে। এমন পরিস্থিতে ব্যাংকের ওপর তারল্য চাপ সৃষ্টি হয়েছে। তাই সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে তিন মাসের জন্য আন্তঃব্যাংক থেকে তারল্য সহায়তা পেতে ব্যাংকের পক্ষ থেকে সোনালী ব্যাংকের অনুকূলে ১ হাজার ১০০ কোটি টাকার একটি ব্যাংক গ্যারান্টি ইস্যু করার অনুরোধ করছি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, শুধু ইসলামী ব্যাংক নয়, তারল্য সুবিধার জন্য অনেক ব্যাংকই আবেদন করেছে। তবে আন্তঃব্যাংক পদ্ধতিতে গ্যারান্টি চেয়ে কেবল ইসলামী ব্যাংক চিঠি দিয়েছে। যদিও এই বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বিজনেস আওয়ার/ ১২ সেপ্টেম্বর / রহমান

ফেসবুকের মাধ্যমে আপনার মতামত জানান: